ঢাকা, রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২

এবার আ.লীগকে বিপদে ফেললেন নরেন্দ্র মোদি

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুলাই ২৭ ১৮:৫৭:৪৫
এবার আ.লীগকে বিপদে ফেললেন নরেন্দ্র মোদি

বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা হারানোর পর ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের কিছু শীর্ষ নেতার তৎপরতা এবার প্রতিবেশী দেশেই প্রতিবন্ধকতার মুখে পড়েছে। ভারতের রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার ফলে দিল্লিতে আয়োজিত হতে যাওয়া একটি সংবাদ সম্মেলন শেষ মুহূর্তে বাতিল করতে বাধ্য হয়েছে দলটি।

বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লির একটি অভিজাত হোটেলে ‘বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (BHRW)’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে সম্মেলনটি আয়োজনের কথা ছিল। এতে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ও নেতারা “বাংলাদেশে গণহত্যা” এবং “গোপালগঞ্জে সামরিক সহিংসতা” নিয়ে বক্তব্য দেওয়ার কথা ছিল। সংগঠনটির নেতৃত্বে আছেন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী।

তবে সম্মেলন শুরুর ঠিক আগে ঢাকায় একটি বিমান দুর্ঘটনার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আয়োজকরা অনুষ্ঠানটি স্থগিত করার ঘোষণা দেন। তবে কূটনৈতিক সূত্র জানায়, এই সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরাসরি হস্তক্ষেপ।

কূটনৈতিক চাপ ও মোদির পদক্ষেপ

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শেখ হাসিনার রাজনৈতিক তৎপরতা নিয়ে ভারতের উদ্বেগ জানায়। সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ব্যক্তিগতভাবে নরেন্দ্র মোদিকে সতর্ক করে জানান, এমন কার্যক্রম দুই দেশের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। সূত্র অনুযায়ী বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে মোদি এই সম্মেলন বাতিলের নির্দেশ দেন।

ভারতীয় সমাজ ও রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়া

এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। বহু নাগরিক প্রশ্ন তোলেন, ‘বাংলাদেশে সহস্রাধিক মানুষ হত্যার দায়ে অভিযুক্ত নেতাদের’ কেন ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন এবং মন্তব্য করেন “এটা ভারতের নৈতিক অবস্থানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।”

ব্যর্থতা ও রাজনৈতিক বার্তা

ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যমতে, আওয়ামী লীগের কয়েকজন শীর্ষ নেতা গোপনে দিল্লিতে অবস্থান নেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক ঘাঁটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে। কিন্তু ভারত সরকারের কঠোর নজরদারির কারণে তাদের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়নি।

দিল্লিভিত্তিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিজেপি সরকার এখন শেখ হাসিনাকে ‘কূটনৈতিক বোঝা’ হিসেবে দেখছে এবং ভারতের মাটি ব্যবহার করে প্রতিবেশী দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। এ সম্মেলনের বাতিল হওয়া মূলত আওয়ামী লীগের জন্য একটি কড়া বার্তা যে তারা এখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ক্রমেই একঘরে হয়ে পড়ছে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত