ঢাকা, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৯ ভাদ্র ১৪৩২
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ রিভিউ চাইলেন সাংবাদিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো রিভিউ করার দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা।
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) শফিকুল কবির মিলনায়তনে আয়োজিত ‘গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ পর্যালোচনা ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এই দাবি জানান। একইসাথে, 'নো ওয়েজ বোর্ড নো মিডিয়া' নীতি কার্যকর করা এবং প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার জন্য সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ডিআরইউ ও জার্নালিস্ট কমিউনিটি অব বাংলাদেশ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় জার্নালিস্ট কমিউনিটির সদস্য সচিব মো. মিয়া হোসেন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার বক্তব্যে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে থাকা ভালো সুপারিশগুলোর প্রশংসা করেন এবং অসংগতিপূর্ণ বিষয়গুলোর সমালোচনা করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, "ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের যে ধারা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে তা থাকা প্রয়োজন। কারণ ধর্মীয় কারণে অনেক সহিংসতা তৈরি হয়। এসব সহিংসতা বন্ধ করার জন্য ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের শাস্তির বিধানটা থাকা প্রয়োজন।"
শফিকুল আলম 'নো ওয়েজ বোর্ড নো মিডিয়া' নীতির সঙ্গে একমত পোষণ করে এর বাস্তবায়নের উপর জোর দেন। তিনি আরও বলেন, যারা সম্পাদক ও প্রকাশক হবেন তাদের ইউনিয়ন থেকে পদত্যাগ করা উচিত, কারণ এটি নীতিবিরুদ্ধ। সাংবাদিকদের অবশ্যই সার্টিফিকেশন থাকতে হবে, কারণ অপসাংবাদিকতার কারণে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সাংবাদিকদের সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার টাকা হওয়া উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন। কর্মক্ষেত্রে সাংবাদিকদের নিরাপত্তাহীনতায় পড়লে এর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মিডিয়া মালিককে নিতে হবে এবং প্রয়োজনে মালিকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে বলে তিনি জানান।
মিডিয়া লাইসেন্স সংক্রান্ত বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, অনলাইনের জন্য ১০-১৫ কোটি, পত্রিকার জন্য ২০ কোটি এবং টিভির জন্য ২০-২৫ কোটি টাকা সিকিউরিটি হিসেবে সরকারের কাছে জমা রাখতে হবে। যখন হাউজগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হবে, তখন সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য এই অর্থ কাজে আসবে।
গোলটেবিল আলোচনায় বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ, বিএফইউজে সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, ডিআরইউ'র সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা ও রফিকুল ইসলাম আজাদ, ডিবিসি নিউজের সম্পাদক একরামুল হক ভূঁইয়া (লোটন একরাম), ঢাকা মেইল ডটকমের নির্বাহী সম্পাদক হারুন জামিল সহ আরও অনেকে বক্তব্য রাখেন।
ডিআরইউ সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, বিপ্লবের পর মিডিয়ার কাঠামোগত কোনো পরিবর্তন হয়নি এবং সাংবাদিকরা এখনো মবের শিকার হচ্ছেন। তিনি ডিএফপির অনিয়মের কারণে সরকারের সমালোচনার মুখে পড়ার বিষয়টি তুলে ধরেন।
এম আবদুল্লাহ প্রবীণ সাংবাদিকদের ভাতার আওতায় আনার এবং ইউনিয়নগুলোর পাশাপাশি অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনগুলোকে সরকারের স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানান। বিএফইউজে সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন গণমাধ্যম কমিশনকে 'পিকনিক' করার অভিযোগ তুলে তাদের রিপোর্ট রিভিউ করার দাবি জানান।
মাইনুল হাসান সোহেল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত পদধারীদের সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেওয়া নৈতিকভাবে অনুচিত বলে মন্তব্য করেন। সাখাওয়াত হোসেন বাদশা গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনসহ সরকারের মিডিয়া বিষয়ক কমিটিতে ডিআরইউ'র প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান। রফিকুল ইসলাম আজাদ সাংবাদিকদের জন্য আলাদা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব তুলে ধরেন। মসিউর রহমান খান সাংবাদিকদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে সরকারের উদাসীনতার সমালোচনা করেন।
লোটন একরাম টিভি এবং অনলাইনকে ওয়েজবোর্ডের নীতিমালায় আনার এবং হারুন জামিল সাংবাদিকদের সপ্তাহে দুই দিন ছুটি দেওয়ার গুরুত্ব উল্লেখ করেন। গাযী আনোয়ার কমিশনের রিপোর্টে "আদিবাসী অথবা উপজাতি" শব্দ পরিহার করে "বাংলাদেশি" শব্দ ব্যবহারের দাবি জানান এবং সাংবাদিকদের হত্যা-নির্যাতনের বিচারের জন্য আলাদা কমিশন গঠনের কথা বলেন।
দিদারুল আলম সাংবাদিকদের আয়কর মালিকদের দেওয়ার বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়নের এবং মফস্বল সাংবাদিকদের বেতন কাঠামো বিষয়ে বিস্তারিত সুপারিশের দাবি জানান।
মূল প্রবন্ধে সাংবাদিকদের নিবন্ধন করে আইডি প্রদান, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য অভিন্ন বেতন কাঠামো প্রণয়ন এবং ইলেকট্রনিক ও অনলাইন গণমাধ্যমের ডিক্লারেশনের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন করার প্রস্তাব করা হয়।
এসপি
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- সাবেক কর্মীদের ১৮২৩ কোটি টাকা আটকে রেখেছে ম্যারিকো
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- এক হাজার কোটি টাকার মামলায় শিবলী রুবাইয়াত গ্রেপ্তার
- তালিকাচ্যুতির ঝুঁকিতে অলিম্পিক এক্সেসরিজ
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- শেয়ার কারসাজিতে ১২ জনকে সাড়ে ৩ কোটি টাকা জরিমানা
- সর্বোচ্চ চাহিদায় নাগালের বাইরে ১৪ প্রতিষ্ঠান
- তিন কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর: ডিএসইর সতর্কবার্তা
- কৃত্রিম চাপে শেয়ারবাজারে অস্থিরতা, সহসা পুনরুদ্ধারের সম্ভাবনা
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- এক কোম্পারি অস্থিরতায় শেয়ারবাজারে তোলপাড়
- মুনাফা বাড়াতে নতুন পরিকল্পনা: ঘুরে দাঁড়াচ্ছে হাক্কানী পাল্প
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে ইস্টার্ন হাউজিং
- পাঁচ কোম্পানির কারণে থমকে গেল শেয়ারবাজারের উত্থান
- ২২৭ কোটি টাকায় টোটালগাজ কিনে নিল ওমেরা পেট্রোলিয়াম