ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ১ কার্তিক ১৪৩২

৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন: উৎসবে মুখর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

২০২৫ অক্টোবর ১৬ ০৮:৪৯:৩৩

৩৫ বছর পর রাকসু নির্বাচন: উৎসবে মুখর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটছে আজ। ৩৫ বছর পর আবারও অনুষ্ঠিত হচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচন।

বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল থেকেই উৎসবমুখর পরিবেশে ক্যাম্পাসজুড়ে। অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ১৭টি কেন্দ্রে ২৮ হাজার ৯০১ জন ভোটার আজ ভোট দেবেন ৯১৮ প্রার্থীকে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশ ও অধিকার রক্ষার লক্ষ্যেই ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু)। প্রতিষ্ঠার মূল উদ্দেশ্য ছিল এমন নেতৃত্ব তৈরি করা যারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জাতীয় পরিসর পর্যন্ত দেশের ভবিষ্যৎ গড়তে ভূমিকা রাখবে।

১৯৫৬ সালে উপাচার্য প্রফেসর ড. ইতরাত হোসেন জুবেরীর কাছে প্রথমবার ছাত্র সংসদ গঠনের দাবি ওঠে। এরপর ১৯৫৭ সালে পূর্ব পাকিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের মধ্যস্থতায় ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন এবং প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তখন মনিরুজ্জামান মিয়া ভিপি ও আব্দুর রাজ্জাক খান জিএস নির্বাচিত হন।

১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের সময় রাকসুর কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে ১৯৬২ সালে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আবার কার্যক্রম শুরু হয় এবং নিয়মিতভাবে মোট ১৪টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক জটিলতায় বেশ কয়েক দফা কার্যক্রম বন্ধ থেকেছে।

সর্বশেষ রাকসু নির্বাচন হয় ১৯৮৯ সালে। তখন রুহুল কবির রিজভী আহমেদ ভিপি ও রুহুল কুদ্দুস বাবু জিএস নির্বাচিত হন। এরপর থেকে দীর্ঘ ৩৫ বছর স্থগিত ছিল রাকসু নির্বাচন।

এবারের নির্বাচনে ছাত্র সংসদের ২৩টি পদে ৩০৫ জন, সিনেটের ৫টি পদে ৫৮ জন এবং ১৭টি হল সংসদের ২৫৫টি পদে ৫৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। একজন ভোটার মোট ৪৩টি পদে ভোট দিতে পারবেন। নারী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ এবং পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ জন।

নির্বাচনের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ১৭টি কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে ১০০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ শেষে সর্বোচ্চ ১৭ ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করা হবে।

নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্যাম্পাস ও আশপাশে মোতায়েন করা হয়েছে দুই হাজার পুলিশ, ছয় প্লাটুন বিজিবি ও ১২ প্লাটুন র‌্যাব। পাশাপাশি ১৫ অক্টোবর রাত ১২টা থেকে ১৭ অক্টোবর রাত ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের ২০০ গজ এলাকায় সভা-সমাবেশ, মিছিল, মাইকিং, আতশবাজি ও অস্ত্র বহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, কোনো প্রার্থী বা ভোটার আচরণবিধি ভঙ্গ করলে নির্বাচন কমিশন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। ফৌজদারি অপরাধ ঘটলে পুলিশ তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

কেএমএ

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত