ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২
"বাংলাদেশি" আখ্যা দিয়ে অপমান: মমতার ক্ষোভ

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন, যেখানে তিনি বলেছেন যে বাংলাভাষী মানুষকে "বাংলাদেশি" আখ্যা দিয়ে রাজ্য থেকে বিতাড়িত করার কোনও প্রচেষ্টা সফল হতে দেবেন না। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছেন, "আমরা প্রত্যেক বাংলাভাষীকে ‘বাংলাদেশি’ বলে হেনস্তা ও দেশছাড়া করতে দেব না। এই ধরনের কোনও চেষ্টা হলে আমরা তার জবাব দেব।"
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বুধবার এই হুঁশিয়ারি আসে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে কড়া আক্রমণ করেন। তিনি রাজ্যের বাসিন্দাদের উদ্দেশে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র 'দ্য গডফাদার'-এর সংলাপের অনুকরণে বলেছেন, "অন্য নথি ছুড়ে ফেলুন, আধার তুলে নিন।"
আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকা সংশোধনের সম্ভাব্য পদক্ষেপকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিতর্কিত জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) আইন কার্যকর করার বিজেপির কৌশল বলে অভিহিত করেছেন। তিনি তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, "কেউ যদি জরিপ করতে আসে, কখনোই আপনার তথ্য দেবেন না। তারা আপনার বিস্তারিত তথ্য নেবে এবং নাম কেটে দেবে। আপনার ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখুন, সেখানে নাম আছে কি না। আধার কার্ড রাখুন... এটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।"
মমতা অভিযোগ করেছেন যে কেন্দ্রীয় সরকার পশ্চিমবঙ্গজুড়ে ৫০০টি দল মোতায়েন করেছে, যাদের উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া। তিনি পুনরায় জোর দিয়ে বলেন, "আমরা প্রত্যেক বাংলাভাষীকে ‘বাংলাদেশি’ বলে হেনস্তা কিংবা দেশছাড়া করতে দেব না।"
তিনি বিজেপিকে "ললিপপ সরকার" আখ্যা দিয়ে অভিযোগ করেন যে তারা বিডিও (ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার) এবং জেলা ম্যাজিস্ট্রেটদের চাকরি কেড়ে নেওয়া বা কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিচ্ছে। তিনি বলেন, "নির্বাচন কমিশন আসে এবং যায়... কিন্তু রাজ্য সরকার থেকে যায়।" মমতা আরও বলেন, "আমি নির্বাচন কমিশনকে সম্মান করি। কিন্তু আপনারা জানেন, ললিপপ খাওয়া শিশুদের জন্য ঠিক আছে। কিন্তু বড়রা যদি কোনও রাজনৈতিক দলের ললিপপ খায়, সেটা ঠিক নয়। আমি শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত কারও ভোটাধিকার কেড়ে নিতে দেব না।"
তিনি দেশের গরিব মানুষের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার করে বলেন, "আপনি মানুষের অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। গরিব মানুষকে ‘বাংলাদেশি’ বলে নির্যাতন করছেন। কিন্তু গরিবরা আমার হৃদয়ে আছেন। আমি জাতপাত মানি না, আমি মানবতা মানি।"
এর আগে, মমতার ভাতিজা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, "একজন মানুষেরও যদি ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হয়, তাহলে ১০ লাখ বাঙালি দিল্লি অভিমুখে পদযাত্রা করবে, রাজপথ ঘেরাও করবে।"
বাংলা ভাষাকে অপমান করার জন্য বিজেপিকে তীব্র সমালোচনা করে মমতা বলেন, "তারা বাংলা ভাষাকে অপমান করছে।" সম্প্রতি দিল্লি পুলিশের এক চিঠিতে বাংলাকে ‘বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা’ বলা হয়েছিল, যা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তোলেন, "যদি বাংলা না থাকে, তাহলে জাতীয় সঙ্গীত ও জাতীয় গান কোন ভাষায় লেখা হয়েছে? স্বাধীনতা সংগ্রামে বাংলার অবদান ভুলিয়ে দিতে চায় তারা। আমরা এই ভাষাগত সন্ত্রাস সহ্য করব না।"
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- তিন কোম্পানির কারখানা বন্ধ, ক্ষোভ বাড়ছে বিনিয়োগকারীদের
- আইসিবি’র বিশেষ তহবিলের মেয়াদ ২০৩২ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি
- কেয়া কসমেটিক্সের ৮ হাজার কোটি টাকা উধাও, চার ব্যাংককে তলব
- সম্ভাবনার নতুন দিগন্তে শেয়ারবাজারের খান ব্রাদার্স
- ব্লুমবার্গের টেকসই তালিকায় বাংলাদেশের ১১ তালিকাভুক্ত কোম্পানি
- মূলধন ঘাটতিতে দুই ব্রোকারেজ হাউজ, ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- দুই খবরে আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারের চমক
- চলতি বছর শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্রায়াত্ব দুই প্রতিষ্ঠান
- সাকিবের মোনার্কসহ ৮ ব্রোকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
- ২৩ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে প্রতারণা, বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করল ডিএসই
- বিএসইসির নতুন মার্জিন বিধিমালার খসড়া অনুমোদন
- বিমা আইন সংস্কার: বিনিয়োগ ও আস্থায় নতুন দিগন্ত
- কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শেয়ারবাজারের জন্য সুখবর: কমছে ট্রেজারি বিল ও বন্ডের সুদ