ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

জিয়া পরিবারের ছায়াসঙ্গী সেই শিক্ষিকার হৃদয়স্পর্শী বিদায়

২০২৫ জুলাই ২২ ১৫:২০:১৬

জিয়া পরিবারের ছায়াসঙ্গী সেই শিক্ষিকার হৃদয়স্পর্শী বিদায়

নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়ার কৃতি মেয়ে মাহরিন চৌধুরী ছিলেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একজন দায়িত্বশীল ও আদর্শবান শিক্ষিকা। রাজধানীর উত্তরায় বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার সময় শিক্ষার্থীদের রক্ষা করতে গিয়ে দগ্ধ হন তিনি। শেষ পর্যন্ত চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এই সাহসিনী।

শুধু একজন শিক্ষিকা নন, মাহরিন চৌধুরী ছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারের ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত ছায়াসঙ্গীও। তাঁর এই বীরত্বপূর্ণ ত্যাগ আজ গভীর শোক ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছে পুরো জাতি।

তার স্বামী মনসুর হেলাল জানান, ভোরেই মাহরিন চৌধুরীর মরদেহ ঢাকা থেকে নেওয়া হয়েছে। নিজ গ্রাম জলঢাকার বোগলাগাড়ী চৌধুরী পাড়ার পারিবারিক কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।

শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার সম্পর্কে নানা তথ্য উঠে আসছে। স্বজনদের ভাষ্যে জানা যায়, তিনি কখনোই তার রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ করতেন না। অথচ বিএনপি চেয়ারপারসনের অসুস্থতার সময় যখন অনেক নেতা গ্রেপ্তার এড়াতে দূরে থাকতেন, তখন মাহরিন চৌধুরী সাহসিকতার সঙ্গে খাবার নিয়ে হাজির হতেন হাসপাতাল কিংবা কারাগারে।

বহির্বিশ্বে তিনি পরিচিত ছিলেন একজন নিষ্ঠাবান শিক্ষিকা হিসেবে। কিন্তু আড়ালে তিনি ছিলেন প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদরের ভাতিজি—তার মামাতো ভাই এম আর চৌধুরীর কন্যা। জিয়ার মৃত্যুর পর এই চৌধুরী পরিবারকেই আগলে রেখেছিলেন তার ভাই মহিদুর রহমান।

স্বজনদের ভাষ্যে, মাহরিন প্রচারবিমুখ মানুষ ছিলেন। কোনো মিডিয়া কাভারেজ বা বাহবায় আগ্রহ ছিল না তার। তিনি কাজ করতেন নিঃশব্দে, নিঃস্বার্থভাবে।

সোমবার (২১ জুলাই) রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হলে ভবনের ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে ছুটে যান সাহসী শিক্ষিকা মাহরিন চৌধুরী। তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ২০ জন শিক্ষার্থীকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে সক্ষম হলেও নিজে আর বের হতে পারেননি।

ঘটনাস্থলেই আগুনে তার শরীরের একটি অংশ দগ্ধ হয়। দ্রুত তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় ওই রাতেই সাড়ে সাতটার দিকে মাহরিন চৌধুরী মৃত্যুবরণ করেন।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত