ঢাকা, সোমবার, ১৮ আগস্ট ২০২৫, ২ ভাদ্র ১৪৩২

১ বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পাহাড়

ডুয়া নিউজ- অর্থনীতি
২০২৫ জুন ১৯ ২০:৫৮:৩৭
১ বছরের ব্যবধানে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকার পাহাড়

মাত্র এক বছরের ব্যবধানে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশি ব্যক্তি ও ব্যাংকের আমানত অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) সদ্য প্রকাশিত বার্ষিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যেখানে বাংলাদেশি আমানতের পরিমাণ ছিল ১৮ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ। ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৮৯.৫৪ মিলিয়ন ফ্রাঁ। টাকার অঙ্কে যা প্রায় ৮ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা।

বিশেষ করে ব্যাংক পর্যায়ের আমানত ২০২৩ সালের মাত্র ৩.৪৮ মিলিয়ন ফ্রাঁ থেকে ৫৭৬.৬১ মিলিয়নে গিয়ে পৌঁছেছে যা ১৬৫ গুণেরও বেশি বৃদ্ধি। যদিও ব্যক্তি পর্যায়ের আমানত কিছুটা কমে ১২.৬২ মিলিয়নে নেমে এসেছে। আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস।

এই অঙ্কটি ১৯৯৬ সালের পর থেকে পঞ্চম সর্বোচ্চ এবং গত পাঁচ বছরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। সর্বোচ্চ আমানত ছিল ২০২১ সালে—৮৭১.১ মিলিয়ন ফ্রাঁ।

হঠাৎ এই উল্লম্ফনের কারণ কী?বিশ্লেষকদের মতে, দেশের চলমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ডলার সংকট এবং বিদেশে অর্থ স্থানান্তরের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অনেকে সুইস ব্যাংকে অর্থ রাখছেন। ব্যাংক পর্যায়ে আমানতের এই হঠাৎ উল্লম্ফন বৈদেশিক বিনিয়োগ বা অর্থ পাচারের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেও মত দিয়েছেন তারা।

তবে এসএনবির তথ্য কেবল আমানতের পরিমাণ জানালেও সেই অর্থ বৈধ না অবৈধ—তা নির্দিষ্ট করে না।

আন্তর্জাতিক তথ্য বিনিময়ে বাংলাদেশের অনাগ্রহঅর্থ পাচার ও কর ফাঁকি ঠেকাতে ২০১৮ সালে চালু হয় অটোমেটিক এক্সচেঞ্জ অব ইনফরমেশন (AEOI)। ২০২৪ সালে সুইস ট্যাক্স প্রশাসন ১০৮টি দেশের সঙ্গে প্রায় ৩.৭ মিলিয়ন ব্যাংক হিসাবের তথ্য বিনিময় করেছে।

কিন্তু ওইসিডির ২০২৫ সালের মার্চের তথ্য বলছে, বাংলাদেশ এখনো এই প্ল্যাটফর্মে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দেয়নি। ভারত ও পাকিস্তান এরই মধ্যে সক্রিয়ভাবে যুক্ত।

এক অর্থনীতিবিদ জানান, এই উদ্যোগে যুক্ত না হওয়ায় বাংলাদেশের নাগরিকদের অর্থ লুকিয়ে রাখার ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করলে বিদেশি তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

মাত্র একজনের তথ্য দিয়েছে সুইজারল্যান্ড২০২২ সালে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএআইইউ) সুইস কর্তৃপক্ষের কাছে সন্দেহভাজন ৬৭ ব্যক্তির ব্যাংক তথ্য চায়। কিন্তু তথ্য এসেছে কেবল একজনের ক্ষেত্রেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী আইনগত কাঠামো দুর্বল থাকায় সুইস ব্যাংকগুলো বাংলাদেশের অনুরোধ মানতে বাধ্য নয়। বাংলাদেশ যদি তথ্য চায় তবে আগে নিজেকেই স্বচ্ছতার আওতায় আনতে হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত