ঢাকা, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২

নির্বাচনি মাঠে সক্রিয় হতে বিএনপির ‘ডোর টু ডোর’ কর্মসূচি

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৭ ১১:১০:৫৭

নির্বাচনি মাঠে সক্রিয় হতে বিএনপির ‘ডোর টু ডোর’ কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ঘরোয়া পর্যায়ে সরাসরি জনসংযোগ বৃদ্ধির কৌশল নিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলের স্থায়ী কমিটির সাম্প্রতিক বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, দেশজুড়ে চালু হচ্ছে ‘ডোর টু ডোর’ কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় গিয়ে ভোটাধিকার, নির্বাচন ও রাষ্ট্র সংস্কার বিষয়ে বার্তা পৌঁছানো হবে।

সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ইসলামপন্থি দলগুলোর একাধিক কর্মসূচি এবং বিএনপির বিরুদ্ধে প্রচারণার প্রেক্ষিতে মাঠে সক্রিয় অবস্থান গ্রহণকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে দেখছে দলটি। দলীয় নেতৃবৃন্দ মনে করছেন, নির্বাচনকে ঘিরে সাংগঠনিক শক্তি পুনর্বিন্যাস ও তৃণমূল পর্যায়ে উপস্থিতি বাড়ানো সময়োপযোগী পদক্ষেপ।

‘ডোর টু ডোর’ কর্মসূচি শুধু প্রচারণা নয়, বরং জনসম্পৃক্ত রাজনীতির একটি কৌশল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এই উদ্যোগে পুরুষ কর্মীদের পাশাপাশি নারীদেরও সক্রিয়ভাবে যুক্ত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রিক রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো হলে তা দলের ইমেজ পুনর্গঠনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে দলটির পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে দলের ঘোষিত রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনার ভিত্তিতে দ্রুত নির্বাচন ইশতেহার চূড়ান্ত করার কাজও চলছে। ৩১ দফার আলোকে প্রতিটি আসনে একক প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্যে প্রার্থী বাছাই এবং মাঠপর্যায়ে তাদের সক্রিয় উপস্থিতি নিশ্চিত করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অতীতে কিছু নেতার কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার কথা মাথায় রেখে এবার দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বৈঠকে আলোচনায় আসে ‘জুলাই জাতীয় সনদ’ বাস্তবায়নের বিষয়টিও। দলীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী, যেসব সংস্কার সংবিধান সংশোধনের আওতায় পড়ে না, সেগুলো নির্বাহী আদেশ বা অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচনের আগেই বাস্তবায়নযোগ্য। আর সাংবিধানিক সংশোধন প্রয়োজন এমন সংস্কার পরবর্তী সংসদে তোলা হবে। এসব প্রস্তাবনা আইনি ভিত্তিতে সুদৃঢ় করতে প্রয়োজন হলে সুপ্রিম কোর্টের মতামত নেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিএনপি বর্তমানে নির্বাচনি প্রস্তুতির ‘রিকভারি মোড’-এ রয়েছে। দলটি রাজনৈতিক ভারসাম্য পুনরুদ্ধার, জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং নির্বাচনমুখী সক্রিয়তা বৃদ্ধি করতে সচেষ্ট। এই প্রক্রিয়ায় তারা অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে বিরোধ না বাড়িয়ে ঐক্যমুখী থাকার কৌশল গ্রহণ করছে।

সব মিলিয়ে বিএনপির রাজনৈতিক কৌশলে এখন ঘরোয়া সংযোগ, সাংগঠনিক পুনর্গঠন, নারী সম্পৃক্ততা এবং রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা স্পষ্ট হয়ে উঠছে। নির্বাচনের মাঠে এই কৌশল কতটা কার্যকর হবে, তা নির্ধারণ করবে সময় এবং জনসাধারণের সাড়া ।

নয়ন

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত