ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট ২০২৫, ১৩ ভাদ্র ১৪৩২

বিশ্বে প্রথমবার মানবদেহে শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন

ডুয়া নিউজ- স্বাস্থ্য
২০২৫ আগস্ট ২৭ ১২:০৪:০৭
বিশ্বে প্রথমবার মানবদেহে শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন

বিশ্বে প্রথমবারের মতো মানবদেহে শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেছেন চিকিৎসকরা। প্রতিস্থাপনের পর ফুসফুসটি ৯ দিন পর্যন্ত কার্যকর ছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন ট্রান্সপ্লান্ট ইনস্টিটিউটে এই বিরল অপারেশন সম্পন্ন হয়। ব্যবহৃত শূকরটি ছিল জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের মাধ্যমে প্রস্তুত করা আর যাঁর শরীরে ফুসফুস প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল তিনি ছিলেন একজন ব্রেইন-ডেড রোগী।

মানবদেহে প্রাণীর অঙ্গ প্রতিস্থাপনকে বলা হয় জেনোট্রান্সপ্ল্যানটেশন। ইনস্টিটিউটটির সার্জন ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জাস্টিন চ্যান দ্য গার্ডিয়ানকে জানান, “আমরা কয়েকজন ব্রেইন-ডেড রোগীর দেহে জেনেটিকভাবেপরিবর্তিত শূকরের ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেছিলাম। তাদের মধ্যে একজনের দেহে ফুসফুসটি ১০ দিন কার্যকর ছিল। এ থেকে বোঝা গেছে যে এসব ফুসফুস মানবদেহে স্বাধীনভাবে দীর্ঘ সময় টিকে থাকতে সক্ষম নয়। কাঙ্ক্ষিত সাফল্য না মিললেও এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ ও আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ।”

ডা. চ্যানের সঙ্গে একমত প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুসফুস প্রতিস্থাপন ও শ্বাসতন্ত্র বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু ফিশার। তিনি বলেন, “বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, হৃদপিণ্ড, ফুসফুস, যকৃৎ ও কিডনি অকার্যকারিতায় ভোগা রোগীদের মধ্যে মাত্র ১০ শতাংশ প্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের সুযোগ পান। কারণ উপযুক্ত অঙ্গ অত্যন্ত দুর্লভ। এ পরিস্থিতিতে জেনোট্রান্সপ্ল্যানটেশন নতুন আশার আলো জাগাচ্ছে। যদিও এটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে, তবুও এর অগ্রগতি নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য।”

গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পরীক্ষামূলকভাবে প্রাণীর অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চলছে। সাধারণত ব্রেইন-ডেড বা গুরুতর অসুস্থ মরণাপন্ন রোগীদের এসব পরীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে বেশিরভাগ প্রতিস্থাপনই দীর্ঘমেয়াদি সাফল্য পায়নি—নতুন অঙ্গ কয়েক ঘণ্টা, দিন, সপ্তাহ বা মাসের মধ্যেই অকার্যকর হয়ে গেছে।

এ প্রসঙ্গে অ্যান্ড্রু ফিশার আরও বলেন, “ফুসফুস মানবদেহে একই সঙ্গে অক্সিজেন সরবরাহ ও জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রাথমিক প্রতিরক্ষা কাজ করে। ফলে এটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর অঙ্গ। অন্য প্রাণীর ফুসফুস প্রতিস্থাপিত হলে মানবদেহের পক্ষে তা গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়ে। এটিই জেনোট্রান্সপ্ল্যানটেশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।”

তথ্য : দ্য গার্ডিয়ান

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত