ঢাকা, শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২

শেয়ারবাজারে হাহাকার: এক সপ্তাহে ১৮ হাজার কোটি টাকা হাওয়া!

আবু তাহের নয়ন
আবু তাহের নয়ন

সিনিয়র রিপোর্টার

২০২৫ অক্টোবর ১৮ ১৫:৩০:৩৮

শেয়ারবাজারে হাহাকার: এক সপ্তাহে ১৮ হাজার কোটি টাকা হাওয়া!

আবু তাহের নয়ন: দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত সপ্তাহে (১২-১৬ অক্টোবর) বড় ধরনের দরপতনের মুখে পড়েছে। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তিনদিনই বেশিরভাগ সিকিউরিটিজের দর কমার কারণে এক্সচেঞ্জটির সবকটি প্রধান সূচক ৩ থেকে ৪ শতাংশের বেশি কমেছে। এই পতন শুধু সূচকেই সীমাবদ্ধ থাকেনি, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র বাজার মূলধন প্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকা হ্রাস পেয়েছে এবং দৈনিক গড় লেনদেন কমেছে প্রায় ২১ শতাংশ।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি সিকিউরিটিজ লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ৫৬টির দর বেড়েছে, যেখানে বিশাল সংখ্যক ৩২৬টি সিকিউরিটিজের দর কমেছে। মাত্র ১৪টির দর অপরিবর্তিত ছিল। শেয়ার ও ইউনিটে এমন ব্যাপক দরপতনের প্রভাবে ডিএসই'র প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহের ব্যবধানে ১৬৪ পয়েন্ট বা ৩.১১ শতাংশ কমেছে। সপ্তাহ শেষে সূচকটির অবস্থান দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ১১৯ পয়েন্টে, যা এর আগের সপ্তাহে ছিল ৫ হাজার ২৮৪ পয়েন্ট।

অন্যান্য সূচকগুলোর চিত্রও ছিল একইরকম উদ্বেগজনক। ডিএসইর বাছাই করা ৩০ কোম্পানির শেয়ার নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক ৬৫ পয়েন্ট বা ৩.২০ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এছাড়া, ডিএসই শরিয়াহ সূচক ডিএসইএস সপ্তাহের ব্যবধানে ৪৮ পয়েন্ট বা ৪.২৩ শতাংশ কমে ১ হাজার ৮৬ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে, যা এই সূচকের জন্য একটি বড় ধাক্কা।

দরপতনের সঙ্গে সঙ্গেই কমেছে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ। গত সপ্তাহে ডিএসই-তে দৈনিক গড় লেনদেন হয়েছে ৫২২ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর আগের সপ্তাহে গড় লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৬৫৭ কোটি ১৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ, সপ্তাহের ব্যবধানে গড় লেনদেন ১৩৫ কোটি ৮ লাখ টাকা বা ২০.৫৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। আলোচ্য সপ্তাহে ডিএসই’র সার্বিক লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৬১১ কোটি ১২ লাখ টাকা, যা তার আগের সপ্তাহের ৩ হাজার ২৮৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকার তুলনায় যথেষ্ট কম।

মূল্যসূচকের এই নিম্নমুখী প্রবণতার সরাসরি প্রভাব পড়েছে বাজারের মোট মূলধনে। গত বৃহস্পতিবার শেষে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমে দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৯৯ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা। এর আগের সপ্তাহে মূলধনের পরিমাণ ছিল ৭ লাখ ১৭ হাজার ১২৬ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসই’র বাজার মূলধন কমেছে ১৭ হাজার ৮৪১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বা ২.৫৪ শতাংশ।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই)-ও একই ধরনের অস্থিরতা লক্ষ্য করা গেছে। সিএসই’র সবগুলো মূল্যসূচক কমে যাওয়ার পাশাপাশি লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ সিকিউরিটিজের দর কমেছে। সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৩.২০ শতাংশ কমে ১৪ হাজার ৪৬৯ পয়েন্টে এবং সিএসসিএক্স সূচক ৩.১৬ শতাংশ কমে ৮ হাজার ৮৯৮ পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে।

সিএসইতে গত সপ্তাহে ৩০৩টি সিকিউরিটিজের লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৪১টির, কমেছে ২৪৪টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৮টির দর। তবে এই দরপতনের মধ্যেও একটি ইতিবাচক দিক হলো, এক্সচেঞ্জটির লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহে সিএসই-তে পাঁচ কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে ৬৯ কোটি ৮৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট, যা আগের সপ্তাহের ৪২ কোটি টাকা লেনদেনের চেয়ে বেশি।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

ঢাকার আকাশে উড়ছে খাবার

ঢাকার আকাশে উড়ছে খাবার

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশে খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থায় নতুন প্রযুক্তির সূচনা ঘটেছে। জাপানি রেস্টুরেন্ট ইজাকায়া ঢাকায় একদিনের পরীক্ষামূলক কার্যক্রমে ড্রোন ব্যবহার... বিস্তারিত