ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২

বিনিয়োগকারীদের গলার কাঁটা ১৫ কোম্পানির শেয়ার

আবু তাহের নয়ন:
আবু তাহের নয়ন:

সিনিয়র রিপোর্টার

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৯ ১৮:৪৮:১০

বিনিয়োগকারীদের গলার কাঁটা ১৫ কোম্পানির শেয়ার

আবু তাহের নয়ন: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ব্যাংক ও নন-ব্যাংকিং আর্থিক খাতের ১৫টি কোম্পানি দীর্ঘদিন ধরেই বিনিয়োগকারীদের জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগ কোম্পানিই ঋণখেলাপি বা অব্যবস্থাপনার কারণে বাজারে আস্থা হারিয়েছে। ফলে এগুলোর শেয়ার এখন নামেমাত্র দামে লেনদেন হচ্ছে এবং কার্যত বিনিয়োগকারীদের গলার কাঁটা হয়ে আটকে আছে।

ব্যাংক খাতের কোম্পানিগুলো — গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, এসব ব্যাংক ঋণখেলাপির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যাংকগুলোকে নিয়ে নতুন একটি ব্যাংক গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। খবরটি বাজারে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই শেয়ারদরে টানা পতন দেখা যাচ্ছে। গত এক বছরে এসব শেয়ারের দাম ৫৮ শতাংশ থেকে ৭২ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে।

একই চিত্র নন-ব্যাংকিং আর্থিক খাতেও। এখাতের জিএসপি ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, ফাস ফাইন্যান্স, প্রাইম ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, বে লিজিং, প্রিমিয়ার লিজিং, ফনিক্স ফাইন্যান্স, বিআইএফসি ফাইন্যান্স ও ইসলামিক ফাইন্যান্স টানা দরপতনের মধ্যে রয়েছে। এদের মধ্যে অনেক কোম্পানিই দীর্ঘদিন ধরে লোকসান ও ঋণখেলাপির বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে। ফলে শেয়ারদর নামেমাত্র মূল্যে এসে দাঁড়িয়েছে। গত এক বছরে এসব কোম্পানির দামে পতন হয়েছে ৫০ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত।

গত এক বছরের দর পতনের শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে এই ১৫ কোম্পানির নাম। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেকেই বলছেন, বছরের পর বছর ধরে এই কোম্পানিগুলোতে তাদের বিনিয়োগ আটকে আছে, অথচ সম্ভাব্য কোনো সমাধান বা আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।

সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের করণীয় কী? বাংলাদেশ ব্যাংক এসব কোম্পানির বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য দিচ্ছে না। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি স্পষ্ট রোডম্যাপ দিত, তবে অন্তত শেয়ারবাজারে আতঙ্ক কিছুটা কমে যেত। বিষয়গুলো নিয়ে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি-ও কিছু বলছে না।

অস্তিত্ব সংকটে থাকা বেশ কয়েকটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে অবসায়িত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বর্তমানে এসব কোম্পানির শেয়ার নামেমাত্র দামে লেনদেন হচ্ছে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীরা কার্যত আটকে আছেন। যদিও বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টানা দরপতনের পর একসময় এখাতেও স্বাভাবিক সমন্বয় আসতে পারে। তবে সেটি নির্ভর করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ ও সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের ওপর। বিষয়টির নিয়ে বিএসইসির কার্যকর উদ্যোগ প্রত্যাশা করছেন বিনিয়োগকারীরা।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব অন্ধকারের মধ্যেও আলো আছে। আর্থিক খাত সংস্কারের উদ্যোগ যদি সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে দুর্বল কোম্পানিগুলো বাদ গিয়ে শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে সক্ষম হবে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরাও ধীরে ধীরে নতুন সম্ভাবনার পথে হাঁটতে পারবেন। তাই বিনিয়োগকারীদের এখন আতঙ্কিত না হয়ে ধৈর্য ধরার পরামর্শ দিচ্ছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।

এএসএম/

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত

নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন: ড. ইউনূস

নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন: ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনার জন্য ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয়... বিস্তারিত