ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫, ২৯ আশ্বিন ১৪৩২

শিশুর উচ্চতা বাড়াতে যেসব খাবার হতে পারে জাদুর চাবিকাঠি

২০২৫ অক্টোবর ১৩ ১৪:৪৯:২৩

শিশুর উচ্চতা বাড়াতে যেসব খাবার হতে পারে জাদুর চাবিকাঠি

ডা. রাফিয়াতুর রাফা: শিশুর বয়স অনুযায়ী উচ্চতা না বাড়লে অনেক বাবা-মা দুশ্চিন্তায় পড়েন। কারও মনে হয় পুষ্টির অভাব, কেউ আবার ভাবেন জিনের প্রভাবই দায়ী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিশুর উচ্চতা নির্ভর করে মূলত জিন, ঘুম, ব্যায়াম, পরিবেশ এবং খাদ্যাভ্যাসের ওপর। তবে এর মধ্যে সঠিক পুষ্টির ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

টাইমস অব ইন্ডিয়া–এর এক প্রতিবেদনে পুষ্টিবিদরা জানিয়েছেন, কিছু নির্দিষ্ট খাবার শিশুর হাড় ও পেশি গঠনকে মজবুত করে, যা তার উচ্চতা বৃদ্ধির প্রাকৃতিক প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করে। নিচে এমন কিছু খাবারের কথা উল্লেখ করা হলো, যা নিয়মিত খাওয়ালে শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি আরও সুষম হবে।

১. ডিম ও মুরগির মাংস: প্রোটিনের চমৎকার উৎস

শিশুর দেহের বৃদ্ধি ও পেশি গঠনের জন্য প্রোটিন অপরিহার্য। ডিম ও মুরগির মাংস এই প্রোটিন সরবরাহ করে।ডিমের কুসুমে থাকা ভিটামিন বি২ (রাইবোফ্লাভিন) হাড়ের গঠন শক্তিশালী করে।

• প্রতিদিন একটি ডিম শিশুকে খাওয়ানো যেতে পারে।

• সপ্তাহে কয়েকদিন সেদ্ধ বা গ্রিল করা মুরগির মাংস দিন।

২. সবুজ শাকসবজি ও ফল: ভিটামিন ও মিনারেলে ভরপুর

শিশুরা সাধারণত সবজি খেতে চায় না। তাই স্যুপ, সালাদ বা মজার রেসিপিতে মিশিয়ে দিন।বিশেষভাবে উপকারী শাকসবজি হলো— পালংশাক, মেথি, বাঁধাকপি ও ব্রকোলি।এগুলোতে রয়েছে ভিটামিন C, K, ক্যালসিয়াম, আয়রন ও ম্যাগনেশিয়াম, যা হাড়কে শক্ত করে ও বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে।

রঙিন ফল যেমন পেঁপে, আম, কমলা ইত্যাদিও রাখুন প্রতিদিনের খাবারে।

• ১টি মাঝারি আলুতে প্রায় ৩ গ্রাম ক্যালসিয়াম

• ১ কাপ ব্রকোলিতে প্রায় ৫ গ্রাম ক্যালসিয়াম

৩. সয়াবিন: উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের রাজা

সয়াবিন হলো উচ্চমানের উদ্ভিজ্জ প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের অসাধারণ উৎস।

• এটি শিশুর পেশি, হাড় ও কোষ বৃদ্ধিতে সহায়ক।

• প্রতিদিন প্রায় ৫০ গ্রাম সয়াবিন শিশুর জন্য যথেষ্ট।

• এটি সেদ্ধ করে, চিলা বানিয়ে বা দুধে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।

৪. দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার: হাড়ের জোর বাড়ায়

যদি শিশুর ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স না থাকে, তবে প্রতিদিন এক গ্লাস দুধ খাওয়ানো উপকারী।দুধে রয়েছে—

• ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন D, যা হাড় বড় ও মজবুত করে

• ভিটামিন A, B ও E, যা সামগ্রিক উন্নয়নে সহায়ক

• দুধের পাশাপাশি পনির, দই ও ঘি পরিমিত পরিমাণে রাখুন শিশুর খাদ্যতালিকায়।

• শুধু খাবার নয়, ঘুম ও ভালোবাসাও সমান গুরুত্বপূর্ণ

• পুষ্টিকর খাবারের পাশাপাশি শিশুর ঘুম, ব্যায়াম, খেলাধুলা, মানসিক স্বাস্থ্য এবং ভালোবাসা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।• যথেষ্ট বিশ্রাম, খোলা বাতাসে খেলা এবং পরিবার থেকে পাওয়া ভালোবাসা শিশুর শরীর ও মনের বিকাশে গভীর প্রভাব ফেলে।

• তাই শিশুর প্রতিদিনের পাতে রাখুন এসব পুষ্টিকর উপাদান, সঙ্গে দিন যথেষ্ট ঘুম, খেলাধুলার সময় ও স্নেহময় পরিবেশ।

তাহলেই আপনার সন্তান বেড়ে উঠবে সুস্থ, সবল ও আত্মবিশ্বাসী এক মানুষ হিসেবে,যে কেবল দেহে নয়—মনেও হবে শক্ত, প্রাণবন্ত ও উদ্যমী।

ডা. রাফিয়াতুর রাফাআইএমও,স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত