ঢাকা, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২

লন্ডনে তথ্য উপদেষ্টার ওপর হামলাচেষ্টা, সরকারের নিন্দা

২০২৫ সেপ্টেম্বর ১৪ ০২:১৫:১০

লন্ডনে তথ্য উপদেষ্টার ওপর হামলাচেষ্টা, সরকারের নিন্দা

নিজস্ব প্রতিবেদক: লন্ডনে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার চেষ্টার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১২ সেপ্টেম্বর লন্ডনের এসওএএস–ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনে একটি অনুষ্ঠান শেষে মাহফুজ আলম বের হওয়ার সময় একদল বিক্ষোভকারী বাংলাদেশ হাইকমিশনের গাড়িতে ডিম নিক্ষেপ করে এবং কিছুক্ষণের জন্য গাড়িবহরের পথ আটকানোর চেষ্টা করে। তবে, হাইকমিশন সূত্রে জানা গেছে, হামলার সময় মাহফুজ আলম ওই গাড়িতে ছিলেন না। লন্ডনের মেট্রোপলিটন পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং উপদেষ্টার কার্যক্রমে ‘পূর্ণ নিরাপত্তা’ নিশ্চিত করে।

লন্ডনের এই ঘটনার কয়েক সপ্তাহ আগে নিউইয়র্কেও সরকারি কাজে থাকা অবস্থায় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম হামলার শিকার হয়েছিলেন। সেখানে বিক্ষোভকারীরা কনস্যুলেটে ডিম ও বোতল নিক্ষেপ করে এবং কাচের দরজা ভাঙচুর করে। সরকার নিউইয়র্কের ঘটনার মতো লন্ডনের ঘটনাকেও ‘হয়রানির চেষ্টা’ হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, "আমাদের সরকার, বাংলাদেশের জনগণ এবং দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষ সভ্যতার পক্ষে; আর এ ধরনের ‘ঠগরা’ বর্বরতা ও ভয়ভীতির সংস্কৃতির প্রতিনিধি।" তিনি আরও বলেন, কোনো গণতান্ত্রিক সমাজে যুক্তির বদলে আগ্রাসন বা সন্ত্রাসের কোনো জায়গা নেই।

সরকার আবারও জোর দিয়ে বলেছে, মতপ্রকাশ, সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের মৌলিক স্বাধীনতা গণতন্ত্রের স্তম্ভ হলেও, এসব অধিকার দায়িত্বশীলভাবে ও সম্মান রেখে প্রয়োগ করতে হবে। কূটনৈতিক বা কনস্যুলার যানবাহনকে লক্ষ্য করে হামলা বা বাধা দেওয়াকে দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ এবং আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনের লঙ্ঘন হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপের প্রশংসা করে সরকার হামলাকারীদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার জন্য ফুটেজ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছে।

বিবৃতিতে বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, "যদি সত্যিই কোনো মত থাকে, তা শান্তিপূর্ণ ও আইনি পথে তুলে ধরুন। ডিম, ঘুষি ও গণতান্ত্রিকতার নামে নাটক দেখিয়ে কোনো যুক্তি প্রতিষ্ঠা হয় না।"

সরকার বিশ্ববিদ্যালয়, আয়োজক প্রতিষ্ঠান ও প্রবাসী কমিউনিটিকে ‘সভ্য আলোচনার’ পক্ষে দাঁড়াতে এবং বক্তা, শ্রোতা ও আইনসংগত প্রতিবাদকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানিয়েছে।

সরকার তিনটি নির্দিষ্ট পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছে:১. মেট্রোপলিটন পুলিশকে ফুটেজ ব্যবহার করে হামলাকারীদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার জন্য পূর্ণাঙ্গ তদন্ত সম্পন্ন করতে।২. প্রবাসে রাজনৈতিক নেতা ও সংগঠকদের যেকোনো ধরনের সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও প্রকাশ্য অবস্থান নিতে।৩. শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অধিকার এবং একই সাথে কর্মকর্তা, শিক্ষার্থী ও নাগরিকদের ভয় ছাড়াই কথা বলার ও সমবেত হওয়ার অধিকারকে সমানভাবে স্বীকৃতি দিতে।

বিবৃতিতে শেষে বলা হয়েছে, "গণতন্ত্র আবেগ দাবি করে, কিন্তু একই সাথে আত্মসংযমও দাবি করে। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক বিকাশের মূল শর্ত— সকল নাগরিকের নিরাপত্তা ও মর্যাদা রক্ষা— এর জন্যও এই দুই গুণ অপরিহার্য।"

এসপি

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

পাঠকের মতামত:

সর্বোচ্চ পঠিত

জাকসুর নবনির্বাচিত নেতৃত্বকে ডাকসুর শুভেচ্ছা

জাকসুর নবনির্বাচিত নেতৃত্বকে ডাকসুর শুভেচ্ছা

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু)-এর নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের শুভেচ্ছা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর,... বিস্তারিত