ঢাকা, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২
অন্তর্বর্তী সরকারের কূটনৈতিক জয়যাত্রা: ইউনূস-খলিলের নেতৃত্বে পরিবর্তনের হাওয়া

ডুয়া ডেস্ক : বিমসটেক সম্মেলনে অংশ নিতে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস। সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ সদস্য রাষ্ট্রগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন তিনি। এই সফরকে ঘিরে বাংলাদেশ কূটনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বৈঠকে ড. ইউনূস ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে সরাসরি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেন—প্রথমত, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, দ্বিতীয়ত, সীমান্তে হত্যা বন্ধ এবং তৃতীয়ত, তিস্তা নদীর পানির সুষ্ঠু হিস্যা। এসব বিষয়ে বাংলাদেশের স্পষ্ট ও কঠোর অবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের অবস্থানকে শক্তিশালী করেছে।
এছাড়া সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি এসেছে রোহিঙ্গা সংকটের ক্ষেত্রে। বৈঠকের পর মিয়ানমার ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গাকে ফেরত নেওয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। এটি বর্তমান সরকারের অন্যতম বড় কূটনৈতিক সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
এই অভূতপূর্ব সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন প্রধান উপদেষ্টার হাইরিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান। জাতিসংঘে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন এই কূটনীতিকের নিঃশব্দে কাজ করাই আজ বাংলাদেশকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। বিষয়টি সামনে এনেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, তার একটি ফেসবুক পোস্টে।
সেখানে তিনি লিখেছেন, “ড. খলিল একজন শান্ত স্বভাবের মানুষ। জাতিসংঘের শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন তিনি, এবং বিসিএসের মাধ্যমে নিযুক্ত প্রথম বাংলাদেশি কূটনীতিক। কিছুদিন আগে অন্তর্বর্তী সরকারে যোগ দিলেও এই অল্প সময়েই তিনি কূটনীতিতে বিস্ময়কর গতি এনেছেন।”
তিনি আরও জানান, জাতিসংঘ মহাসচিবকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইফতারে আমন্ত্রণ জানানো থেকে শুরু করে, বৈশ্বিক কূটনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান জানান দিতে ড. খলিলুর ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য প্রধান উপদেষ্টা তাকে একটি ধন্যবাদের চিঠিও দিয়েছেন।
ব্যাংকক সফরের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে শফিকুল আলম আরও লেখেন, “বিমসটেকের সরকারি নৈশভোজে যখন সবাই থাই খাবার উপভোগ করছিলেন, তখন ড. খলিল সময় কাটাচ্ছিলেন মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের সঙ্গে আলোচনায়। যদিও আলোচনাগুলো ছিল অনানুষ্ঠানিক, তবে এর ফলাফল আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি।”
তিনি জানান, মিয়ানমারের উপ-প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ড. খলিলের ১৫ মিনিটের আলাপ এবং অজিত দোভালের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টার আলোচনা ছিল অত্যন্ত ফলপ্রসূ। কূটনীতির এমন দৃষ্টান্তমূলক কাজ এর আগে খুব একটা দেখা যায়নি।
শফিকুল আলমের ভাষ্য অনুযায়ী, “অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে গঠিত কূটনৈতিক দল অত্যন্ত দক্ষ এবং সক্রিয়। এর নেতৃত্বে রয়েছেন অধ্যাপক ইউনূস নিজেই, যিনি প্রয়োজনীয় কঠিন বিষয়গুলো সামনে আনতে দ্বিধা করেন না। তিনি দেশের সিইও এবং প্রধান বিপণন কর্মকর্তার মতো করেই কূটনীতিকদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব তৌহিদ হোসেন এবং এখন ড. খলিল, যার সংযোজন এই দলকে আরও কার্যকর করে তুলেছে।”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ অতীতে অনেক সময়ই ‘নতজানু কূটনীতি’র জন্য সমালোচিত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা ছিল প্রকট। কিন্তু এখন সে চিত্র বদলেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে এখন কঠিন প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, এবং জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে।”
এই সফরের মধ্য দিয়ে স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে—বাংলাদেশ এখন কূটনীতিতে আর আগের মতো দুর্বল নয়। বরং কঠিন ইস্যুতে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে, রাষ্ট্রীয় স্বার্থে জোরালো ভূমিকা রাখার পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- স্বল্প মূল্যে কম্পিউটার স্কিল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তির সুযোগ, আসন সীমিত
- ডুয়া নিউজের বিশেষ প্রতিযোগিতা, পুরস্কার ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা!
- চলতি সপ্তাহে বেক্সিমকোর ফ্লোর প্রাইস ওঠার সম্ভাবনা
- শেয়ারবাজারে তানিয়া শারমিন ও মাহবুব মজুমদার ৫ বছরের জন্য নিষিদ্ধ
- যারা বৃত্তি পাবে না, তাদের জন্য পার্ট-টাইম জবের চিন্তা-ভাবনা
- শেয়ারবাজারের ৩ প্রতিষ্ঠানের ২৯৬ কোটি টাকা মানি লন্ডারিং
- শেয়ারের অস্বাভাবিক দামের জন্য ডিএসইর সতর্কবার্তা
- ঢাবি অ্যালামনাই ও নিউ হরাইজন কানাডিয়ান স্কুলের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
- জুলাই স্মৃতি জাদুঘর: টেন্ডার ছাড়াই ১১১ কোটি টাকার কাজ পেল দুই প্রতিষ্ঠান
- ১০ লাখ শেয়ার কেনার ঘোষণা তালিকাভুক্ত কোম্পানির উদ্যোক্তার
- ইপিএস ঘোষণার তারিখ জানাল দুই কোম্পানি
- শেয়ারের অস্বাভাবিক দাম নিয়ে ডিএসইর সতর্কতা
- ঢাবির জিয়া হলে ‘ক্যারিয়ার টক’ অনুষ্ঠিত
- ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ নেই’
- ডিভিডেন্ড পেয়েছে চার কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা