ঢাকা, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩২

কেন বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারত সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ডুয়া নিউজ

২০২৫ নভেম্বর ১৫ ২০:০২:০৩

কেন বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারত সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে?

ভারতের "চিকেনস নেক" নামে পরিচিত শিলিগুড়ি করিডোরকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে ভারতের সামরিক তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আসামের ধুবরি এবং উত্তর দিনাজপুরের চোপরায় দুটি নতুন সেনা ঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করেছে ভারত। বিশ্লেষকদের মতে, শিলিগুড়ি করিডোরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং চীনের প্রভাব মোকাবিলাই এর প্রধান উদ্দেশ্য। একইসঙ্গে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনও এই সামরিক তৎপরতার পেছনে ভূমিকা রাখছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তবে লালমনিরহাট সীমান্তে ৬২ কিলোমিটার এলাকা ভারতের দখলে চলে যাওয়ার যে গুজব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়েছে, তাকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে বিজিবি। ১৫ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মেহেদী ইমাম নিশ্চিত করেছেন যে, সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং বিএসএফের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ ও যৌথ টহল চলছে। স্থানীয়রাও এই ধরনের কোনো ঘটনার অস্তিত্ব অস্বীকার করেছেন, যদিও বিএসএফের টহল বৃদ্ধি এবং অতিরিক্ত সতর্কতা চোখে পড়েছে।

ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক দীপঙ্কর ব্যানার্জী মনে করেন, এটি ভারতের সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ এবং ডোকলাম থেকে শিলিগুড়ি করিডোর পর্যন্ত সংবেদনশীল পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারত প্রস্তুত থাকছে। তবে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ অস্বীকার করেছেন, বরং চীনের প্রভাব মোকাবিলাকেই মূল কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী তিনটি বিষয়কে ভারতের এই পদক্ষেপের নেপথ্যে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন: শিলিগুড়ি করিডোরের নিরাপত্তা, চীনকে মোকাবিলা এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তন থেকে ভারতের এক ধরনের হুমকি অনুভব করা। বিশেষ করে, লালমনিরহাট বিমানবন্দর এবং তিস্তা প্রকল্পে চীনের সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি উপস্থিতি ভারতকে চিন্তিত করতে পারে। তিনি এটিকে বাংলাদেশের জন্য একটি "গ্রে জোন ব্যাটল" হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যার উদ্দেশ্য সরাসরি যুদ্ধ না করে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়ে প্রতিপক্ষকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রভাবিত করা।

৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে, এবং বাংলাদেশ অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিগুলোর ভারতবিরোধী অবস্থানও ভারতের উদ্বেগের কারণ হতে পারে। যদিও ভারতীয় বিশ্লেষকরা বাংলাদেশকে সরাসরি সামরিক হুমকি হিসেবে দেখেন না, তবে ৪০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত অন্য কোনো শক্তি ব্যবহার করার সুযোগ পেলে তা ভারতের দুশ্চিন্তার কারণ হবে।

এসপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত