ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২
বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন: রাজনৈতিক অঙ্গীকার ছাড়া কি সম্ভব?

বাংলাদেশ ব্যাংকে (বিবি) পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে তারা বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতায় আসার পর যদি এসব সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ না হয়, তাহলে এই পরিবর্তনগুলো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্ষদ সভায় ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধনের খসড়া অনুমোদন করা হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডিন্যান্স (সংশোধন) ২০২৫-এর খসড়াটি আরও আলোচনার জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সুপারিশ অনুযায়ী প্রণীত খসড়া অর্ডিন্যান্সে বৈশ্বিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ব্যাপক সুশাসনমূলক সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। এর প্রধান কিছু দিক হলো, গভর্নরের পদকে মন্ত্রীর সমতুল্য করা, একটি ছয় সদস্যের সার্চ কমিটির মাধ্যমে গভর্নর নিয়োগ এবং পর্ষদে কোনো কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা না থাকা।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, সরকার রাজনৈতিক প্রভাব সীমিত করার চেষ্টা করলেও, রাজনীতিকরা চাইলেই এই সংস্কারকে বাধাগ্রস্ত করতে পারেন। তাই এই সংস্কারকে "স্বার্থপরতার বাইরে গিয়ে" বিবেচনা করার জন্য রাজনীতিকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, "তাদের বুঝতে হবে যে বাংলাদেশ ব্যাংক যদি স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে তা দেশের অর্থনীতি এবং রাজনীতির জন্যও ভালো হবে।"
সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম)-এর নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বাধীনতার দাবি অনেক পুরোনো, কিন্তু শুধু আইন দিয়ে তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করতে রাজনৈতিক অঙ্গীকার জরুরি এবং ভবিষ্যৎ সংসদকে এই অর্ডিন্যান্সের অনুমোদন দিতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সংবাদ মাধ্যমকে বলেছেন, তিনি নীতিগতভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসনের পক্ষে, তবে তা "যোগ্যতা, সততা ও দক্ষতার" মাধ্যমে অর্জন করতে হবে। তিনি প্রশ্ন তোলেন, "যদি আপনি যোগ্য না হয়ে চেয়ারে বসে থাকেন, তাহলে স্বায়ত্তশাসন দিয়ে কী লাভ?" তিনি বলেন, "পৃথিবীর কোনো দেশেই পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন নেই।"
সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কথা বলেছে এবং দলগুলো এই সংস্কারকে সমর্থন ও চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। আইএমএফ-এর ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত খসড়াটি সেপ্টেম্বরের মধ্যে উপদেষ্টা কমিটি দ্বারা অনুমোদিত হতে হবে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে এটি অধ্যাদেশ হিসেবে জারি করতে হবে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বস্ত্র খাতের ১৩ কোম্পানি
- মার্জিন ঋণে মিউচুয়াল ফান্ড ও বন্ডে বিনিয়োগ করা যাবে না
- শেয়ারবাজারের ৬ ব্যাংকের রেকর্ড মুনাফা, ৫ ব্যাংকের লোকসান
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৭ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- ১২ আগস্ট : শেয়ারবাজারের সেরা ৯ খবর
- মার্জিন ঋণ নিয়ে গুজব: ফের অস্থির শেয়ারবাজার
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- দুই কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- সামিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র কিনছে আরব আমিরাতের কোম্পানি
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
- রবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের মুখে গ্রামীণফোন
- টানা পতনেও শেয়ারবাজারে পুনরুজ্জীবনের সংকেত
- বেসরকারি হাসপাতাল মালিকদের নতুন কমিটির অভিষেক শনিবার
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা