ঢাকা, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

বিডি পেইন্টসের কারখানায় বাণিজ্যিক উৎপাদন ১৮ অক্টোবর শুরু

২০২৫ অক্টোবর ১৪ ০০:১৬:০৮

বিডি পেইন্টসের কারখানায় বাণিজ্যিক উৎপাদন ১৮ অক্টোবর শুরু

মোবারক হোসেন: শেয়ারবাজারে এসএমই প্ল্যাটফর্মে তালিকাভুক্ত বিডি পেইন্টস লিমিটেড আগামী ১৮ অক্টোবর গাজীপুরে তাদের নতুন কারখানার বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে প্রস্তুত। উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং বাজারে অবস্থান জোরদার করার লক্ষ্যে নেওয়া কোম্পানিটির সম্প্রসারণ কৌশলের এটি একটি বড় মাইলফলক। ব্যাংক ঋণ ও নিজস্ব তহবিল মিলিয়ে নতুন এই প্রকল্পে কোম্পানিটি প্রায় ১০২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

সোমবার (১৩ অক্টোবর) শেয়ারবাজারে জমা দেওয়া এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি জানায়, দেশজুড়ে ডেকোরেটিভ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্টের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে নতুন কারখানাটি স্থাপন করা হয়েছে। এই প্ল্যান্টের মাধ্যমে বিডি পেইন্টস তাদের উৎপাদন দক্ষতা, পণ্যের পরিসর এবং দেশীয় পেইন্টস বাজারে সামগ্রিক প্রতিযোগিতা সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়াতে সক্ষম হবে বলে আশা করছে।

৯১৪ ডেসিমেল জমির ওপর নির্মিত নতুন কারখানাটির দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ১১ গুণ বেড়ে হবে ১১০.৬০ টন বিভিন্ন ধরনের পেইন্ট এবং ১৫ হাজার পিস প্লাস্টিক কন্টেইনার। কোম্পানিটি জানিয়েছে, এই নতুন ইউনিটটি একটি কম্পোজিট উৎপাদন কেন্দ্র, যেখানে ওয়াটার-বেসড পেইন্ট, সলভেন্ট-বেসড পেইন্ট, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পেইন্ট, থিনার, রাসায়নিক, প্লাস্টিক কন্টেইনার এবং মুদ্রিত সামগ্রীসহ বিস্তৃত পণ্য তৈরি হবে।

বিডি পেইন্টসের এক কর্মকর্তা জানান, কোম্পানিটি ২০২০ সালে জমি কিনেছিল এবং ২০২২ সালে নির্মাণ কাজ শুরু করে। তিনি বলেন, "কাজ এখন প্রায় শেষ এবং ১৮ অক্টোবর বাণিজ্যিক কার্যক্রমের জন্য কারখানাটি প্রস্তুত।" তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন যে কোম্পানিটি প্রথমে তাদের সম্প্রসারণ পরিকল্পনা প্রকাশ্যে ঘোষণা না করার সিদ্ধান্ত নিলেও, পরবর্তীতে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে যথাসময়ে অবহিত করেছে।

ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে, নতুন কারখানাটি শুধু উৎপাদন সক্ষমতাই বাড়াবে না, রাজস্ব বৃদ্ধিতেও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, "আমরা আশা করি এই সম্প্রসারণের ফলে বার্ষিক রাজস্ব ক্রমান্বয়ে প্রায় ২৫০ কোটি টাকায় উন্নীত হবে, যা কোম্পানির সামগ্রিক আর্থিক পারফরম্যান্সে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।"

বর্তমানে বাংলাদেশের পেইন্টস শিল্পে বার্জার পেইন্টস, এশিয়ান পেইন্টস, নিপ্পন পেইন্টস এবং কানসাই নেরোল্যাক পেইন্টসের মতো বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর আধিপত্য থাকলেও, বিডি পেইন্টসের মতো স্থানীয় কোম্পানিগুলো সক্ষমতা বৃদ্ধি ও পণ্যের বহুমুখীকরণের মাধ্যমে ধীরে ধীরে তাদের বাজার অংশীদারিত্ব বাড়াচ্ছে।

বিডি পেইন্টসের বর্তমান কারখানাটি বরিশালের বিএসআইসি শিল্পাঞ্চলে ৬৮.৭০ ডেসিমেল জমিতে অবস্থিত এবং এর দৈনিক উৎপাদন ক্ষমতা ১০ টন (ওয়াটার-বেসড ও সলভেন্ট-বেসড পেইন্ট)।

২০২২ সালে বিডি পেইন্টস প্রতিটি ১০ টাকা অভিহিত মূল্যে ১ কোটি ২০ লাখ শেয়ার ইস্যু করে কোয়ালিফাইড ইনভেস্টর অফার (কিউআইও) এর মাধ্যমে ১২ কোটি টাকা মূলধন সংগ্রহ করে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। এসএমই বোর্ডে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হওয়ায় এটির ত্রৈমাসিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশের বাধ্যবাধকতা নেই।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে বিডি পেইন্টস ১২ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড ঘোষণা করে এবং ৮৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা নিট মুনাফা অর্জন করে, যা ছিল পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ১৭ শতাংশ বেশি।

আরও পড়ুন-

১৩ অক্টোবর: এক নজরে শেয়ারবাজারের ১৯ খবর

সোমবার ডিএসই-তে কোম্পানির শেয়ারের দাম ১.৭৪ শতাংশ কমে ৫০ টাকা ৮০ পয়সায় ক্লোজিং হয়। এর মূল্য-আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ৩৫.৫২ এবং বাজার মূলধন ৩২০ কোটি টাকা। সাম্প্রতিক পতন সত্ত্বেও, ২৯ মে থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিডি পেইন্টসের শেয়ারের দাম ১৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

৩০ জুন ২০২৫ পর্যন্ত কোম্পানিটির স্পন্সর ও পরিচালকরা সম্মিলিতভাবে ৩০.৪৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ২৯.২২ শতাংশ এবং সাধারণ জনগণ ৪০.৩৪ শতাংশ শেয়ার ধারণ করছে।

এএসএম/

শেয়ারবাজারের বিশ্লেষণ ও ইনসাইড স্টোরি পেতে আমাদের পেজ ফলো করুন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

বিশ্ববাজারে আবারও বাড়লো সোনার দাম

বিশ্ববাজারে আবারও বাড়লো সোনার দাম

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: আন্তর্জাতিক বাজারে আবারও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে সোনার দাম। মার্কিন ডলারের দরপতন এবং যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার কমাতে পারে—এমন... বিস্তারিত