ঢাকা, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

নির্বাচনের আগে আইএমএফ স্থগিত করল ৬ষ্ঠ কিস্তি

২০২৫ অক্টোবর ২২ ১৫:১৮:০৬

নির্বাচনের আগে আইএমএফ স্থগিত করল ৬ষ্ঠ কিস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক :আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশকে প্রদত্ত ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি চলতি বছরের ডিসেম্বরের শেষে বা আগামী জানুয়ারির প্রথমার্ধে ছাড় করার কথা ছিল। তবে ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যে রাজনৈতিক সরকার দায়িত্ব নেবে, তারা আইএমএফের শর্তগুলো মানবে কি না, তা নিশ্চিত না হওয়ায় সংস্থাটি এখন কিস্তি ছাড়তে রাজি নয়। ওয়াশিংটনের আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে এ তথ্য জানানো হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

আওয়ামী লীগ সরকার ডলার সংকটের সময়ে আইএমএফের কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর সংস্থার সঙ্গে আরও ৮০০ মিলিয়ন ডলারের ঋণ চুক্তি সই করে। ফলে মোট ঋণের মধ্যে ৫তম কিস্তি পর্যন্ত প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বাংলাদেশ পেয়েছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ৬ষ্ঠ কিস্তি এবং আগামী জুনে ৭ম কিস্তি পাওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিটি কিস্তি ছাড়ের আগে আইএমএফ সাধারণত নির্ধারিত শর্তাবলীর বাস্তবায়ন যাচাই করতে বাংলাদেশে দুই সপ্তাহের মিশন পাঠায়। ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের আগে ২৯ অক্টোবর বাংলাদেশে মিশন আসবে এবং তারা ওয়াশিংটনের প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেবে। এই প্রতিবেদনেই নির্ভর করবে কিস্তি ছাড়ের বিষয়টি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আইএমএফের দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু রাজস্ব আহরণের শর্তটি পূরণ করতে পারেনি। বাকি সব শর্ত পূরণ হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বলেন, “সব শর্ত পূরণ করলেও সময়মতো কিস্তির অর্থ নাও পেতে পারি। ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের পর রাজনৈতিক সরকার ঋণের শর্তগুলো মানবে কি না, তা নিশ্চিত হওয়ার পরই ৬ষ্ঠ কিস্তির অর্থ ছাড় হবে।”

অর্থ উপদেষ্টা জানিয়েছেন, ঋণের আগামী কিস্তি ডিসেম্বরের বদলে মার্চ-এপ্রিলে ছাড় হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ষষ্ঠ কিস্তি বাবদ প্রায় ৮০ কোটি ডলার পাওয়ার কথা থাকলেও তা না পেলেও দেশের বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীলতায় কোনো সমস্যা হবে না। দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ ভালো, রপ্তানি আয় সামান্য হলেও জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গড়ে ৫.৫ শতাংশ বেড়েছে। একই সময়ে রেমিট্যান্স ১৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানি ব্যয়ও নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, এবং বকেয়া ঋণ নেমে এসেছে সিঙ্গেল ডিজিটে। ফলে রিজার্ভ বাড়ছে, রোববার তা ৩,২১৪ কোটি ডলারে পৌঁছেছে।

উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মন্দার প্রভাব মোকাবিলার জন্য ২০২২ সালের শেষের দিকে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আইএমএফের কাছে ঋণ সহায়তা চায়। ২০২৩ সালের জানুয়ারির শেষে ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ অনুমোদন করে সংস্থাটি। নতুন সরকারের সময় এই ঋণ কর্মসূচি আরও ৮০ কোটি ডলার বৃদ্ধি পেয়ে ৫৫০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়। ইতোমধ্যে ঋণের পাঁচ কিস্তি বাবদ ৩৬০ কোটি ডলার ছাড় করেছে সংস্থাটি।

ডুয়া/নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত