ঢাকা, শনিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২২ ভাদ্র ১৪৩২
শেয়ারবাজারে রেকর্ড নিম্ন পিই অনুপাত: ঘুরে দাঁড়ানোর সময় কি এখনই?

দেশের শেয়ারবাজারে শেয়ারের দাম বর্তমানে ইতিহাসের অন্যতম নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে: এখনই কি বিনিয়োগের সেরা সময়, নাকি আরও কিছু সময় অপেক্ষা করা নিরাপদ?
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, বাজারের গড় মূল্য-আয় (পিই) অনুপাত নেমে এসেছে ৮.৮৩ পয়েন্টে—যা গত এক দশকে সর্বনিম্ন। এই নিম্ন পিই অনুপাত বাজারে শেয়ারগুলোর অবমূল্যায়নের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা অনেক বিশ্লেষকের দৃষ্টিতে বিনিয়োগের জন্য অনুকূল সময় হতে পারে।
পিই অনুপাত কী বলছে বাজার সম্পর্কে?
পিই অনুপাত একটি কোম্পানির শেয়ারের বর্তমান বাজারমূল্যকে তার প্রতি শেয়ারে আয়ের (ইপিএস) অনুপাতে প্রকাশ করে। সাধারণত একটি গড় পিই অনুপাত ১৪–১৫ ধরা হয় স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল বাজারের জন্য। এর নিচে পিই নামলে সেটি বাজারের অবমূল্যায়নের (undervaluation) ইঙ্গিত দেয়। অর্থাৎ শেয়ারগুলো তাদের প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কম দামে লেনদেন হচ্ছে।
বর্তমানে ডিএসইর পিই অনুপাত ৮.৮৩ হওয়া মানে হলো—বিনিয়োগকারীরা এখন একটি শেয়ারের আয়ের বিপরীতে পূর্বের তুলনায় অনেক কম দাম দিচ্ছেন। ব্রোকারহাউস ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, এটি দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক প্রবেশপথ হতে পারে।
বাজার এখনও চাঙ্গা নয়, কারণ কী?
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ৮.৮৩ এর মতো পিই রেশিও ইতিহাসে একেবারে নিচের দিকে। এতে প্রমাণিত, বাজার বর্তমানে গুরুতর অবমূল্যায়নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তারল্য সংকট ও বিনিয়োগকারীদের আস্থার অভাবে বাজার ধারাবাহিকভাবে মন্দার কবলে রয়েছে। তবে সাম্প্রতিককালে নীতি নির্ধারক ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার ইতিবাচক ভূমিকার কারণে বাজারে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়ার ক্ষেত্র তৈরি হতে শুরু করেছে এবং তারল্য প্রবাহ বৃদ্ধির উৎসও বড় হতে শুরু করেছে।
রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সংস্কারের সুযোগ
ডিএসই চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম সম্প্রতি বলেছেন, “শেয়ারবাজারে সংস্কারমূলক পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে আগামী জুনের মধ্যে বাজারে দৃশ্যমান উন্নতি আশা করছি।”
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার মতো সংস্কার পরবর্তী বাজারে উল্লম্ফনের সুযোগ বাংলাদেশেও তৈরি হতে পারে, যেখানে সংস্কারমূলক পদক্ষেপের পর বাজার দ্রুত গতিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল।
সব মিলিয়ে বলা যায়, বর্তমানে দেশের শেয়ারবাজার একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। বাজারের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সংস্কারমূলক নানা পদক্ষেপ, স্বল্প পিই অনুপাত এবং সামষ্টিক অর্থনীতির ইতিবাচক নানা দিক শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের একটি সম্ভাবনাময় চিত্র তুলে ধরছে। এখন দেখার বিষয়, সরকারের সংস্কারমূলক পদক্ষেপ এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা কত দ্রুত বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ১১ কোম্পানিতে
- কোম্পানি পুরোদমে উৎপাদনে, তারপরও শঙ্কায় বিনিয়োগকারীরা!
- পাকিস্তান বনাম সংযুক্ত আরব আমিরাত সাম্প্রতিক ম্যাচের পরিসংখ্যান
- বিও অ্যাকাউন্টের ফি নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সুখবর দিল বিএসইসি
- মার্জারের সাফল্যে উজ্জ্বল ফার কেমিক্যাল
- এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় ৫ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে মিডল্যান্ড ব্যাংকের নতুন যাত্রা
- তদন্তের খবরে থামছে দুই কোম্পানির ঘোড়দৌড়
- আট কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কাড়াকাড়ি
- নতুন উচ্চতায় অগ্রসর হচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার
- সর্বনিম্ন দামে আটকে গেল ৭ কোম্পানির শেয়ার
- ডেনিম উৎপাদন বাড়াতে এভিন্স টেক্সটাইলসের বড় পরিকল্পনা
- শেয়ারবাজারে দ্রুত মুনাফা তোলার ৫টি ট্রেডিং টিপস
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কার পথে এগোচ্ছে বাংলাদেশের শেয়ারবাজার