ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২
শেয়ারবাজারে পতন: কোথায় গিয়ে থামবে বিনিয়োগকারীদের রক্তরক্ষণ?

ডুয়া নিউজ: দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে পতনের ধারা অব্যাহত রয়েছে। বিনিয়োগকারীরা প্রত্যাশার বিপরীতে প্রতিদিনই নতুন হতাশার মুখোমুখি হচ্ছেন। বৃহস্পতিবার ১৫ মে (বৃহস্পতিবার) ডিএসইর প্রধান সূচক নেমে এসেছে সাড়ে ৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ৪ হাজার ৭৮১ পয়েন্টে, যা বাজারের সংকটময় অবস্থাকে আরও স্পষ্ট করেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা এখন মূলত নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নেতৃত্ব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন। তাদের মতে, বিএসইসির বর্তমান চেয়ারম্যানের অভিজ্ঞতার অভাব শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা পালনে বাধা সৃষ্টি করছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নিয়ন্ত্রণকারী ‘মাকসুদ কমিশন’ বাজারের বাস্তব চাহিদার বিপরীত কার্যক্রম গ্রহণ করছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করছে।
বর্তমানে শেয়ারবাজারে নতুন অর্থ প্রবাহ আনতে এবং নতুন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না। এর ফলে বাজারে বিনিয়োগের উৎস সংকুচিত হচ্ছে এবং বাজারে স্থায়িত্ব ফেরাতে অক্ষমতা প্রকাশ পাচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার অভাব এবং নিয়ন্ত্রকের দুর্বল ভূমিকা একত্রে বাজারের অবনতির ধারাকে ত্বরান্বিত করছে।
অর্থনীতিবিদ ও বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, শুধু নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠানের অভিজ্ঞতার ঘাটতি নয়, বাজার পরিচালনার কৌশলও সমসাময়িক বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে ব্যর্থ। তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে এবং বাজারে যথাযথ তথ্য প্রবাহ বজায় রাখতে যথেষ্ট মনোযোগ দেয়া হচ্ছে না। এর ফলে বাজারের বুনিয়াদি ভিত্তিই দুর্বল হচ্ছে।
সাথে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের অনুপস্থিতি, আইসিবির আর্থিক সংকট ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের নির্লিপ্ততা। এসব কারণেই বাজারে পুঁজি সংকোচনের প্রবণতা বাড়ছে। বিশেষ করে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। তাদেরকে প্রতিদিনই সর্বশান্ত হয়ে বাজার থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে।
বিশ্লেষকরা পরামর্শ দিচ্ছেন, বাজারে নতুন অর্থ ঢুকাতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে আরো সক্রিয় ও অভিজ্ঞ নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে। বাজারের স্বচ্ছতা বাড়াতে তথ্য প্রকাশে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে এবং বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। পাশাপাশি নতুন বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে উৎসাহব্যঞ্জক নীতি গ্রহণ এখন সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।
বর্তমানে শেয়ারবাজারের অবস্থা শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সংকট নয়, এটি সামাজিক প্রভাবও বিস্তার করছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের পুঁজি সংকট তাদের আর্থিক নিরাপত্তায় বড় ধরনের ঝুঁকি তৈরি করছে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বাজার নিয়ন্ত্রকদের দৃঢ় পদক্ষেপ এবং অভিজ্ঞ নেতৃত্ব অপরিহার্য।
বাজারে এই মন্দা কোথায় শেষ হবে, তা এখনো অনিশ্চিত। তবে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং বাজারে নতুন অর্থ প্রবাহ নিশ্চিত করাই দীর্ঘমেয়াদে বাজার পুনরুদ্ধারের চাবিকাঠি। যথাযথ নীতিমালা গ্রহণ এবং দক্ষ নেতৃত্ব ছাড়া এই সংকট দ্রুত কাটিয়ে ওঠা কঠিন বলে বিশেষজ্ঞরা মত প্রকাশ করছেন। অন্তবর্তী সরকারকে বাস্তব বিষয়টি মেনে নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় দেশের শেয়ারবাজারে অশনিসংকেত আরও অনিবার্য হয়ে দেখা দেবে।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ভারতে ঢাবির দুই ছাত্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়, ক্ষোভ
- শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্র ও বহুজাতিক ১৫ কোম্পানি
- ১১'শ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিবে ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন
- স্কয়ার ফার্মার বাজার মূলধনে নতুন মাইলফলক
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৭ প্রতিষ্ঠান
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- নতুন সিনেট সদস্য হলেন ঢাবির ৫ অধ্যাপক
- ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে আর্থিক খাতের কোম্পানি
- বিকালে আসছে ১০ কোম্পানির ইপিএস
- ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- সর্বোচ্চ উচ্চতায় ১৭ কোম্পানির শেয়ার
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ১২ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- গেস্ট হাউজ থেকে সাবেক সেনাপ্রধান হারুনের মরদেহ উদ্ধার
- দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে ১৯ কোম্পানি
- ‘মুজিব’স ব্লান্ডার্স’: নেপথ্যের ষড়যন্ত্র উন্মোচন