ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২

জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশ প্রত্যাশিত ফান্ডিং না পাওয়ার কারণ জানালেন প্রেস সচিব

২০২৫ সেপ্টেম্বর ০৮ ২০:৪৭:২৭

জলবায়ু ইস্যুতে বাংলাদেশ প্রত্যাশিত ফান্ডিং না পাওয়ার কারণ জানালেন প্রেস সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বাংলাদেশে জলবায়ু সংকটের প্রকৃত চিত্র বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরার জন্য গণমাধ্যমকে কার্যকর ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব দেশের প্রতিটি খাতকে আঘাত করছে, কিন্তু সেই গল্প আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে যথাযথভাবে পৌঁছায় না। ফলে প্রয়োজনীয় তহবিল সংগ্রহ এবং আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ছে। গণমাধ্যমকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে, যাতে জলবায়ু অর্থায়নের ক্ষেত্রে শক্তিশালী যুক্তি তৈরি করা সম্ভব হয়।

সোমবার পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যৌথ আয়োজনে নেভিগেটিং ক্লাইমেট ফাইন্যান্স মিডিয়া রিপোর্টিং শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রেস সচিব এই আহ্বান জানান।

রাজধানীর পিকেএসএফ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন পিকেএসএফ চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান। ইআরডি সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকীসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ, যেখানে ১৮ কোটি মানুষ সরাসরি জলবায়ু ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। সাইক্লোন, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস ও নোনাজলের বিস্তার প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। কিন্তু আমাদের অভ্যন্তরীণ গল্পগুলো বৈশ্বিক অঙ্গনে পৌঁছায় না। বিদেশি গণমাধ্যম মাঝে মাঝে দেশে দল পাঠিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে, কিন্তু দেশীয়ভাবে প্রস্তুতকৃত তথ্যগুলো বৈশ্বিক পর্যায়ে পৌঁছায় না।

তিনি উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন, সিলেটের পানির সংকট, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লবণাক্ততা এবং ভবদহে জলাবদ্ধতা। ভবদহে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়। মৌসুম শেষে এ বিষয়টি সংবাদে আসে না। অথচ এটি জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বড় উদাহরণ। হাজারো এমন গল্প আমাদের কভারেজের বাইরে থেকে যাচ্ছে।

প্রেস সচিব আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগে সীমাবদ্ধ নয়, বরং স্বাস্থ্য, অর্থনীতি ও সামাজিক অস্থিতিশীলতার সঙ্গে জড়িত। তিনি ডেঙ্গুর বিস্তার, মাতৃস্বাস্থ্য সংকট ও উর্বরতার হার পরিবর্তনের উদাহরণ টেনে বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে সামাজিক টেনশন, স্বাস্থ্যঝুঁকি বা রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব রয়েছে। কিন্তু এই গল্পগুলো আমরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে পারি না। ফলে বড় ধরনের কেস তৈরি হয় না এবং প্রত্যাশিত তহবিল থেকে বঞ্চিত হই।

শেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জলবায়ু সাংবাদিকতা এখন একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন সাংবাদিক বিল ম্যাককিবেন ও এলিজাবেথ কোলবার্টের মতো অনুসন্ধানী প্রতিবেদন আমাদের সাংবাদিকদেরও তৈরি করতে হবে।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত