জড়িতদের ছাড় নেই, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকাও তদন্ত হবে

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশে নারকীয় হামলার ঘটনায় জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা, অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল এবং অ্যাডভোকেট সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তারা আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো দায়িত্বহীনতা ছিল কিনা, তা তদন্ত করে দেখা হবে এবং প্রমাণ মিললে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে রংপুর থেকে ঢাকা ফেরার পথে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও এনসিপির স্থানীয় নেতাকর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তারা এই সুস্পষ্ট আশ্বাস দেন।

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “প্রথমত, এই হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং অবশ্যই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তিনি জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ইতোমধ্যে এ ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে কঠোর নির্দেশ দিয়েছেন। রিজওয়ানা হাসান জোর দিয়ে বলেন, “শুধু এনসিপি নয়, যেকোনো দলের ওপর যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।”

সার্বিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বড় একটি গণঅভ্যুত্থানের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যতটা অবনতি হওয়ার আশঙ্কা ছিল, তা হয়নি। সারাদেশে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে।” তিনি গোপালগঞ্জের ঘটনাকে একটি বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “আসলে আওয়ামী লীগ এখনও প্রশাসনের সর্বস্তরে রয়ে গেছে। গোপালগঞ্জে সন্ত্রাসীরা ঘাঁটি গেড়েছে। তাদের কর্মকাণ্ড স্থগিত করা হয়েছে, বিচার কার্যক্রমও শুরু হয়েছে। দ্রুতই আমরা বিচার সম্পন্ন হতে দেখতে পারব।”

একই বিষয়ে উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “আওয়ামী লীগ দেশকে একটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত করে গেছে। সেখান থেকে নতুন করে গড়ার কাজ করছি আমরা।” তিনি প্রশাসনে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে বলেন, “প্রশাসনের সব ক্ষেত্রে তাদের লোক। তাই বেগ পেতে হচ্ছে। পুলিশকে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা চলছে। সে পর্যন্ত গোপালগঞ্জের মতো ঘটনার মোকাবিলা করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “আজ এনসিপির সাথে যা করা হয়েছে, তা নতুন বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে চরম প্রতিবন্ধকতা। পুলিশসহ যাদেরই এর সাথে সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।”

জুলাই সনদ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “জুলাই সনদ আমাদেরই বেশি প্রয়োজন। কারণ আমরা থাকব না। এটা মূলত রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর নির্ভর করছে। সনদের অনেকগুলো বিষয় আছে। এ ব্যাপারে দলগুলোকে ডেকে মতামত নেওয়া হয়েছে। সবার খসড়া একত্রে নিয়ে আমরা একটি খসড়া তৈরি করার চেষ্টা করছি। যত দ্রুত সম্ভব এটা করা হবে।”