ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০ ভাদ্র ১৪৩২

ফ্যাসিস্টরা ভাবেনি তাদেরও ক্ষমতা ছাড়তে হবে : শিক্ষা উপদেষ্টা

২০২৫ জুলাই ২১ ১৪:২৬:৫৯

ফ্যাসিস্টরা ভাবেনি তাদেরও ক্ষমতা ছাড়তে হবে : শিক্ষা উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) বলেছেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার কখনো ভাবেনি ক্ষমতার মসনদ থেকে তাদের নামতে হবে। তারা যেভাবে জেঁকে বসেছিলো আমরা একপ্রকার ভেবেই নিয়েছিলাম আমাদের জীবন বোধহয় অধিকার বিবর্জিত প্রজা হিসেবেই শেষ হবে।

সোমবার (২১ জুলাই) সকাল সাড়ে দশটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ডাকসু মিলনায়তনে আয়োজিত জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা উদ্বোধন ও আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন তিনি।

ঢাবির ডাকসু ভবনের দোতলায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের নিত্য ব্যবহার্য সামগ্রী দিয়ে জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা গঠন করা হয়েছে। সেখানে মীর মুগ্ধের শহিদ হওয়ার সময়কার কাঁধের ব্যাগ, শহীদ ওয়াসিম আকরামের রক্তমাখা শার্ট, শহীদ আবু সাঈদের হাতে থাকা সেই লাঠিসহ গণঅভ্যুত্থানের নানা স্মৃতি বিজড়িত জিনিস ঠাঁই পেয়েছে।

সি আর আবরার বলেন, আমাদের তরুণরা যে আত্মবলিদান করেছে তারা সকলেই ছিলো প্রস্ফুটিত ফুল। তাদের কে ঘিরে বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিলো। ভাই-বোন স্বজনদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিলো। যে ফুল তারা প্রস্ফুটিত হতে দেখেছে তা শেষ পর্যন্ত পত্র পল্লব বিস্তৃত করে কিভাবে আরো বেড়ে উঠে তা দেখার অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলো। কিন্তু সমস্ত কিছু বাদ দিয়ে অকালেই তা ঝরে গেলো।

শহীদ পরিবারকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের যে ক্ষতি হয়েছে তো হয়েছেই যে শোক আপনারা ধারণ করছেন সেটা আমরা কোনোরকমেই মেলাতে পারবো না। তবে এটুকু জেনে আপনারা হয়তো কিছুটা স্বান্তনা পাবেন—তাদের যে স্বপ্ন সেগুলোকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে পৌঁছে দেওয়ার সৈনিকদের অনুপ্রাণিত করে গেছে। সেটা তারা জেনেশুনেই দেশমাতৃকার জন্য আত্মবলিদান করে গেছে।

তিনি আরও বলেন, যে জীবন আরো লম্বা হতে পারতো, প্রলম্বিত হতে পারতো—তাদের প্রলম্বিত জীবন কখনোই কাঙ্খিত ছিলো না। তারা দামী একটা জীবন প্রত্যাশা করেছিলো। যারা শহীদ হয়েছেন তারা এদেশের সূর্য সন্তান হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে।

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেন, আমাদের জন্য এ অনুষ্ঠানটি ঋণ স্বীকারের উপলক্ষ্য মাত্র। আপনাদের সহযোগিতায় এটি (সংগ্রহশালা) হবে সর্বজনতার সম্পদ, জাতীয় সম্পদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধুমাত্র এটির দেখাশোনা করবে মাত্র।

অনুষ্ঠানে শহীদ ফারহান ফাইয়াজের পিতা শহিদুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, আমার ছেলের সরকারি চাকরি করার ইচ্ছা তার কখনোই ছিলো না। বরং সে চাইতো ইন্টারমিডিয়েট কোয়ালিফাই করার পর উচ্চ শক্ষার জন্য বিদেশে পাড়ি জমাবে। একটা বুলেট আমার বাপজানকে নিথর করে দিলো।

শহীদ মীর মুগ্ধের পিতা মীর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সুখে-দুঃখে মানুষের পাশে দাঁড়ানো ছিলো মুগ্ধের স্বভাব। আমার ছেলে পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেই প্রতি মাসে প্রায় এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা রোজগার করতো। সে নিজের জন্য নয় ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্বৈরাচারের রোষানলে থেকে বাঁচাতে ,দেশ ও জাতির প্রকৃত মুক্তি নিশ্চিত করার জন্যে জীবন উৎস্বর্গ করে গেছে।

ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ, ওয়াসিম আকরামের পিতা শফি আলম প্রমুখ।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত

টাকার বিনিময়ে আজকের বৈদেশিক মুদ্রার রেট

টাকার বিনিময়ে আজকের বৈদেশিক মুদ্রার রেট

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য দিন দিন সম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনও বাড়ছে। ব্যবসায়, আমদানি-রপ্তানি এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের কার্যক্রম... বিস্তারিত