ঢাকা, বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩০ আশ্বিন ১৪৩২

সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উত্তপ্ত পাকিস্তান–আফগানিস্তান

২০২৫ অক্টোবর ১৫ ১৭:৫০:৪১

সীমান্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উত্তপ্ত পাকিস্তান–আফগানিস্তান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের সীমান্ত আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বুধবার ভোরের দিকেই দুই দেশের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ শুরু হয়, এতে অন্তত এক ডজন বেসামরিক নাগরিক ও সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। গত সপ্তাহে সংঘটিত প্রাণঘাতী সংঘর্ষের পর নতুন এই সহিংসতা দুই দেশের সীমান্ত অঞ্চলের নাজুক স্থিতিশীলতাকে আবারও নাড়িয়ে দিয়েছে।

২০২১ সালে তালেবান কাবুল দখলের পর থেকে সবচেয়ে বড় সীমান্ত লড়াই হয়েছিল গত সপ্তাহেই। প্রায় ২ হাজার ৬০০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিতর্কিত এই সীমান্তজুড়ে নিয়মিতই দুই দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে আসছে।

আফগান তালেবান জানিয়েছে, বুধবার ভোরে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী কান্দাহারের স্পিন বোলদাক জেলায় বিমান হামলা চালায়। এতে অন্তত ২০ তালেবান যোদ্ধা নিহত হন। একইসঙ্গে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সীমান্ত এলাকায় রাতভর সংঘর্ষে আরও ৩০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছেন।

অন্যদিকে পাকিস্তান বলেছে, সীমান্তের অপর পাশে স্পিন বোলদাকের বিপরীতে অবস্থিত চামান জেলায় তালেবান বাহিনীর হামলায় তাদের চার বেসামরিক নাগরিক আহত হয়েছেন। এছাড়া ওরাকজাই এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে পৃথক সংঘর্ষে পাকিস্তানের আধা-সামরিক বাহিনীর ছয় সদস্য নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন। ওই সংঘর্ষে ৯ জন জঙ্গিও নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তা কর্মকর্তারা।

কাবুলের দাবি, পাকিস্তানই স্পিন বোলদাকে প্রথম হামলা চালিয়েছে। তবে ইসলামাবাদ এসব অভিযোগ “অসত্য ও ভিত্তিহীন” বলে প্রত্যাখ্যান করেছে। পাকিস্তানের অভিযোগ, আফগান মাটিতে থাকা জঙ্গিরা পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে, আর তালেবান প্রশাসন তাদের আশ্রয় দিচ্ছে।

অন্যদিকে তালেবান অভিযোগ করেছে, পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনা বাড়াতে ইচ্ছাকৃতভাবে উসকানি দিচ্ছে এবং ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের ব্যবহার করে আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব দুর্বল করার চেষ্টা করছে।

সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর দুই দেশ সীমান্তের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য ক্রসিং বন্ধ করে দিয়েছে, ফলে পণ্যবাহী শতাধিক ট্রাক সীমান্তে আটকা পড়েছে। এতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য কার্যত থমকে গেছে।

এমন উত্তেজনাপূর্ণ সময়ে আফগানিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুতাক্কি পাকিস্তানের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত সফরে রয়েছেন। সফরে ভারত ও আফগানিস্তান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তারা কাবুলে পুনরায় দূতাবাস চালু করবে, আর তালেবানও ভারতে কূটনীতিক পাঠানোর পরিকল্পনা করছে।

চীন ও রাশিয়া উভয় দেশকে সংলাপের মাধ্যমে সঙ্কট নিরসনের আহ্বান জানিয়েছে। চীন বিশেষভাবে পাকিস্তানকে তাদের দেশে কর্মরত চীনা নাগরিক ও বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছে।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত