ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ৩ আশ্বিন ১৪৩২

আজ রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ, তীব্র যানজটের আশঙ্কা

ইনজামামুল হক পার্থ
ইনজামামুল হক পার্থ

রিপোর্টার

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ১২:২২:৪৭

আজ রাজধানীজুড়ে বিক্ষোভ-সমাবেশ, তীব্র যানজটের আশঙ্কা

ইনজামামুল হক পার্থ: রাজধানী ঢাকায় আজ বৃহস্পতিবার একসঙ্গে কয়েকটি বড় আয়োজন শহরের স্বাভাবিক চলাচলে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। সাতটি রাজনৈতিক দলের বিক্ষোভ–সমাবেশ, অফিসগামী মানুষের সাপ্তাহিক ভিড় এবং আগামীকাল শুক্রবার অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার কারণে আজ রাজধানীতে অস্বাভাবিক যানজট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ইতিমধ্যেই সকালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে গাড়ির দীর্ঘ সারি ও ধীরগতির কারণে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত আন্দোলন, মাওলানা মামুনুল হকের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ড. আহমদ আবদুল কাদেরের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস, নেজামে ইসলাম পার্টি ও জাগপা—এই সাতটি দল অভিন্ন দাবিতে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এর অংশ হিসেবে আজ দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বায়তুল মোকাররম, প্রেসক্লাব, পল্টন, বিজয়নগর, কাকরাইল, নাইটিঙ্গেল ও শাহবাগ এলাকায় সমাবেশ ও মিছিল করবে তারা।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আজ জোহরের নামাজ শেষে বাইতুল মোকাররম উত্তর গেটে সমাবেশ ও মিছিল শুরু করে প্রেসক্লাব ও পল্টন পর্যন্ত যাবে। আসরের নামাজের পর বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সমাবেশ থেকে বিজয়নগর, কাকরাইল হয়ে নাইটিঙ্গেল পর্যন্ত মিছিল করবে। বিকেল ৩টায় প্রেসক্লাবের সামনে খেলাফত আন্দোলনের সমাবেশ এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় বিজয়নগরে জাগপার কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। নেজামে ইসলাম বিকেল ৫টায় প্রেসক্লাবে সমাবেশ করবে। অন্যদিকে বিকেল সাড়ে ৪টায় জামায়াতে ইসলামী বায়তুল মোকাররম দক্ষিণ গেটে সমাবেশ করে শাহবাগ পর্যন্ত মিছিল করবে।

রাজধানীর গুলিস্তান, মতিঝিল, সচিবালয়, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা ও কাকরাইল এলাকায় এই কর্মসূচির কারণে ইতিমধ্যেই যানজট শুরু হয়েছে। এ ছাড়া শাহবাগ এলাকায় সমাবেশ হলে তার প্রভাব পড়ছে ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, বাংলামোটর ও কারওয়ান বাজারে। বিশেষ করে হাসপাতাল এলাকায় রোগী পরিবহন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ডিএমপি। ঢাকা মেডিক্যাল, বারডেম, পিজি হাসপাতাল ও ল্যাবএইডের রোগী ও স্বজনরা বিপাকে পড়ছেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘যানজট নিয়ন্ত্রণে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে। তবে একসঙ্গে রাজনৈতিক কর্মসূচি ও অফিসযাত্রীদের চাপ সামলানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে পরীক্ষার্থীদের ঢাকায় আগমন। সব মিলিয়ে আজকের পরিস্থিতি অত্যন্ত চাপের হয়ে উঠতে পারে।’

তিনি আরও জানান, ঢাকায় প্রতিটি এলাকায় প্রতিদিনই যানজট থাকে। কিন্তু রাজনৈতিক কর্মসূচি যুক্ত হলে তা অচলাবস্থায় পরিণত হয়। এতে শুধু সাধারণ মানুষ নয়, জরুরি রোগী পরিবহন, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অফিস আদালতের কাজও মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার রাজনৈতিক সমাবেশ ও অঘোষিত সড়ক অবরোধ প্রতিদিনকার যানজটে নতুন মাত্রা যোগ করে। এতে শুধু সময় ও অর্থের ক্ষতি হয় না, বরং মানসিক চাপ ও উৎপাদনশীলতাও কমে যায়। যানজটের কারণে প্রতিদিন রাজধানীতে প্রায় কয়েক কোটি টাকা আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশেষ করে অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি ভোগেন।

পরিবহন বিশেষজ্ঞদের মতে, এসব পরিস্থিতি এড়াতে বিকল্প রুট নির্ধারণ, গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, রাজনৈতিক কর্মসূচির সময়সূচি আগে থেকেই সমন্বয় করা এবং জরুরি সেবার জন্য আলাদা করিডর চালু করা জরুরি। একইসঙ্গে নগরবাসীকেও অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত এড়িয়ে চলতে হবে। তবেই যানজটের ভয়াবহতা কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হবে।

ইএইচপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত