ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২
ঢাকার শেয়ারবাজারে বিরল সমীকরণ

গত সপ্তাহের বুধবার পর্যন্ত টানা সাত কার্যদিবসের পতনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছিল ২২২ পয়েন্ট। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে বাজার ফের উত্থানমুখী ধারায় ফেরে এবং টানা তিন কার্যদিবসে সূচক ১০৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। তবে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) মুনাফা তোলার চাপে সূচক আবারও নেতিবাচক প্রবণতায় ফিরে আসে এবং ৯ পয়েন্ট কমে ডিএসই-তে লেনদেন শেষ হয়।
তবে সূচকের এই পতনের মধ্যেই বাজারে একটি বিরল দৃশ্য দেখা গেছে। আজ ডিএসইতে মোট ৪০০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬৪টির দাম বেড়েছে, ১৬৪টির দাম কমেছে এবং ৭২টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। সূচকের নেতিবাচক প্রবণতার মধ্যে এমন সমান সংখ্যক শেয়ারের দাম বাড়া ও কমা সাধারণত শেয়ারবাজারে দেখা যায় না। বাজার বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে একটি বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একদল মনে করছেন, সূচক সামান্য কমলেও বাজারে এক ধরনের স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে, কারণ সমান সংখ্যক শেয়ারের দাম ওঠানামা করেছে। অন্যদিকে, আরেক দল বিনিয়োগকারী এই সমতাকে বাজারের অনিশ্চয়তার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, বিনিয়োগকারীরা দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছেন—কেউ আস্থা নিয়ে শেয়ার কিনছেন, আবার কেউ মুনাফা তুলে নিচ্ছেন।
তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সমান সংখ্যক শেয়ারের উত্থান-পতন বাজারের ভারসাম্যকে তুলে ধরে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, বাজারে কোনো বড় আতঙ্ক নেই। বরং বিনিয়োগকারীরা এখন খাতভিত্তিক বিশ্লেষণ করে লেনদেন করছেন। অর্থাৎ, যেসব শেয়ারকে সম্ভাবনাময় মনে করছেন, সেগুলোতে ঝুঁকছেন, এবং দুর্বল শেয়ার থেকে বেরিয়ে আসছেন।
তবে এই সমতা আরেকটি বাস্তবতাকেও সামনে এনেছে- সেটি হলো বাজারে কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। বিনিয়োগকারীরা মূলত অনিশ্চয়তার মধ্যেই লেনদেন করছেন। একদিকে কিছু কোম্পানিতে আস্থা তৈরি হলেও অন্যদিকে কিছু কোম্পানিতে এখনো আস্থার সংকট রয়ে গেছে। তাই অনেকে মনে করছেন, বাজারের প্রকৃত পুনরুদ্ধার এখনো হয়নি।
ডিএসই'র দীর্ঘদিনের রেকর্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সূচক পতনের দিনে দাম বাড়া এবং কমা শেয়ারের সংখ্যা সমান হওয়া খুবই অস্বাভাবিক। সাধারণত সূচক কমলে পুরো বাজারজুড়েই পতনের ঢেউ লাগে, আবার সূচক বাড়লে শেয়ারের দামও সামগ্রিকভাবে বাড়ে। কিন্তু মঙ্গলবার এই প্রথাগত চিত্র ভেঙে বাজারে একটি নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। উত্থান-পতনের চিত্র সমানে সমান।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বিরল নজির বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত হতে পারে। এটি প্রমাণ করে যে, সব শেয়ারের ওপর একই রকম প্রভাব পড়ছে না। বিনিয়োগকারীরা এখন কোম্পানির পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আলাদাভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তবে টেকসই ইতিবাচক ধারার জন্য বাজারে আস্থা তৈরির উদ্যোগ জরুরি।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- হলে ঢাবি ছাত্রীর হঠাৎ অসুস্থতা, হাসপাতালে মৃত্যু
- মার্জিন ঋণে মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে বিনিয়োগ করা যাবে না
- ‘পদত্যাগ করতে পারেন ড. ইউনূস’
- বিদেশি বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে পাঁচ শেয়ার
- ঢাবির হলে 'গাঁ’জার আসর', চার শিক্ষার্থীকে আটক
- মারা গেলেন থ্রি ইডিয়টস সিনেমার অভিনেতা
- ১২ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৯ খবর
- বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘লাল তালিকা’য় ২০ আর্থিক প্রতিষ্ঠান
- দুই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- ভালুকায় প্রথম পাঁচতারা হোটেল চালু করছে বেস্ট হোল্ডিংস
- সামিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কিনছে আরব আমিরাতের কোম্পানি
- বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের নতুন কমিটির অভিষেক শনিবার
- বেক্সিমকো-বেক্সিমকো ফার্মাসহ চার ব্যক্তি-এক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা-সতর্ক
- বদলে যাচ্ছে মিউচ্যুয়াল ফান্ডের নিয়ম, বাড়ছে জবাবদিহিতা
- ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ারে নতুন জোয়ার