ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২
পালানো আ.লীগ নেতাদের ভারত ছাড়ার হিড়িক

ডুয়া ডেস্ক: গণহত্যা, দমন-পীড়ন, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো গুরুতর অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া বহু আওয়ামী লীগ নেতা এখন চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। ভারতের অভ্যন্তরে বসবাসকারী অবৈধ বিদেশিদের বিরুদ্ধে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। বিশেষ করে চলতি বছরের আগস্ট থেকে এ বিষয়ে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা রয়েছে। ফলে ভারতে অবস্থানকারী এসব নেতা এখন গ্রেফতার ও পুশব্যাকের আশঙ্কায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও অভিবাসন নীতিতে সম্প্রতি পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার ফলে অবৈধ অভিবাসীদের শনাক্ত করে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর আওতায় রাজনৈতিক পরিচয় কিংবা প্রভাব খাটিয়েও নিরাপদে থাকা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। ফলে দেশটির বিভিন্ন প্রদেশে ছড়িয়ে থাকা আওয়ামী লীগপন্থি নেতাদের মধ্যে শুরু হয়েছে দেশ ছাড়ার হিড়িক।
জানা গেছে, ইতোমধ্যে অন্তত ৫০ জনের বেশি নেতা ইউরোপ, কানাডা এবং যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশে পাড়ি জমিয়েছেন। বাকিরাও বিভিন্ন মাধ্যমে এসব দেশে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ভিসা সংগ্রহ, রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন, ফ্যামিলি রিইউনিয়ন কিংবা মানবিক কারণে ভিন্ন দেশে আশ্রয়ের পথ খুঁজছেন তারা।
এই অবস্থার মধ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা দিল্লিতে অবস্থানরত দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দিয়েছেন। দলীয় সূত্র বলছে, তিনি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন—ভারতে যেসব নেতা অবস্থান করছেন, তাদের আগামী দুই মাসের মধ্যে স্বেচ্ছায় দেশে ফিরে আসতে হবে। তা না হলে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের আটক করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ‘দলীয় পরিচয়ে কেউ দায় এড়িয়ে যেতে পারবে না। যাদের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ রয়েছে, তাদের বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে।’
সরকার ইতোমধ্যেই এসব পলাতকদের ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়িয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে একটি তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে, যেখানে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থাকা অভিযোগ, প্রমাণ এবং অবস্থান বিস্তারিতভাবে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এই তালিকার ভিত্তিতে ইন্টারপোল সহযোগিতায় রেড নোটিশ জারি করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই পদক্ষেপ কেবল দলীয় শুদ্ধি অভিযানের অংশ নয়, বরং আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি রক্ষার একটি উদ্যোগ হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক আশ্রয়ের নামে বিদেশে পালিয়ে থাকা অপরাধীদের বিরুদ্ধে সরকারের এমন অবস্থান দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষকদের কাছে ইতিবাচক বার্তা দিতে পারে।
তবে অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এতদিন কেন এইসব অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? কীভাবে তারা এত সহজে ভারতে প্রবেশ করে বছরের পর বছর নিরাপদে বসবাস করেছেন? এ বিষয়ে সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, নানা কূটনৈতিক সীমাবদ্ধতা ও রাজনৈতিক সমঝোতার কারণে আগে তৎপরতা চালানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকার আর কোনো ছাড় দিতে নারাজ।
সব মিলিয়ে, ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের জন্য সময় যেন ফুরিয়ে এসেছে। শেখ হাসিনার কড়া অবস্থান এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে ফেরত আনার উদ্যোগ নতুন এক রাজনৈতিক বাস্তবতার জন্ম দিতে যাচ্ছে বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- চলতি সপ্তাহে বেক্সিমকোর ফ্লোর প্রাইস ওঠার সম্ভাবনা
- স্বল্প মূল্যে কম্পিউটার স্কিল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তির সুযোগ, আসন সীমিত
- শেয়ারবাজারে তানিয়া শারমিন ও মাহবুব মজুমদার ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ
- শেয়ারবাজারের ৩ প্রতিষ্ঠানের ২৯৬ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং
- শেয়ারের অস্বাভাবিক দামের জন্য ডিএসইর সতর্কবার্তা
- শিক্ষার্থীদের আলোকিত ভবিষ্যত গড়তে পাশে থাকবে ঢাবি অ্যালামনাই
- ১০ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তার
- ইপিএস ঘোষণার তারিখ জানাল দুই কোম্পানি
- জুলাই স্মৃতি জাদুঘর: টেন্ডার ছাড়াই ১১১ কোটি টাকার কাজ পেল দুই প্রতিষ্ঠান
- ঢাবি অ্যালামনাই ও নিউ হরাইজন কানাডিয়ান স্কুলের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
- ঢাবির ২০১৮-১৯ সেশনের অছাত্ররা হতে পারবেন না ভোটার-প্রার্থী
- ১৬ জুলাই সরকারি ছুটি কি-না? যা জানা যাচ্ছে
- শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে ডিএসইর সতর্কতা
- ঢাবির জিয়া হলে ‘ক্যারিয়ার টক’ অনুষ্ঠিত
- ডিভিডেন্ড পেয়েছে চার কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা