ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১২ ভাদ্র ১৪৩২

মেট্রোরেল ব্যয় কমাতে জাপান সফরে সরকার দল

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ আগস্ট ২৫ ১৪:৪৩:১১
মেট্রোরেল ব্যয় কমাতে জাপান সফরে সরকার দল

বাংলাদেশে মেট্রোরেল প্রকল্পসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে খরচ কমানো এবং কার্যকারিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের সরকারি প্রতিনিধি দল আজ রোববার টোকিওর উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। প্রায় দুই সপ্তাহের এ সফরে তারা জাপানের সরকারের সঙ্গে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেবেন।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সফরের মূল উদ্দেশ্য হলো মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে আনা, রেলওয়ে খাতের উন্নয়ন এবং বহুমুখী পরিবহন ও পর্যটন ব্যবস্থার উন্নয়ন বিষয়ে জাপানের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়া। প্রতিনিধি দলে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মো. শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকীসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কর্মকর্তারা রয়েছেন। তারা আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ফিরবেন।

বাংলাদেশে বর্তমানে তিনটি বড় মেট্রোরেল প্রকল্পে জাপান সরকার অর্থায়ন করছে। এর মধ্যে এমআরটি লাইন-৬ এর উত্তরা থেকে মতিঝিল অংশ চালু হয়েছে। তবে এমআরটি লাইন-১ ও লাইন-৫ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। এই দুটি প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ইতোমধ্যে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। প্রকল্প দুটির নির্মাণ ব্যয় দাঁড়াতে পারে প্রায় দুই লাখ কোটি টাকা, যা সরকারের ২০১৯ সালের অনুমান (৯৪ হাজার কোটি টাকা) থেকে দ্বিগুণের বেশি।

এ নিয়ে চলতি সপ্তাহে অর্থ উপদেষ্টা, পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এবং ইআরডি ও পরিকল্পনা কমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা একটি প্রস্তুতিমূলক বৈঠক করেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, মেট্রোরেলের ব্যয় যৌক্তিক করতে ঋণদাতা সংস্থা জাইকার সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করা হবে। এডিবির পক্ষ থেকেও জাপানের পরিবহন ও পর্যটন ব্যবস্থা নিয়ে একটি উপস্থাপনা দেওয়া হয়।

জানা গেছে, সফরকালে প্রতিনিধি দল জাপানের রেলওয়ে ব্যবস্থাপনা, পর্যটন বিপণন কৌশল এবং স্টেশন মডার্নাইজেশন প্রক্রিয়া পরিদর্শন করবে। বিশেষভাবে তারা জাপান রেলওয়ে (জেআর) সেন্ট্রাল অফিস পরিদর্শন করবে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়েতে পর্যটন সংযুক্তকরণ ও স্টেশনগুলোকে বাণিজ্যিক হাবে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এডিবির উপস্থাপনায় বলা হয়, পাহাড়পুর, মহাস্থানগড়, ময়নামতি এবং কক্সবাজারের মতো ঐতিহাসিক স্থানগুলোর সঙ্গে রেল সংযোগ তৈরি করে পর্যটকদের আকৃষ্ট করা গেলে রাজস্ব বাড়বে এবং রেলওয়ের আর্থিক ক্ষতি কমবে। একইসঙ্গে কমলাপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের স্টেশনগুলোকে আধুনিক বানিয়ে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব।

এছাড়া, চট্টগ্রাম, মোংলা ও মাতারবাড়ী বন্দর ব্যবস্থাপনায় ‘মাল্টিমোডাল লজিস্টিক সিস্টেম’ কীভাবে প্রয়োগ করা যায়, সে সম্পর্কেও জাপানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করবে প্রতিনিধি দল।

সফর শেষে জাপানের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে অবকাঠামো খাতে আরও দক্ষতা ও স্বচ্ছতা আনার প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত