ঢাকা, সোমবার, ১১ আগস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২
বিশ্বের সবচেয়ে গরিব রাষ্ট্রপতির বিদায়

ডুয়া নিউজ: বিশ্বব্যাপী বামপন্থীদের কাছে আদর্শ ও অনুপ্রেরণার প্রতীক, উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসে ‘পেপে’ মুজিকা মারা গেছেন। ৮৯ বছর বয়সে খাদ্যনালীর ক্যানসারের সঙ্গে এক বছরের দীর্ঘ লড়াইয়ের পর মে মাসের শুরুতে তিনি প্যালিয়েটিভ কেয়ারে স্থানান্তরিত হন। শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, তাঁকে তাঁর ছোট খামারবাড়িতে পোষা কুকুরের পাশে সমাহিত করা হবে।
উরুগুয়ের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইয়ামান্দু ওরসি এক্স হ্যান্ডেলে শোকবার্তায় বলেন, “গভীর শোকের সঙ্গে আমরা কমরেড পেপে মুজিকার মৃত্যুর খবর জানাচ্ছি। তিনি ছিলেন একজন প্রেসিডেন্ট, রাজনৈতিক কর্মী, নেতা এবং পথপ্রদর্শক। প্রিয় বন্ধু, আপনাকে আমরা গভীরভাবে মিস করব।”
বিশ্বজুড়ে শ্রদ্ধা ও শোক
মুজিকার মৃত্যুতে লাতিন আমেরিকা ও বিশ্বজুড়ে গভীর শোক প্রকাশ করা হয়েছে। বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস স্মরণ করেছেন তাঁর প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতাকে। ব্রাজিল সরকার তাঁকে ‘আমাদের সময়ের অন্যতম মানবতাবাদী’ হিসেবে অভিহিত করেছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, “মুজিকা একটি উন্নত বিশ্বের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছিলেন।” গুয়াতেমালার প্রেসিডেন্ট বার্নার্ডো আরেভালো তাঁকে ‘নম্রতা ও মহত্ত্বের প্রতীক’ বলে উল্লেখ করেন।
গেরিলা যোদ্ধা থেকে রাষ্ট্রনায়ক
হোসে মুজিকার রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৬০ ও ৭০-এর দশকে মার্কসবাদী-লেনিনবাদী গেরিলা সংগঠন তুপামারোস-এর সদস্য হিসেবে। স্বৈরশাসনের সময় তাঁকে ১৩ বছর কারাগারে বন্দী রাখা হয়, যার অধিকাংশ সময়ই ছিল একটি একাকী অন্ধকার সেলে। বই কিংবা মানুষের সঙ্গবিহীন সেই সময়টিকে পরে তিনি বর্ণনা করেন ‘চিন্তার জায়গা’ হিসেবে।
মুক্তির পর রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ২০০০ সালে সিনেটর নির্বাচিত হন। এরপর তিনি পশুপালনমন্ত্রী হন এবং ২০০৯ সালে উরুগুয়ের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হন। তাঁর শাসনামলে গর্ভপাত, সমকামী বিয়ে ও গাঁজার ব্যবহার বৈধ করা হয়—যা তাঁকে বিশ্বের প্রগতিশীল নেতাদের কাতারে স্থান করে দেয়।
সরলতা ও নৈতিকতার প্রতীক
রাষ্ট্রনায়ক হলেও মুজিকার জীবনযাপন ছিল অতি সাধারণ। রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন মাসিক বেতনের বেশিরভাগ অংশ তিনি দান করতেন দাতব্য প্রতিষ্ঠানে। তাঁর বাসস্থান ছিল মন্টেভিডিওর উপকণ্ঠে একটি ছোট খামার, যেখানে তিনি স্যান্ডেল পায়ে সরকারি অতিথিদের স্বাগত জানাতেন। তাঁর সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ ছিল ১৯৮৭ সালের একটি ফক্সওয়াগন বিটল গাড়ি। এ কারণেই তিনি পরিচিত ছিলেন ‘বিশ্বের সবচেয় গরিব রাষ্ট্রপতি’ নামে।
অবসরেও প্রভাবশালী
২০২০ সালে রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার পরও তাঁর সেই খামারবাড়ি বামপন্থী নেতাকর্মী, সাংবাদিক ও অনুরাগীদের তীর্থস্থানে পরিণত হয়। ভোগবাদের কঠোর সমালোচক মুজিকা একবার বলেছিলেন, “আমরা আত্মঘাতী সমাজ গড়ে তুলেছি। কাজের জন্য সময় আছে, কিন্তু বাঁচার জন্য সময় নেই।”
পরিবার ও বিদায়
গেরিলা জীবনের সময় পরিচয় হওয়া স্ত্রী লুসিয়া তোপোলানস্কি এখনো জীবিত আছেন। তাঁদের কোনো সন্তান ছিল না। মৃত্যুর আগে মুজিকা তাঁর খামারে প্রিয় কুকুরের পাশে সমাহিত হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড দিতে পারছে না বস্ত্র খাতের ১৩ কোম্পানি
- ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ফিরেছে আর্থিক খাতের কোম্পানি
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- অস্বাভাবিক শেয়ার দাম: ডিএসইর সতর্কবার্তা জারি
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৭ প্রতিষ্ঠানের ডিভিডেন্ড-ইপিএস
- ডিএসইর সতর্কবার্তার জালে দুর্বল দুই কোম্পানির শেয়ার
- চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে দুই কোম্পানির বাজিমাত
- রবির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্তের মুখে গ্রামীণফোন
- ছাত্ররাজনীতি থাকবে কিন্তু কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে: বাগছাস
- শেখ সেলিমের ২১টি বিও অ্যাকাউন্ট ও ৩৫টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
- বিসিএসে স্বতন্ত্র বিভাগে অন্য বিভাগ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবিতে বিক্ষোভ
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- চলতি সপ্তাহে ৬ কোম্পানির ডিভিডেন্ড অনুমোদন
- ঢাবি ছাত্রদলের ব্যতিক্রমধর্মী মিছিল, শুধু হাততালি
- আ’লীগকে ফিরিয়ে আনার অপচেষ্টায় বামপন্থীরা: ঢাবি শিবির