ঢাকা, শনিবার, ২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

'যারা পালিয়ে যায়, তারা আর রাষ্ট্রক্ষমতায় ফিরতে পারে না'

ডুয়া নিউজ- জাতীয়
২০২৫ আগস্ট ০২ ২০:৪১:০০
'যারা পালিয়ে যায়, তারা আর রাষ্ট্রক্ষমতায় ফিরতে পারে না'

গণঅভ্যুত্থানের ফলে যারা অবৈধ ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, তারা গণতান্ত্রিক পন্থায় আর কখনো রাষ্ট্রক্ষমতায় ফিরতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু। তিনি বলেন, তাদের আশ্রয়স্থল হয় গুপ্ত রাজনীতি ও সন্ত্রাসবাদ, কিন্তু বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ ও গুপ্ত রাজনীতি কখনো সফল হয়নি এবং হওয়ার কোনো সম্ভাবনাও নেই।

শনিবার (২ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘রক্তঝরা জুলাই-আগস্ট: প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি সাইফুল হক এবং প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।

মজিবুর রহমান মঞ্জু তার বক্তব্যে ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুতদের সামনে দুটি পথ খোলা থাকে। প্রথমত, নিজেদের ভুল স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে, দলের নীতি, নাম ও নেতৃত্বে পরিবর্তন এনে গণতান্ত্রিক ধারায় রাজনীতিতে ফেরা। দ্বিতীয়ত, আত্মগোপনে থেকে গুপ্ত রাজনীতি এবং সন্ত্রাসবাদের পথ বেছে নেওয়া। তিনি আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে দ্বিতীয় পথে হাঁটার লক্ষণ দেখছেন বলে মন্তব্য করেন।

তিনি সতর্ক করে বলেন, মানবতাবাদী ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর ভুলের কারণেই সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার সুযোগ পায়। ফ্যাসিবাদের সময় বিরোধী দলগুলোর ইস্পাত-দৃঢ় ঐক্যের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, সেই সময়ে অনেক নেতাকে এলাকায় টিকতে না পেরে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে বা হকারি করে জীবন ধারণ করতে হয়েছে, কিন্তু সেই ত্যাগের গল্পগুলো আজ হারিয়ে গেছে।

মঞ্জু আরও বলেন, যারা এখন অভ্যুত্থানের ‘মাস্টারমাইন্ড’ বলে নিজেদের দাবি করছেন, তাদের মনে রাখতে হবে, এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে তার দায়ও তাদেরই নিতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার পরিবর্তে শুধু কৃতিত্ব নেওয়ার প্রতিযোগিতায় থাকলে একসময় তারাই ‘গণ-ভিলেন’ হিসেবে চিহ্নিত হবেন বলে তিনি হুঁশিয়ারি দেন।

বিএনপি-জামায়াতের ঐক্যের বিষয়ে তিনি বলেন, "প্রয়োজনের তাগিদে বিএনপি-জামায়াত খুব দ্রুত ঐক্যবদ্ধ হয়, একসঙ্গে এক মার্কা নিয়ে নির্বাচন পর্যন্ত করে। আবার দেখা যায় স্বার্থের দ্বন্দ্বে মুহূর্তেই একে অপরকে রাজাকার, চাঁদাবাজ বলতেও তারা দেরি করে না।" এই দ্বিচারিতাই ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির উত্থানের ঝুঁকি তৈরি করছে বলে তিনি মনে করেন।

সবশেষে তিনি বলেন, "আমাদের মত ও পথ ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু আধিপত্যবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।"

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত