ঢাকা, শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৪ আশ্বিন ১৪৩২
নিত্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া, বিপাকে ক্রেতা
.jpg)
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীতে নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছে। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ও সবজি থেকে শুরু করে প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম এখন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। ক্রেতারা বাজেট মেলাতে পারছেন না, প্রতিদিনের খাদ্য ক্রয়ই হয়ে উঠেছে চ্যালেঞ্জ।
গত দুই মাসে দেশি পেঁয়াজ, ডিম, মাংস, ডাল ও বিভিন্ন সবজির দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। টিসিবি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা কেজিতে, ডিম ডজনপ্রতি ১৩৫-১৪৫ টাকা, দেশি মসুর ডাল কেজিপ্রতি ১৬০-১৮০ টাকা, করলা ১০০-১২০ টাকা, বরবটি ১০০-১২০ টাকা, নতুন শিম ২২০-২৪০ টাকা এবং কাঁচামরিচ ১৮০-২০০ টাকায়। সবচেয়ে সস্তা সবজি পেঁপে ৩৫-৪০ টাকা কেজি। আলুর দাম কেজিপ্রতি ২৫-৩০ টাকা।
ক্রেতারা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। কাউরান বাজারের মানিক মিয়া বলেন, “সরকারের নজরদারি না থাকায় বাজারে অব্যবস্থা চলছে। মাছ-মাংস কিনতে গেলে কয়েক হাজার টাকা লাগছে।” মিরপুর শেওড়াপাড়া বাজারের মেজবা হোসেন বলেন, “ডিম, সবজি, মাছ—সবকিছুই আকাশচুম্বী। ছোট আয়ের মানুষ কোথায় যাবে?”
বিক্রেতারা জানাচ্ছেন, টানা বৃষ্টির কারণে কৃষকের ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সরবরাহ কমেছে। বাড্ডা বাজারের সবজি বিক্রেতা হারুন বলেন, পাইকারি বাজার থেকে দ্বিগুণ দামে সবজি কিনতে হচ্ছে। ফলে খুচরায়ও দাম বাড়ছে এবং ক্রেতারা কম কিনছে, যা আমাদের লোকসানের কারণ।
বাজার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও তদারকির অভাবও দামের ওঠানামার জন্য দায়ী। ভোক্তা অধিকার রক্ষাকারী সংগঠন ‘ভোক্তা’র নির্বাহী পরিচালক খলিলুর রহমান সজল বলেন, “ভোক্তারা এই অস্বাভাবিক দামকে ভাগ্যের ফের মনে করছে। সরকারের নিয়মিত হস্তক্ষেপ থাকলে পরিস্থিতি এত ভয়াবহ হতো না।”
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. মুস্তফা কে মুজেরি বলেন, “মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আনলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে না। পাইকারি পর্যায়ে মনোপলি ভাঙা, খাদ্য আমদানিতে শুল্ক কমানো ও সরাসরি বিপণন চ্যানেল শক্তিশালী করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, বাজারে স্বচ্ছতা আনা অত্যন্ত জরুরি, না হলে খাদ্যদ্রব্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে থাকবে।
এই অবস্থায় সাধারণ ভোক্তাদের জন্য বাজারে স্বাভাবিক দাম ফিরিয়ে আনা অত্যন্ত জরুরি। সরকারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও স্থানীয় প্রশাসনের তৎপরতা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে কৃষক, পাইকার ও খুচরো ব্যবসায়ীদের মধ্যে সমন্বয় থাকে এবং অযৌক্তিক দামের ঊর্ধ্বমুখী চাপ বন্ধ হয়। একই সঙ্গে ভোক্তারা যেন স্বচ্ছ এবং নিরাপদ চ্যানেলের মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারে, সেজন্য নীতি-নিয়ম কড়া করতে হবে। শুধুমাত্র বাজারে নিয়মিত হস্তক্ষেপ ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার ওপর এই ধরনের চাপ কমানো সম্ভব।
ইএইচপি
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাভেলোর শেয়ার কারসাজি: তিন বিও অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড কার্যকারিতায় বিএসইসির নতুন উদ্যোগ
- শেয়ারবাজারে ইতিহাস গড়লেন ‘ছাগল-কাণ্ডের’ সেই মতিউর
- শেয়ারবাজারে হঠাৎ দরপতন, নেপথ্যে এনবিআরের চিঠি
- একাদশে ভর্তি: চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মুনাফা চান? জেনে নিন ৫ মন্ত্র
- ডিভিডেন্ড বৃদ্ধির আলোচনায় জ্বালানি খাতের ১১ কোম্পানি
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- মালিকানায় পরিবর্তন আসছে ইয়াকিন পলিমারের
- এক শেয়ারের জোরেই সবুজে ফিরল শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড দোলাচলে তথ্যপ্রযুক্তির ৮ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- বিনিয়োগকারীদের সচেতন করতে টিভি স্ক্রলে বিশেষ বার্তা
- সোনালী পেপারের কারসাজিতে জেনেক্স ইনফোসিসের পরিচালকদের জরিমানা