ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২

'ফ্যাসিবাদের মতো কঠিন রোগ সরাতে পারলে তামাক কেন নয়?'

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৮ ০১:২২:১২

'ফ্যাসিবাদের মতো কঠিন রোগ সরাতে পারলে তামাক কেন নয়?'

নিজস্ব প্রতিবেদক: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, "ফ্যাসিবাদের মতো কঠিন রোগ বাংলাদেশ থেকে সরাতে পেরেছি, তামাক দূর করতে পারব না কেন?"

তিনি বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলা অ্যাকাডেমিতে ‘নারী, শিশু ও তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার গুরুত্ব’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

তিনি উল্লেখ করেন যে, তামাক কোম্পানিগুলো তরুণদের লক্ষ্য করে কূটকৌশল সাজায়, কারণ ২০-২৫ বছর বয়সী তরুণদের আসক্ত করতে পারলে তারা অন্তত ৫০ বছর ধরে সিগারেটের বাজার নিশ্চিত করতে পারবে।

ফরিদা আখতার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশোধনীগুলো ক্যাবিনেটে তোলার জন্য ধন্যবাদ জানান। তবে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, রাজস্ব কমে যাওয়ার অজুহাতে এই প্রক্রিয়াটি বিলম্বিত হচ্ছে। একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হলেও তামাক কোম্পানির শক্তিশালী লবিংয়ের কারণে অগ্রগতি ব্যাহত হচ্ছে।

উপদেষ্টা আরও বলেন, তামাক কোম্পানিগুলো সবসময় ভয় দেখায় যে, তামাক থেকে রাজস্ব ছাড়া সরকার চলতে পারবে না, কিন্তু বাস্তবে তাদের প্রদেয় আয়করের মধ্যে অনেক ফাঁকি রয়েছে। তিনি জানান, প্রধান উপদেষ্টা তরুণ সমাজকে তামাকের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং তরুণ প্রজন্ম সচেতন হলে কোনো তামাক কোম্পানি তাদের টার্গেট করতে পারবে না।

সভায় জানানো হয়, বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ২০০৫ (সংশোধিত ২০১৩) বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোলের (এফসিটিসি) সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ বেশ কিছু সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রস্তাবনাগুলো হলো: পাবলিক প্লেসে ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বা স্মোকিং জোন নিষিদ্ধ করা; সব ধরনের তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শন ও বিজ্ঞাপন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা; ই-সিগারেটের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তরুণ-তরুণীদের রক্ষা করা; বিড়ি-সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ করা; তামাক কোম্পানির সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি (সিএসআর) নিষিদ্ধ করা; এবং তামাকজাত দ্রব্যের মোড়কের সচিত্র সতর্কবার্তা বৃদ্ধি করে ৯০ ভাগ করা।

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক শাহীন আকতার ডলির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শেখ মোমেনা মনি, বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. গোলাম মহিউদ্দিন ফারুক এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের মহাপরিচালক মো. আখতারউজ-জামান।

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত