ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ আশ্বিন ১৪৩২

পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারই অন্যতম অগ্রাধিকার: প্রধান উপদেষ্টা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৬ ২২:০৯:৩৫

পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধারই অন্যতম অগ্রাধিকার: প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার করাই বর্তমানে সরকারের অন্যতম শীর্ষ অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, গত ১৫ বছরে দুর্নীতি ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিদেশে পাচার হয়েছে। তিনি জানান, বাংলাদেশ এই সম্পদ ফেরত আনার জন্য নিরলস চেষ্টা চালাচ্ছে, তবে বিভিন্ন দেশের আইনি প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার কারণে প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তিনি যোগ করেন, সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সদিচ্ছা ছাড়া অবৈধভাবে পাচার হওয়া সম্পদ পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় উন্নয়নশীল দেশ থেকে সম্পদের অবৈধ পাচার কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ট্যাক্স হেভেন নিয়মগুলো বৈশ্বিকভাবে এই অবৈধ অর্থ স্থানান্তরের সুযোগ বাড়াচ্ছে। তাই, তিনি আহ্বান জানিয়েছেন যে যেসব দেশ ও প্রতিষ্ঠান এই সম্পদ সংরক্ষণ করছে, তারা যেন এই অপরাধের অংশীদার না হয় এবং অবৈধ সম্পদ এর প্রকৃত মালিক কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ করদাতাদের কাছে ফিরিয়ে দেয়। পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিকভাবে কঠোর বিধি প্রণয়ন ও প্রয়োগের প্রস্তাবও রাখেন যাতে সম্পদ পাচার রোধ করা যায়।

প্রধান উপদেষ্টা জলবায়ু সংকট প্রসঙ্গে বলেন, বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমাবদ্ধ রাখার লক্ষ্যমাত্রা এখন আমাদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু সহায়তার প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি এবং বরাদ্দ হওয়া অর্থও প্রায়শই অতিরঞ্জিতভাবে দেখানো হচ্ছে। তিনি বলেন, এটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের নিরাপত্তার জন্য এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড পুরোপুরি কার্যকর করতে হবে, এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রশমনের পাশাপাশি অভিযোজন উদ্যোগও সমান গুরুত্ব পাবে। অভিযোজন অবশ্য দেশজ ও স্থানীয়ভাবে নির্ধারিত ও পরিচালিত হতে হবে।

তিনি জানান, বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্থানীয়ভাবে সংবেদনশীল অভিযোজন নীতিকে মূল ভিত্তি হিসেবে গ্রহণ করেছে। আসন্ন কপ-৩০ সম্মেলনে দেশটি তৃতীয়বারের মতো জলবায়ু পরিবর্তন রোধে জাতীয় প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করবে। এতে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব প্রশমন, অভিযোজন উদ্যোগ, ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সংরক্ষণ এবং জলাভূমি পুনরুদ্ধারের বিষয়গুলোকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া, তিনি আশা প্রকাশ করেন যে বৈশ্বিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে উচ্চ-কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করবে।

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত