ঢাকা, শুক্রবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১ আশ্বিন ১৪৩২
নিত্যপণ্যের দামে আগুন, সস্তি চালের বাজারে

ইনজামামুল হক পার্থ
রিপোর্টার

ইনজামামুল হক পার্থ: রাজধানী ও জেলা শহরের বাজারে সবজির দাম ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, সাধারণ মানুষ ক্রেতাদের জন্য খাদ্যাভ্যস্তি হয়ে উঠেছে। সপ্তাহে বাজার ঘুরে দেখলে ক্রেতাদের খরচের চাপ আরও বেড়ে গেছে, সাধারণ সবজি এখন বিলাসবস্তুরূপ ধারণ করছে।
আজ শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর হাজারীবাগ ও মিরপুর-১ বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে—করলা কেজিপ্রতি ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, ঢেড়শ ১০০ থেকে ১১০ টাকা, কাঁকরোল, বেগুন, ধুন্দল, চিচিঙ্গা, ঝিঙে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, শিম ও টমেটো ১২০ টাকা। পেঁপে ও আলুর দাম কিছুটা কম, তবে আলু আগের তুলনায় ৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। কচুরমুখী ৬০ থেকে ৮০ টাকা, কচুর লতি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, গাজর ১৬০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৬০ টাকা, কাঁচা কলার হালি ৪০ টাকা, শালগম ৮০ টাকা। মিষ্টি কুমড়া ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, ধনেপাতা ১৫০ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে আসা ক্রেতা তাহমিনা আক্তার বলেন, “এক সময় ২০০ টাকায় তিন-চার রকম সবজি কেনা যেত। এখন ৫০০ টাকায়ও বাজারে কিছুই পাওয়া যায় না। করলা আর ঢেড়শ যেন সোনার দরে বিক্রি হচ্ছে।”
অন্যদিকে বিক্রেতারা বলছেন, মৌসুম পরিবর্তন ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধির কারণে দাম বেড়েছে। যাত্রাবাড়ী আড়তের ব্যবসায়ী আশিকুর রুহমান জানান, “গ্রামে ফসল কম, পরিবহন খরচ বেড়েছে। আমাদেরও বেশি দামে সরবরাহ আসে, তাই বিক্রি বেশি দামে করতে হচ্ছে।”
এদিকে বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৭০ থেকে ১৭২ টাকা এবং সুপার পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। চার দিন আগেও সয়াবিন তেলের দাম ছিল ১৬৯ টাকা, পাম অয়েলের দাম ১৫০ টাকা বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। এদিকে চালের বাজারে ভারতের বিভিন্ন ধরনের চাল আমদানি হওয়ার কারণে দাম কমেছে। নাজিরশাইল চালের দাম এখন প্রতিকেজি ৮৪ থেকে ৮৬ টাকা, যা আগে ৯০-৯২ টাকা ছিল। মোটা পায়জাম ও স্বর্ণা জাতের চালের দাম কমে ৫৬ থেকে ৬০ টাকা হয়েছে। তবে মিনিকেট চালের দাম আগের মতোই ৭৮ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সেগুনবাগিচা বাজারের রাইস এজেন্সির কর্ণধার সালমান হোসেন জানিয়েছেন, ভারত থেকে প্রচুর চাল আসার কারণে দাম কমেছে। তবে দেশি মিনিকেট চালের দাম আগের মতোই রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, যদি আমদানি আরও বৃদ্ধি পায়, তাহলে বাজারে চালের দাম আরও কমতে পারে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠনগুলোর মতে, শুধুমাত্র মৌসুম ও পরিবহন খরচকে দায়ী করা যায় না। বাজারে পর্যাপ্ত তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়ে অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়াচ্ছেন। ভোক্তা অধিকার কর্মী মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, “কৃষক উৎপাদন পর্যায়ে যে দাম পান, আর ক্রেতা যে দাম দেন—এর মধ্যে বিপুল ফারাক। দায় নিয়ন্ত্রণহীন বাজারব্যবস্থার।”
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, সরবরাহ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা ও অযৌক্তিক মুনাফা রোধ না করলে ভোক্তাদের জন্য পরিস্থিতি আরও কঠিন হবে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, যদি সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বাজার পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে আগামী সপ্তাহগুলোতে সবজি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। ফলে সাধারণ ক্রেতাদের দৈনন্দিন খরচের চাপ ক্রমশ বাড়বে এবং খাদ্যসামগ্রী ক্রয়ে তাদের অসুবিধা আরও তীব্র হবে।
ইএইচপি
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- এশিয়া কাপ ২০২৫: বাংলাদেশ বনাম পাকিস্তান,সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- এশিয়া কাপ: পাকিস্তান বনাম শ্রীলঙ্কা, সরাসরি দেখবেন যেভাবে
- উৎপাদন বন্ধ ৩০ কোম্পানির তালিকা প্রকাশ করেছে ডিএসই
- তালিকাচ্যুত হচ্ছে পাঁচ ব্যাংক, বলির পাঠা শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা!
- শেয়ারবাজারের ১২ কোম্পানির ২ হাজার কোটি টাকার নতুন বিনিয়োগ
- সিটি ব্যাংক পোর্টফোলিও ম্যানেজারের শেয়ার জালিয়াতি, তদন্তে বিএসইসি
- যেভাবে পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে
- এনবিআর-এর ক্যাশ গেইন প্রতিক্রিয়া অতিরঞ্জিত: আনিসুজ্জামান চৌধুরী
- নতুন দিগন্তে বেক্সিমকো, শেয়ারবাজারে আশার আলো
- বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে শেয়ারবাজারের ৬ কোম্পানিতে
- চলতি সপ্তাহে ঘোষণা আসছে ৫ কোম্পানির ডিভিডেন্ড
- ডিভিডেন্ড ঘোষণার তারিখ জানাল তিন কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর নতুন আবেদন
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে মুন্নু সিরামিক
- ঝড়ের গতিতে উত্থান, রকেটের গতিতে পতনের শেয়ার