ঢাকা, মঙ্গলবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

তামাকমুক্ত দেশ গড়তে প্রস্তাবিত সংশোধনীর বিকল্প নেই: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৯ ১৯:৩০:১৪

তামাকমুক্ত দেশ গড়তে প্রস্তাবিত সংশোধনীর বিকল্প নেই: স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের কোনো বিকল্প নেই। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির মতামত নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দি রুরাল পিওর-ডর্প (ডর্‌প) আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের প্রস্তাবিত সংশোধনী দ্রুত পাশের প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

নূরজাহান বেগম বলেন, যদিও তামাক কোম্পানি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা উত্থাপিত হয়েছিল, তবে তা হয়নি। আমার মনে হয় ভবিষ্যতেও এ বৈঠক হওয়ার সম্ভাবনা কম।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন ডর্‌প’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী এএইচএম নোমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডর্‌প’র উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান এবং অবসরপ্রাপ্ত সচিব মুন্সী আলাউদ্দীন আল আজাদ। এছাড়া স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত সচিব হোসেন আলী খন্দকার, মোস্তাফিজুর রহমান, তামাকবিরোধী যুব প্রতিনিধি তাবাসসুম খানম রাত্রি ও সবুর আহমেদ কাজল বক্তব্য রাখেন।

মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান তার প্রবন্ধে World Health Organization-এর ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোবাকো কন্ট্রোল (FCTC) অনুযায়ী প্রস্তাবিত সংশোধনীর গুরুত্বপূর্ণ ৬টি বিষয় তুলে ধরেন-

১. পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা।

২. বিক্রয়কেন্দ্রে তামাক পণ্যের প্রদর্শন বন্ধ।

৩. তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

৪. ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শিশু-কিশোর ও তরুণদের রক্ষা করা।

৫. তামাকপণ্যের খুচরা ও খোলা বিক্রয় বন্ধ করা।

৬. সচিত্র স্বাস্থ্য সতর্কবার্তার আকার ৫০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ বৃদ্ধি করা।

মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান বলেন, বাংলাদেশে প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মারা যায়। তামাক কোম্পানি দাবি করে সংশোধনী দ্রুত পাশ হলে সরকার রাজস্ব হারাবে, কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন। ২০০৫ সালে আইন প্রণয়ন ও ২০১৩ সালে সংশোধনের পর ১৮ বছরে রাজস্ব বেড়েছে সাড়ে ১২ গুণ, আর তামাক ব্যবহার ১৮ শতাংশ কমেছে।

মুন্সী আলাউদ্দীন আল আজাদ বলেন, প্রস্তাবিত খসড়ায় তামাক কোম্পানির মতামত নেওয়া হচ্ছে, যা FCTC-এর আর্টিকেল ৫.৩ লঙ্ঘন। জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে সংশোধনী দ্রুত পাশ করা জরুরি।

হোসেন আলী খন্দকার আরও বলেন, তরুণ সমাজ সচেতন না হলে আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। সুতরাং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে অগ্রাধিকার পেতে হবে জনস্বাস্থ্যের স্বার্থের জন্য, তামাক শিল্পের নয়।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত