ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২

জেনে নিন টাইফয়েড টিকার কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

২০২৫ অক্টোবর ১৪ ০১:৫০:০৪

জেনে নিন টাইফয়েড টিকার কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

স্বাস্থ্য ডেস্ক: প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে ৯ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের মাঝে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এই 'টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি)' এর কার্যকারিতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে নেপালে ২০ হাজার শিশুর ওপর পরিচালিত একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা বিশ্বখ্যাত মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট গ্লোবাল হেলথে প্রকাশিত হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও নেপালের মতো টাইফয়েডপ্রবণ অঞ্চলে এই টিকা বিরল প্রজাতির টাইফয়েড প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

২০২১ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্র অনুযায়ী, টিসিভি টিকা প্রথম বছরে ৮১ শতাংশ এবং পরের বছর ৭৯ শতাংশ কার্যকরিতা দেখিয়েছে। টিকার নিরাপত্তা নিয়েও কোনো গুরুতর প্রশ্ন ওঠেনি। গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছেন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং নেপালের পাটান অ্যাকাডেমি অব হেলথ সায়েন্সেসের গবেষকরা। নেপালের ললিতপুর মেট্রোপলিটন শহরে ৯ মাস থেকে ১৬ বছর বয়সী প্রায় ২০ হাজার ১৪ জন সুস্থ শিশুকে এই গবেষণার আওতায় আনা হয়।

গবেষণায় অংশগ্রহণকারী শিশুদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। একটি দলকে ভারত বায়োটেক ইন্টারন্যাশনালের তৈরি টিসিভি টিকা এবং অন্য দলকে মেনিনজাইটিস 'এ' রোগের টিকা দেওয়া হয়। প্রায় এক বছর নিবিড় পর্যবেক্ষণের পর রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে টাইফয়েড আক্রান্তদের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, টিসিভি টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। টিসিভি গ্রহণকারী দলের মাত্র ৭ জন টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছিলেন, যেখানে মেনিনজাইটিস টিকা গ্রহণকারী দলের ৩৪ জন আক্রান্ত হন। এই ফলাফল থেকে বিজ্ঞানীরা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন যে, এই টিকার কার্যকরিতা প্রায় ৭৯ শতাংশ।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:গবেষণায় দেখা গেছে, টিসিভি টিকার কিছু হালকা ও সাময়িক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে। টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে মাত্র ৯ শতাংশ সামান্য জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। এছাড়া ইনজেকশনের স্থানে মৃদু ব্যথা, ফোলাভাব বা লালচে ভাব দেখা গেলেও, সেগুলোর জন্য কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন হয়নি এবং দিনদুয়েকের মধ্যেই আপনাআপনি সেরে গেছে। গুরুতর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা স্বাস্থ্যঝুঁকি এই টিকার ক্ষেত্রে দেখা যায়নি।

এই গবেষণার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) টাইফয়েডপ্রবণ দেশগুলোকে তাদের জাতীয় টিকাদান কর্মসূচিতে টিসিভি অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছে।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত