ঢাকা, রবিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২

কত বছর টাকা জমা করলে পাওয়া যাবে পেনশন সুবিধা?

২০২৫ অক্টোবর ২৬ ২১:৪৪:৫৬

কত বছর টাকা জমা করলে পাওয়া যাবে পেনশন সুবিধা?

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ এখন জনমিতিক লভ্যাংশের সময় অতিক্রম করছে যেখানে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে। এই প্রেক্ষাপটে তাদের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ।

রোববার খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে আয়োজিত সর্বজনীন পেনশন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ড. শেখ আব্দুর রশীদ বলেন, “জনমিতিক লভ্যাংশের সুফল আমরা এখন ভোগ করছি। কিন্তু ২০৩৩ সালের পর নির্ভরশীল জনসংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনি গড় আয়ুও বৃদ্ধি পাবে। তাই এখনই তাদের সম্মানজনক ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি আরও জানান, সরকারের অধীনে বর্তমানে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় ১৪৩টি কর্মসূচি চলছে। এবারের বাজেটে কিছু কর্মসূচি কমিয়ে ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হলেও উপকারভোগীদের জন্য তা এখনও অপর্যাপ্ত। এসব কর্মসূচি সম্পূর্ণরূপে সরকারের একক অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আমাদের শিক্ষকরা খুব অল্প পেনশন পান এবং সেটি পেতেও তাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়। অন্যদিকে বেসরকারি চাকরিজীবীরা অনিশ্চয়তায় ভোগেন। বর্তমানে মাত্র ১৪ লাখ সরকারি কর্মচারী পেনশনের আওতায় রয়েছেন অর্থাৎ বিশাল জনগোষ্ঠী এখনও বাইরে। তাদের জন্য এই স্কিম একটি বড় সুযোগ।”

তিনি আরও বলেন, “উন্নত দেশের তুলনায় আমরা অনেক দেরিতে পেনশন স্কিম চালু করেছি। তবে এতে রয়েছে অনেক উৎসাহব্যঞ্জক দিক যেমন গ্রাহকরা তাদের নিজস্ব জমা থেকে লোন নিতে পারবেন, আর কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা জমা করলেই পেনশন সুবিধা পাওয়া যাবে। এটি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়; বরং সরকার শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রের দায়িত্ব থেকেই সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির সূচনা হয়েছে। এটি অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের অংশ।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (ভারপ্রাপ্ত) মো. ফিরোজ শাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মহিউদ্দীন খান ও খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার। স্বাগত বক্তব্য দেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. হুসাইন শওকত।

এর আগে মন্ত্রিপরিষদ সচিবের নেতৃত্বে খুলনা আঞ্চলিক লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়, যা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে এসে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।

দিনব্যাপী মেলায় সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও ব্যাংকের ৫০টি স্টলে সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত সেবা দেওয়া হয়।

পরে কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “একটি কল্যাণ রাষ্ট্রের মূল দায়িত্ব হলো নাগরিকের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। উপকূলীয় এলাকার মানুষ কঠিন জীবনযাপন করেন; তারা যদি এই স্কিমে যুক্ত হন, তবে সম্মানজনক ও নিরাপদ জীবন পাবেন।”

এরপর তিনি বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন।

ইএইচপি

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত