নির্বাচন কোনো ব্যক্তি বা দলের কথায় বন্ধ হবে না : অর্থ উপদেষ্টা

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কোনো ব্যক্তি বা রাজনৈতিক দলের দাবিতে জাতীয় নির্বাচন বন্ধ হবে না। বুধবার (১৩ আগস্ট) জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের ‘ইউ পেনশন অ্যাপ’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে আয়োজনের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সর্বাত্মক সহায়তা দিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে সব ধরনের লজিস্টিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। নির্বাচন বন্ধ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।”

অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, “আগামী নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে এর সফলতা নির্ভর করবে রাজনৈতিক নেতাদের আচরণের উপর।”

সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রসঙ্গে ড. সালেহউদ্দিন জানান, এখনো সব পেশার মানুষ এতে অংশ নিচ্ছেন না। “আমরা খতিয়ে দেখছি কেন মানুষ অংশ নিচ্ছে না এবং কোথায় অনীহা রয়েছে। স্কিমে কোনো ত্রুটি থাকলে তা সংশোধন করা হবে। সরকারি কর্মচারী ও শিক্ষকদের এই স্কিমে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হচ্ছে। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের মধ্যে এ বিষয়ে প্রচার ও সচেতনতা বাড়ানো হবে।”

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ইউ পেনশন’ অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ব্যক্তি পর্যায়ে পেনশন স্কিম গ্রহণ, লগইন, তথ্য যাচাই, নোটিফিকেশন গ্রহণ এবং নমিনি পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারবেন।

সর্বজনীন পেনশন স্কিম দেশের একটি রাষ্ট্রীয় অবসরভাতা ব্যবস্থা যা সকল নাগরিকের জন্য টেকসই সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে চালু হয়েছে। এর চারটি পৃথক প্রোগ্রাম রয়েছে—প্রবাস স্কিম (প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য), প্রগতি স্কিম (চাকরিজীবী ও কর্মীদের জন্য), সুরক্ষা স্কিম (দুর্যোগ ও জরুরি অবস্থায়) এবং সমতা স্কিম (সামাজিক সমতা ও সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য)।

ড. সালেহউদ্দিন বলেন, “এই স্কিমের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি নাগরিক নির্ভরযোগ্য অবসরভাতা পাবেন। এটি সামাজিক নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”

তিনি আরও বলেন, “সরকার নির্বাচনকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ রাখতে কাজ করছে। কোনো ব্যক্তি বা দলের প্রভাব বা হুমকিতে নির্বাচন বন্ধ হবে না। কালো টাকা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দেশের জনগণ নির্বিঘ্নে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন।”

অর্থ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, “সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে আরও কার্যকর ও সহজলভ্য করতে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি খাত এবং বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে এটিকে সর্বোচ্চ কার্যকর ও টেকসই করা হবে। দেশের নাগরিকরা এর সুফল পাবেন এবং এটি সামাজিক নিরাপত্তার একটি দৃঢ় ভিত্তি গড়ে তুলবে।”