ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২

পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে বিশ্বব্যাপী তৎপর বাংলাদেশ

২০২৫ অক্টোবর ১৭ ১৯:৩২:০২

পাচারকৃত অর্থ ফেরাতে বিশ্বব্যাপী তৎপর বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক :ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত বিশ্বব্যাংক ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বার্ষিক সভার সাইডলাইনে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নিয়ে পাচার করা অর্থ ফেরত আনা, অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রমে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু তহবিলে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ। প্রতিনিধি দল স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, দেশের স্বার্থবিরোধী কোনো শর্তে ভবিষ্যতে বৈদেশিক ঋণ গ্রহণ করা হবে না। আগের সরকারের রেখে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার সংকট সফলভাবে মোকাবিলা করে বর্তমানে রিজার্ভ স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে এবং ডলারের জোগানও বেড়েছে বলে জানানো হয়।

সোমবার শুরু হওয়া এই বৈঠক শনিবার (১৯ অক্টোবর) পর্যন্ত চলবে। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিবসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

মঙ্গলবার (মার্কিন সময়) দুপুরে আইএমএফের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান ঋণ কর্মসূচির অগ্রগতি এবং ভবিষ্যৎ সহযোগিতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রতিনিধি দল জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দের আহ্বান জানায়, পাশাপাশি শর্তগুলো শিথিল রাখার অনুরোধ করে।

বৈঠকে আইএমএফ রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি, সরকারি ঋণের সুদহার বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা এবং জ্বালানি উপকরণের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয়ের পরামর্শ দেয়। এসব বিষয়ে আলোচনা চূড়ান্ত করতে আগামী ২৯ অক্টোবর ঢাকায় আইএমএফের একটি মিশন আসবে, যারা ঋণের ষষ্ঠ কিস্তি ছাড়ের শর্ত বাস্তবায়ন পর্যালোচনা করবে।

অন্যদিকে, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে কারিগরি সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। জানানো হয়, বিশ্বব্যাংকের তত্ত্বাবধানে থাকা কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সহযোগিতায় ইতোমধ্যে পাচারকৃত অর্থের একটি অংশ শনাক্ত করা হয়েছে, যা ফেরাতে এখন অতিরিক্ত সহায়তা প্রয়োজন।

বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি সহজ শর্তে নতুন ঋণ কর্মসূচি চালু করেছে, যার সুদের হার প্রচলিত ঋণের তুলনায় কম। এই কর্মসূচির আওতায় বাংলাদেশ অতিরিক্ত ঋণ সহযোগিতা চেয়েছে।

এছাড়া ওপেক ফান্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ জ্বালানি আমদানির জন্য ক্রেডিট লাইন বাড়ানোর অনুরোধ জানায়। দেশের জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধির ফলে আমদানি ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এই খাতে ঋণ সহায়তার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়।

একইভাবে, এডিবি, এআইআইবি ও জাইকা’র প্রতিনিধিদের সঙ্গেও বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল পৃথক বৈঠক করে। এসব বৈঠকে উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা বাড়ানো, সংস্কার কর্মসূচিতে সমর্থন জোরদার এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় যৌথ উদ্যোগের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত