ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২
শেখ হাসিনার পতন, জুলাই অভ্যুত্থান: ট্রাইব্যুনালে কি বললেন নাহিদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, যিনি জুলাই-আগস্টের মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ৪৭তম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন, তার জেরা ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুলতবি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই আদেশ দেন। জেরা করেন শেখ হাসিনা ও কামালের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী মো. আমির হোসেন।
নাহিদ ইসলাম তার জবানবন্দিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে শেখ হাসিনা সরকারের পতন পর্যন্ত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন যে, ২০১৮ সাল থেকে শুরু করে ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচন এবং ২০২৩ সালে ‘গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তি’ প্রতিষ্ঠা তার আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। ১৫ জুলাইয়ের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ কর্তৃক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা এবং ১৬ জুলাই সারাদেশে ছয়জনের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, এরপরই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ব্যাপক প্রতিরোধ কর্মসূচি শুরু করে।
নাহিদ ইসলাম জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং ছাত্রদল, ছাত্রশিবির ও বামপন্থী কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের সঙ্গে আলোচনার পর ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকার পতনের এক দফা ঘোষণা করা হয়। এই এক দফায় ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানানো হয়। তিনি আরও বলেন, ৬ আগস্টের ঘোষিত ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচিকে সরকার ব্যর্থ করার ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়ায় এবং নেতা-কর্মীদের হত্যা বা গুমের আশঙ্কায় তা একদিন এগিয়ে ৫ আগস্ট করা হয়। এই কর্মসূচির আগে ৪ আগস্ট নতুন সরকার গঠনের জন্য ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
৫ আগস্ট সারাদেশে থেকে মানুষ ঢাকায় আসতে শুরু করে এবং শাহবাগে অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুলি চালালেও একপর্যায়ে সেনাবাহিনী রাস্তা ছেড়ে দিলে শাহবাগ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। নাহিদ ইসলাম বলেন, এই দিন লাখ লাখ মানুষ ঢাকায় প্রবেশ করে এবং গণভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যাওয়ার পথে তারা জানতে পারেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে গেছেন এবং ছাত্র-জনতা গণভবনে প্রবেশ করেছে। তিনি ৫ আগস্ট ঢাকাসহ সারাদেশে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের জন্য শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান খান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের দায়ী করেছেন।
মিডিয়া প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেছেন, দেশের গণমাধ্যম আগেও নিয়ন্ত্রিত ছিল, এখনো সেই একই অবস্থায় আছে। তিনি জানান, গণমাধ্যম সংস্কারের জন্য কমিশন গঠন করা হলেও তার প্রত্যাশা অনুযায়ী সংস্কার হয়নি। তিনি আরও যোগ করেন যে, আন্দোলনের সময় অনেক মিডিয়া ফ্যাসিবাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিল এবং এখনো রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ বিদ্যমান।
সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, যিনি এই মামলায় রাজসাক্ষী হয়ে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানোর কথা স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন, তাকেও আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
এসপি
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাভেলোর শেয়ার কারসাজি: তিন বিও অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড কার্যকারিতায় বিএসইসির নতুন উদ্যোগ
- শেয়ারবাজারে ইতিহাস গড়লেন ‘ছাগল-কাণ্ডের’ সেই মতিউর
- একাদশে ভর্তি: চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মুনাফা চান? জেনে নিন ৫ মন্ত্র
- শেয়ারবাজারে হঠাৎ দরপতন, নেপথ্যে এনবিআরের চিঠি
- ডিভিডেন্ড বৃদ্ধির আলোচনায় জ্বালানি খাতের ১১ কোম্পানি
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- মালিকানায় পরিবর্তন আসছে ইয়াকিন পলিমারের
- এক শেয়ারের জোরেই সবুজে ফিরল শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড দোলাচলে তথ্যপ্রযুক্তির ৮ কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- সোনালী পেপারের কারসাজিতে জেনেক্স ইনফোসিসের পরিচালকদের জরিমানা
- চার কোম্পানির আর্থিক অনিয়মের দায়ে নিষিদ্ধ হচ্ছে ৬ নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান