ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

যবিপ্রবির ভিসির নামে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ, প্রশাসনের ব্যাখ্যা ও প্রতিবাদ

ডুয়া নিউজ- বিশ্ববিদ্যালয়
২০২৫ আগস্ট ২৭ ০৯:৪৮:০২
যবিপ্রবির ভিসির নামে বিভ্রান্তিমূলক সংবাদ, প্রশাসনের ব্যাখ্যা ও প্রতিবাদ

সম্প্রতি দেশের কিছু পত্রিকা ও অনলাইনে “যবিপ্রবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে থাকার অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধে” শীর্ষক শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। প্রকাশিত প্রতিবেদনের প্রতিবাদ জানিয়েছে যবিপ্রবি প্রশাসন। মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়রে তথ্য কর্মকর্তা মো. নাজমুল হোসাইন এক প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছেন।

প্রতিবাদলিপির ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যবিপ্রবি প্রশাসন নিয়োগ, পদোন্নতি, একাডেমিক কার্যক্রম, গবেষণা ও সকল বিষয় একই সাথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে এ ধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার কুচক্রি ও স্বার্থান্বেষী মহলের কাজ যারা নিজেদের হীন স্বার্থে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে পশ্চাৎপদ ও অস্থিতিশীল রাখতে সর্বদা তৎপর। যবিপ্রবি প্রশাসন যেকোনো ঘটনার গঠনমূলক সমালোচনা ও সঠিক তথ্য প্রকাশের ব্যাপারে সবসময় আন্তরিক। গঠনমূলক সমালোচনা ও সঠিক তথ্যের প্রকাশ প্রশাসনের কাজকে গতিশীল ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। কিন্তু অমূলক, ভিত্তিহীন, মিথ্যা ঘটনা প্রকাশ ও মিথ্যা গল্প বানিয়ে প্রশাসনকে হেয় করা কখনোই সমীচীন নয়। যবিপ্রবি প্রশাসন সবসময় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে চাই।

যবিপ্রবি থেকে পাঠানো প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, প্রকৃতপক্ষে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে বিগত সরকারের পতনের ফলে প্রশাসনে সকল পর্যায়ে শুন্যতা সৃষ্টি হয়। যবিপ্রবি উপাচার্য দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই যবিপ্রবির আইন ২০০১ অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী নীতিমালা যুগোপযোগী করা হয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের উচ্চতর ও নিম্নতর বাছাই বোর্ড, কর্মকর্তা বাছাই বোর্ড ও কর্মচারী বাছাই বোর্ড নতুনভাবে গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। মন্ত্রণালয় হতে সম্প্রতি শিক্ষকদের ১৫ টি বিভাগের বোর্ড সদস্য মনোয়ন দিয়েছে, বাকীগুলো প্রক্রিয়াধীন। ইতোমধ্যে রিজেন্ট বোর্ড গত ১৫ আগস্ট ১০৮ তম সভায় ঐ ১৫ টি বিভাগের নিয়োগবোর্ডে বাকী সদস্যদের নাম প্রস্তাব করেছে। উক্ত বিভাগগুলো হতে যুগোপযোগী নীতিমালা অনুসরণপূর্বক আপগ্রেডেশন ও প্রমোশনের জন্য গত ১৮ আগস্ট যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার কর্তৃক সকল বিভাগে শিক্ষকগণের আপগ্রেডেশনের জন্য প্লানিং কমিটির সুপারিশ প্রেরণের অনুরোধ করা হয় যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ১৯ আগস্ট তারিখে দেওয়া আছে। বিভাগগুলো হতে প্লানিং কমিটির রিপোর্ট পাওয়া মাত্রই পর্যায়ক্রমে বোর্ড শুরু হবে।

প্রতিবাদলিপিতে আরও বলা হয়েছে, গত ২৩ মার্চ শিক্ষক ও কর্মকর্তা নিয়োগ ও পদোন্নতি এবং ২ জুন শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। উক্ত আবেদনের প্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ নিয়োগ ও পদোন্নতির জন্য প্রাপ্ত আবেদন পত্রের যাচাই-বাছাই কার্যক্রম ও কমপারাটিভ স্টাডি (সিএস) চলমান রয়েছে। শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২৮ টি বিভাগ ও ১ টি অনুষদের মোট ৫৮ টি যার ২৯ টি উচ্চতর ও ২৯ টি নিম্নত বোর্ড গঠন করতে হচ্ছে। যার মধ্যে ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত রিজেন্ট বোর্ডে অর্ধেক সম্পন্ন হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ হতে এই প্রক্রিয়া দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্ঠা চলমান আছে। বহিঃস্থ সদস্য নির্বাচন ও মন্ত্রণালয় হতে অনুমোদন একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। অন্যদিকে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য ১৭ টি বোর্ড গঠনের প্রস্তাব ১৫ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য রিজেন্ট বোর্ডে গৃহীত হয়েছে। অতএব, যেখানে মার্চ ও জুন মাসে নিয়োগ ও পদোন্নতির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে এবং আবেদনের প্রেক্ষিতে যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়াধীন, সেই সাথে রিজেন্ট বোর্ড কর্তৃক ১৫ আগস্ট তারিখে বোর্ড গঠনের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে এবং ১৮ আগস্ট আপগ্রেডেশনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ হতে বিভাগ ও দপ্তরগুলোতে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

যবিপ্রবি প্রশাসন থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেখানে ২৩ আগস্ট “যবিপ্রবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি আটকে থাকার অভিযোগ উপাচার্যের বিরুদ্ধে” শীর্ষক শিরোনামে যে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তা কতটুকু যৌক্তিক ও তথ্যনির্ভর তা আমাদের বোধগম্য নয়। যবিপ্রবি প্রশাসন এধরনের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রকাশে তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করছে। এ ধরনের মিথ্যাচার ও অপপ্রচার ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ বলা যেতে পারে।

উল্লেখ্য, এদিকে সম্প্রতি কিছু অনলাইনের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, দীর্ঘ দেড় বছর ধরে বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ৫১ জন শিক্ষক, প্রায় ৪০ জন কর্মকর্তা ও ৮০ জনেরও বেশি কর্মচারীর কোনো আপগ্রেডেশন-পদোন্নতি বোর্ড হয়নি। সর্বশেষ এই বোর্ড হয়েছিল সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেনের সময়কালে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ২০২৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল মজিদের দায়িত্বপ্রাপ্তির পর থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো এক অদৃশ্য কারণে কোনো আপগ্রেডেশন বোর্ড করেননি তিনি। এছাড়াও, অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগ ও পদোন্নয়ন নীতিমালা আইনে 'ডিউ ডেট' থাকলেও যবিপ্রবিতে এমন আইন নেই। ফলশ্রুতিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বিশ্ববিদ্যালয় এর অন্যান্য সংবাদ