ঢাকা, রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ৩ কার্তিক ১৪৩২
ঢাকার শেয়ারবাজারে বিরল সমীকরণ

গত সপ্তাহের বুধবার পর্যন্ত টানা সাত কার্যদিবসের পতনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক কমেছিল ২২২ পয়েন্ট। এরপর বৃহস্পতিবার থেকে বাজার ফের উত্থানমুখী ধারায় ফেরে এবং টানা তিন কার্যদিবসে সূচক ১০৫ পয়েন্ট বৃদ্ধি পায়। তবে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) মুনাফা তোলার চাপে সূচক আবারও নেতিবাচক প্রবণতায় ফিরে আসে এবং ৯ পয়েন্ট কমে ডিএসই-তে লেনদেন শেষ হয়।
তবে সূচকের এই পতনের মধ্যেই বাজারে একটি বিরল দৃশ্য দেখা গেছে। আজ ডিএসইতে মোট ৪০০টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৬৪টির দাম বেড়েছে, ১৬৪টির দাম কমেছে এবং ৭২টির দাম অপরিবর্তিত ছিল। সূচকের নেতিবাচক প্রবণতার মধ্যে এমন সমান সংখ্যক শেয়ারের দাম বাড়া ও কমা সাধারণত শেয়ারবাজারে দেখা যায় না। বাজার বিশ্লেষকরা এই ঘটনাকে একটি বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। একদল মনে করছেন, সূচক সামান্য কমলেও বাজারে এক ধরনের স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে, কারণ সমান সংখ্যক শেয়ারের দাম ওঠানামা করেছে। অন্যদিকে, আরেক দল বিনিয়োগকারী এই সমতাকে বাজারের অনিশ্চয়তার প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন। তাদের মতে, বিনিয়োগকারীরা দোদুল্যমান অবস্থায় রয়েছেন—কেউ আস্থা নিয়ে শেয়ার কিনছেন, আবার কেউ মুনাফা তুলে নিচ্ছেন।
তবে বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সমান সংখ্যক শেয়ারের উত্থান-পতন বাজারের ভারসাম্যকে তুলে ধরে। এটি ইঙ্গিত দেয় যে, বাজারে কোনো বড় আতঙ্ক নেই। বরং বিনিয়োগকারীরা এখন খাতভিত্তিক বিশ্লেষণ করে লেনদেন করছেন। অর্থাৎ, যেসব শেয়ারকে সম্ভাবনাময় মনে করছেন, সেগুলোতে ঝুঁকছেন, এবং দুর্বল শেয়ার থেকে বেরিয়ে আসছেন।
তবে এই সমতা আরেকটি বাস্তবতাকেও সামনে এনেছে- সেটি হলো বাজারে কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। বিনিয়োগকারীরা মূলত অনিশ্চয়তার মধ্যেই লেনদেন করছেন। একদিকে কিছু কোম্পানিতে আস্থা তৈরি হলেও অন্যদিকে কিছু কোম্পানিতে এখনো আস্থার সংকট রয়ে গেছে। তাই অনেকে মনে করছেন, বাজারের প্রকৃত পুনরুদ্ধার এখনো হয়নি।
ডিএসই'র দীর্ঘদিনের রেকর্ড পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সূচক পতনের দিনে দাম বাড়া এবং কমা শেয়ারের সংখ্যা সমান হওয়া খুবই অস্বাভাবিক। সাধারণত সূচক কমলে পুরো বাজারজুড়েই পতনের ঢেউ লাগে, আবার সূচক বাড়লে শেয়ারের দামও সামগ্রিকভাবে বাড়ে। কিন্তু মঙ্গলবার এই প্রথাগত চিত্র ভেঙে বাজারে একটি নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে। উত্থান-পতনের চিত্র সমানে সমান।
বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বিরল নজির বাজারের জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত হতে পারে। এটি প্রমাণ করে যে, সব শেয়ারের ওপর একই রকম প্রভাব পড়ছে না। বিনিয়োগকারীরা এখন কোম্পানির পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে আলাদাভাবে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। তবে টেকসই ইতিবাচক ধারার জন্য বাজারে আস্থা তৈরির উদ্যোগ জরুরি।
শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বাংলাদেশ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা, খেলাটি সরাসরি দেখুন (LIVE)
- ৪০ বছরের ইতিহাসে ডিভিডেন্ডে নজির ভাঙল এপেক্স ট্যানারি
- ডিভিডেন্ড ঘোষণায় রেকর্ড ভাঙ্গল লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স!
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু এগ্রো
- একদিনে 'এ' ক্যাটাগরিতে ফিরল দুই কোম্পানি
- বস্ত্র খাতের ৮ কোম্পানিতে বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ
- মার্জিন ঋণ আতঙ্কে হঠাৎ ধস নামলো শেয়ারবাজারে!
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে তালিকাভুক্ত ৪ কোম্পানি
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ১৭ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে তালিকাভুক্ত তিন কোম্পানি
- ১৪ অক্টোবর: এক নজরে শেয়ারবাজারের ২০ খবর
- ইপিএস প্রকাশ করেছে ৮ কোম্পানি
- ১০ কোম্পানির কারণে ৩ মাস পেছনে গেল শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজার কি ধ্বংসের পথে? আর কত রক্তক্ষরণ?
- পাকিস্তান বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা: নোমান আলীর শিকার মার্করাম