ঢাকা, সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

ট্রাইব্যুনালে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের উপচে পড়া ভিড়

২০২৫ নভেম্বর ১৭ ১১:১৫:২৮

ট্রাইব্যুনালে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের উপচে পড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) এই ঐতিহাসিক মামলার খবর সংগ্রহের জন্য ভোর থেকেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকর্মীদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। রয়টার্স, এপি, এএফপি, আল জাজিরা, বিবিসি ওয়াল্ডসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি মাসউদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে, যার ফলে বিশ্ব গণমাধ্যমের দৃষ্টি এখন ট্রাইব্যুনালের দিকে। রয়টার্স সরাসরি এই বিচারকাজ সম্প্রচার করবে বলেও জানা গেছে।

শেখ হাসিনার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ট্রাইব্যুনাল ও সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় কয়েক স্তরের কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশ, র‌্যাব, এপিবিএন, বিজিবি এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর রয়েছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে গতকাল সন্ধ্যা থেকেই দোয়েল চত্বর হয়ে শিক্ষাভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে এবং জনসাধারণের চলাচল সীমিত করা হয়েছে।

গত ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আজকের দিনটি রায় ঘোষণার জন্য ধার্য করেছিলেন। এই মামলায় মোট ২৮ কার্যদিবসে ৫৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। ৯ কার্যদিবসে প্রসিকিউশন এবং স্টেট ডিফেন্সের যুক্তিতর্ক ও পাল্টা যুক্তিখণ্ডন চলে। ২৩ অক্টোবর অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের সমাপনী বক্তব্য এবং চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেনের যুক্তিখণ্ডন শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণের জন্য সময় দেওয়া হয়।

যুক্তিতর্কে, প্রসিকিউশন শেখ হাসিনা ও কামালের সর্বোচ্চ সাজা চেয়েছিল। তবে রাজসাক্ষী হওয়ায় মামলার অন্যতম আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিষয়ে ট্রাইব্যুনালের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়, যদিও তার আইনজীবী খালাস চেয়েছেন। রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আমির হোসেন আশা প্রকাশ করেছেন যে হাসিনা-কামালও খালাস পাবেন।

এই মামলায় তিন আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে, যার মধ্যে উসকানি, মারণাস্ত্র ব্যবহার, আবু সাঈদ হত্যা, চানখারপুলে হত্যা এবং আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আট হাজার ৭৪৭ পৃষ্ঠার এবং ৮৪ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। গত ১২ মে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা চিফ প্রসিকিউটরের কাছে এ মামলার প্রতিবেদন জমা দেয়।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত