ঢাকা, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০২৫, ২২ কার্তিক ১৪৩২

ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চান ইউনূস :মির্জা ফখরুল

২০২৫ সেপ্টেম্বর ২৩ ১৭:২৬:১৯

ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন চান ইউনূস :মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিক জাতীয় পার্টির (জাপা) অংশগ্রহণ চান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। একইসঙ্গে তিনি দাবি করেছেন, আওয়ামী লীগের চশমায় বাংলাদেশকে দেখা ভারতের বড় ভুল ছিল। মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন তিনি।

গণমাধ্যমটি তাকে প্রশ্ন করে—আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হবে কি না, আর হলে অশান্তি ও রক্তপাত ঘটবে কি না? জবাবে ফখরুল বলেন, আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতেই ভোট হবে, সংশয়ের কোনো জায়গা নেই। কোনো অশান্তিও হবে না। মানুষ ভোটাধিকার ফেরত চাইছে, উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন হবে।

জামায়াতের পিআর (আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতির দাবি ও এনসিপির গণপরিষদ নির্বাচনের শর্ত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জামায়াত নির্বাচনে অংশ নেবে। প্রচলিত পদ্ধতিতেই ভোট হবে। এনসিপিকে তারা আর কোনো শক্তি মনে করে না। তিনি জানান, এনসিপি কখনো আসন চায়নি, তবে জামায়াত আসন চাইছে। জামায়াত ৩০টি আসন চেয়েছিল, কিন্তু বিএনপি তাতে সাড়া দেয়নি। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, জামায়াতকে আর মাথায় তুলে রাখা হবে না। বিএনপি অতীতে তাদের অকারণে গুরুত্ব দিয়েছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ভূমিকা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, পরিস্থিতি বদলেছে। এখন ইউনূস আন্তরিকভাবেই চান ফেব্রুয়ারিতে ভোট হোক। গত ৫ আগস্ট নির্বাচনের দিন ঘোষণার আগের রাতে ইউনূস ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে তার দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেনাপ্রধান জানান, পুলিশ কম থাকায় সেনাদের দীর্ঘদিন রাস্তায় ডিউটি করতে হচ্ছে। তাই দ্রুত নির্বাচন শেষে সেনারা ব্যারাকে ফিরতে চায়। ইউনূসও ফেব্রুয়ারিতে ভোটের মাধ্যমে দায়িত্ব শেষ করতে চান বলে জানান।

সম্প্রতি জাতীয় পার্টির অফিস ভাঙচুরের পরদিন বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির নেতাদের বাসায় ডেকে পাঠান ইউনূস। সে প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, সেদিন ইউনূস স্পষ্ট বার্তা দেন—ফেব্রুয়ারির ভোটের ‘বাস’ ধরতে না পারলে মার্চ থেকে তিনি আর থাকবেন না।

ফখরুল আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও তাদের শরিক সবাই নির্বাচনে অংশ নিক, বিএনপি এমনটাই চায়। “আমাকে অনেকে ভারতের এজেন্ট বা আওয়ামীর দালাল বলছে, কিন্তু শেখ হাসিনা যেমন প্রতিপক্ষকে ভোটে দাঁড়াতে দেননি, আমরাও তেমন কাজ করব না,” বলেন তিনি।

ভারতের প্রভাব প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান অস্বীকার করা যায় না। ভৌগোলিক বাস্তবতায় প্রভাব থাকবেই। কিন্তু সমস্যা হলো, ভারত সবসময় আওয়ামী লীগের চোখ দিয়েই বাংলাদেশকে দেখেছে। এতে বিএনপি ও জামায়াতকে একই বন্ধনীতে ফেলা হয়েছে। অথচ বিএনপি একটি অসাম্প্রদায়িক, মধ্যপন্থি গণতান্ত্রিক দল। জামায়াতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক কেবল নির্বাচনি শরিকানার।

তিনি জানান, আওয়ামী লীগ ইচ্ছাকৃতভাবে ভারতকে বিভ্রান্ত করেছে। ফলে আজ আওয়ামী-বিরোধী ক্ষোভ ভারত-বিরোধিতায় রূপ নিয়েছে। তবে বিএনপি চায় ভারত সবার সঙ্গে যোগাযোগ রাখুক। তিনি আশা প্রকাশ করেন, কলকাতায় গিয়ে আবার বই কেনা, সিনেমা ও থিয়েটার দেখা, মানুষে মানুষে অবাধ যোগাযোগ, সহজ ভিসা প্রক্রিয়া এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুনভাবে গড়ে উঠুক।

ডুয়া /নয়ন

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত