ঢাকা, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশের রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ জুন ০৬ ১০:০০:৪২
দেশের রিজার্ভ ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

বাংলাদেশ ব্যাংকের সব শেষ তথ্য অনুযায়ী ৪ জুন পর্যন্ত দেশে বৈদেশিক মুদ্রার মোট রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে ২০ দশমিক ৭৭ বিলিয়ন ডলারে। তবে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভের পরিমান ১৬ বিলিয়নের ঘরে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এসব তথ‌্য জানিয়েছেন।

মুখপাত্র জানান,বৈদেশিক লেনদেনে চাপও কমেছে রিজার্ভ বৃদ্ধি পাওয়ায় । বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পরও ডলারের দাম ১২৩ টাকার মধ্যে স্থিতিশীল রয়েছে। একই সঙ্গে, এখন অনেক ব্যাংক গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী ঋণপত্র খুলা যাচ্ছে, যার ফলে পণ্যের সরবরাহ ও দাম স্বাভাবিক অবস্থায় রয়েছে।

এর আগে গত ৬ মে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু) মার্চ ও এপ্রিল মাসের আমদানি বিল পরিশোধের পর মোট রিজার্ভ কমে নেমে এসেছিল ২৫ বিলিয়ন ডলারে। বিপিএম-৬ মানদণ্ড অনুযায়ী প্রকৃত রিজার্ভ তখন ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার। এরও আগে ৪ মে মোট রিজার্ভ ছিল ২৭ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন এবং প্রকৃত রিজার্ভ ছিল ২১ দশমিক ৯৭ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশের রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় কয়েকটি ভিন্ন হিসাব রয়েছে। যেমন, মোট রিজার্ভ থেকে স্বল্পমেয়াদি দায় বাদ দিলে নিট বা প্রকৃত রিজার্ভ পাওয়া যায়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেকটি হিসাব ‘ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ’, যা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় না। এখানে আকু বিল, আইএমএফ-এর এসডিআর ও ব্যাংকগুলোর ক্লিয়ারিং হিসাব বাদ দিয়ে হিসাব করা হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, বর্তমানে এই ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ ১৬ বিলিয়ন ডলারের মতো। যা দিয়ে দেশের তিন মাসের বেশি আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব।

দেশের ইতিহাসে ২০২২ সালের আগস্টে সর্বোচ্চ ৪৮ দশমিক ০৬ বিলিয়ন ডলারে উঠেছিল রিজার্ভ। এরপর তা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সরকার পরিবর্তনের আগে ২০২৩ সালের জুলাই শেষে রিজার্ভ নেমে এসেছিল ২০ দশমিক ৩৯ বিলিয়নে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রিজার্ভ থেকে আর ডলার বিক্রি করা হচ্ছে না। বাজার ব্যবস্থাপনায় বিগত সরকারের রেখে যাওয়া ৩৭০ কোটি ডলারের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে। একইসঙ্গে নতুন কোনো বকেয়া জমতে দেওয়া হচ্ছে না।

ঈদ সামনে রেখে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। চলতি জুন মাসের প্রথম তিন দিনেই প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৬০ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা স্থানীয় মুদ্রায় ৭ হাজার ৪২৯ কোটি টাকার বেশি। গেল মে মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯৭ কোটি ডলার দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাসিক রেমিট্যান্স। তার আগে মার্চ মাসে ৩২৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল, যা একক মাসে দেশের সর্বোচ্চ রেকর্ড।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে চলতি জুন মাসের ৩ তারিখ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৮১১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ বেশি। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানায়, অর্থপাচার ঠেকাতে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ফলে হুন্ডি কমে বৈধপথে রেমিট্যান্স বেড়েছে।

একইসঙ্গে পণ্য রপ্তানিতেও প্রবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, গেল মে মাসে ৪৭৩ কোটি ৭৮ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে মোট রপ্তানি আয় দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৫ কোটি ডলারে, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত