ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২
পোশাক রপ্তানিতে নতুন সুযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের ক্রেতাদের নজর বাংলাদেশে

যুক্তরাষ্ট্রে পাল্টা শুল্ক কার্যকর হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক কারখানায় মার্কিন ক্রেতাদের আগ্রহ বেড়েছে। ভারত ও চীনে উচ্চ শুল্কের কারণে সেসব দেশ থেকে ক্রয়াদেশ সরিয়ে আনছে অনেক মার্কিন ব্র্যান্ড। শুধু তাই নয়, ভারতের বড় রপ্তানিকারকরা দীর্ঘমেয়াদে ক্রয়াদেশ ধরে রাখতে বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। একই সঙ্গে চীনা বিনিয়োগকারীরাও বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনে আগ্রহী। গত দুই সপ্তাহে দুটি চীনা প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ চুক্তি সম্পন্ন করেছে।
রপ্তানি খাতের উদ্যোক্তাদের তথ্যমতে, গত দুই সপ্তাহে মার্কিন ক্রেতাদের কাছ থেকে নতুন ও আগের স্থগিত ক্রয়াদেশের অনুসন্ধান মিলছে। এর বড় একটি অংশ ভারত থেকে স্থানান্তরিত অর্ডার। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের একক বৃহত্তম পোশাক রপ্তানি বাজার। মার্কিন বাজারে শীর্ষ রপ্তানিকারক দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভিয়েতনাম, চীন, বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মেক্সিকো, হন্ডুরাস, কম্বোডিয়া, পাকিস্তান ও কোরিয়া।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৩১ জুলাই পাল্টা শুল্ক সংশোধন করে বাংলাদেশি পণ্যে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেন। চীনা পণ্যে শুল্ক ৩০ শতাংশ আর ভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ। রাশিয়ার জ্বালানি কেনার কারণে ভারতের পণ্যে অতিরিক্ত আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে যা কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট। সব দেশের ওপর পাল্টা শুল্ক কার্যকর হয়েছে ৭ আগস্ট থেকে।
বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খান জানান, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক পরিবর্তনে ক্রেতারা প্রথমে বাজার প্রতিক্রিয়া দেখবেন। ভোক্তারা শুল্ক মেনে নিলে ক্রয়াদেশ আরও বাড়বে। বর্তমানে বসন্তের জন্য ৫–১০ শতাংশ এবং গ্রীষ্মের জন্য ১০–১৫ শতাংশ বেশি অর্ডার রয়েছে। এজন্য প্রতিদিন অতিরিক্ত ৩ ঘণ্টা ওভারটাইমের অনুমতি নেওয়া হয়েছে।
শীর্ষ রপ্তানিকারক স্নোটেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম খালেদ জানান, গত বছর একটি মার্কিন ক্রেতার জন্য ৭ লাইনে উৎপাদন হলেও এবার সেই অর্ডার ১৭ লাইন লাগবে। আরেক ক্রেতার ২০ লাইনের উৎপাদন বেড়ে ৩০–৩৫ লাইনে দাঁড়াবে। এসব অর্ডার মূলত চীন ও ভিয়েতনাম থেকে সরিয়ে আনা হচ্ছে। এই বাড়তি কাজ করতে আড়াই লাখ ডলার বিনিয়োগ লাগবে এবং চলতি অর্থবছরে রপ্তানি ৩৫ কোটি ডলার ছাড়ানোর আশা করছেন তিনি।
স্প্যারো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি শোভন ইসলাম জানান, ভারত ও ভিয়েতনাম থেকে অর্ডার সরিয়ে আনতে মার্কিন ক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। বসন্তে ৫–১০ শতাংশ এবং গ্রীষ্মে ১০–১৫ শতাংশ বেশি অর্ডার পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই সুযোগ কাজে লাগাতে সরকারি সহায়তা দরকার।
বিনিয়োগের দিক থেকেও ইতিবাচক সাড়া মিলছে। চীনা প্রতিষ্ঠান হান্ডা (বাংলাদেশ) গার্মেন্টস ও খাইশি গ্রুপ চট্টগ্রামের মিরসরাই বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় আট কোটি ডলারের বিনিয়োগে পোশাক কারখানা স্থাপন করবে। আগস্ট ২০২৪ থেকে মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত ৩৪টি চীনা বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছে বেপজা যার মধ্যে আটটি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই চুক্তি করেছে।
বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, চীনা বিনিয়োগ আসা ইতিবাচক কারণ তারা বিনিয়োগের পাশাপাশি ক্রেতাও আনবে। প্রতিযোগী দেশের তুলনায় কম শুল্কে বাংলাদেশ সুবিধাজনক অবস্থানে থাকলেও বাড়তি অর্ডার সামলাতে ব্যাংক, গ্যাস-বিদ্যুৎ ও কাস্টমসের সহযোগিতা জরুরি।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বস্ত্র খাতের ১৩ কোম্পানি
- মার্জিন ঋণে মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে বিনিয়োগ করা যাবে না
- শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৭ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- ১২ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৯ খবর
- মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব: ফের অস্থির শেয়ারবাজার
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- দুই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- সামিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কিনছে আরব আমিরাতের কোম্পানি
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
- রবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের মুখে গ্রামীণফোন
- বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের নতুন কমিটির অভিষেক শনিবার
- টানা পতনেও শেয়ারবাজারে পুনরুজ্জীবনের সংকেত
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা