ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২
চোখ নষ্ট, শরীরে ৭২ গুলি নিয়ে দিন কাটছে ঢাবি ছাত্রের

লিটন ইসলাম: ১৮ জুলাই। সারাদেশ তখন খুনি হাসিনার বিরুদ্ধে উত্তাল। সকাল দশটায় রাজধানীর মৌচাক মোড়ে স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জসীম উদ্দিন খান। এসময় শুনতে পান, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর চলছে পুলিশের হামলা-গুলিবর্ষণ। কয়েকজনকে সাথে নিয়ে ছুটতে থাকেন সেখানে। কিন্তু রামপুরা ব্রিজের কাছাকাছি আসতেই পুলিশের ছোঁড়া মুহুর্মুহু গুলি এসে লাগে জসীমের সারা দেহে। এর মধ্যে দুটি ছররা গুলি তার বাম চোখের ভিতরে ঢুকে যায়। ডাক্তাররা জানান, আর কোনদিন সেই চোখে দেখতে পারবেন না তিনি।
জসীম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলে। বাড়ি ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার উজির খার কান্দি গ্রামে।
ডাক্তারের দেয়া রিপোর্টে দেখা যায়, গুলি দুটি তার চোখের রেটিনা ভেদ করে ভিতরে ঢুকে গেছে, যা আর কোনদিন বের করা সম্ভব না বলে জানায় ডাক্তাররা।
তিনি বলেন, আমি দেশ ও বিদেশের অনেক চোখ বিশেষজ্ঞকে দেখিয়েছি কিন্তু কেউ আমাকে আশ্বাস দিতে পারেননি যে আমার চোখটি ফিরে পাবো।
জসীম জানান, আহত হওয়ার পর প্রথমে ঢামেকে চিকিৎসা নিলে ডাক্তার জানায় চোখে কোন বুলেট নেই। কিন্তু পরবর্তীতে চোখের যন্ত্রণা বেড়ে গেলে আবার ডাক্তারের শরণাপন্ন হন তিনি। এবার ভালো করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে ডাক্তার জানায় তার চোখে দুইটি বুলেট রয়েছে এবং সেটা আর অপারেশন করে বের করাও সম্ভব না।
এদিন পুলিশের ছোঁড়া ৮৬টির বেশি গুলি এসে লাগে জসীমের সারা শরীরে। এর মধ্যে মাত্র ১২টি গুলি বের করা গেলেও এখনো ৭২টির উপরে গুলি নিয়ে দিন কাটছে তার। শুধু বাম হাতেই লেগেছে ২৪টি গুলি। বুক ও পেটে গুলি লেগেছে সবচেয়ে বেশি।
শরীরে রয়ে যাওয়া এতো গুলির যন্ত্রণা ও এক চোখ হারিয়ে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় বসতে পারছেন না জসীম। তিনি বলেন, আমার ৪৬ তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা সামনে। অথচ এক চোখ না থাকার কারণে আমি এখন ঠিক মতো পড়তে পারছি না। ব্যাংকের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় পাশ করেও লিখিত পরীক্ষায় বসতে পারিনি।
তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আমি না পারছি পড়তে, না পারছি চাকরি করতে। সরকার থেকে আর্থিক সহযোগিতা পেলে ব্যবসা করবেন বলে জানান তিনি।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন থেকে তাকে এক লাখ টাকা দেয়া হলেও হারান চোখ কি আদৌ ফিরে পাবেন- এমন অভিব্যক্তি জসীমের। তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী হলেও প্রশাসন থেকে আমার সাথে কোন যোগাযোগ করা হয়নি। শুধু ঢাবি শিবির সভাপতি এস এম ফরহাদ ও এক ছাত্রদল নেতা ছাড়া সেভাবে আমার কেউ খোঁজখবর নেয়নি।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে আসছে রাষ্ট্র ও বহুজাতিক ১৫ কোম্পানি
- ভারতে ঢাবির দুই ছাত্রীর ছবি নিয়ে তোলপাড়, ক্ষোভ
- ১১'শ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দিবে ঘুড্ডি ফাউন্ডেশন
- দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে ১৪ কোম্পানি
- ডিএনসিসির শিক্ষাবৃত্তি পাবে ২ হাজার শিক্ষার্থী
- স্কয়ার ফার্মার বাজার মূলধনে নতুন মাইলফলক
- শেয়ারবাজারে বড়দের দাপট, ছোটদের পিছুটান
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৪ প্রতিষ্ঠান
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ৭ প্রতিষ্ঠান
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- বিকালে আসছে ১০ কোম্পানির ইপিএস
- বিকালে আসছে ২১ কোম্পানির ইপিএস
- নতুন সিনেট সদস্য হলেন ঢাবির ৫ অধ্যাপক
- শিবলী রুবাইয়াত ও শেখ শামসুদ্দিন শেয়ারবাজারে অবাঞ্ছিত ঘোষণা
- ক্যাশ ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা