ঢাকা, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১১ শ্রাবণ ১৪৩২
‘আমার কী পরা উচিত এটা কেউ বলে দিতে পারে না’

বাংলাদেশের আলোচিত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। অভিনয়ের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সক্রিয় তিনি। সমাজের নানা অসঙ্গতি নিয়ে নিজের মতামত দেন তিনি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক পোশাক নিয়ে নির্দেশনা জারি করলে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়। এই প্রেক্ষাপটে নিজের অবস্থান জানালেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে দেওয়া এক দীর্ঘ পোস্টে নিজের অতীত, পোশাক নির্বাচন এবং স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পোস্টে আজমেরী হক বাঁধন লেখেন, “একটা সময় আমিও একটি সুন্দর-সাধারণ মেয়ে ছিলাম, সে সময় এমন পোশাক-আশাক পরতাম যা সমাজ প্রত্যাশা করতো। বাবা-মায়ের পছন্দের পোশাক পরতাম, যেমনটা সমাজ চায়—সেভাবেই চলতাম। কখনো জিন্স পরিনি, সমাজের চাপেই। কারণ জিন্স নাকি খারাপ মেয়েরা পরতো!”
এরপর তিনি লেখেন, “আমি ঠিক করেছিলাম, আমি হবো সমাজের চোখে'পারফেক্ট মেয়ে—যেমনটা সমাজ চায়, তেমনই নিজেকে গড়ে তুলব। কিন্তু এরপর আমার পুরো পৃথিবীটাই ভেঙে পড়ল। একটা ট্রম্যাটিক সংসার জীবন থেকে বাঁচতে আমি বিচ্ছেদ চাই; যা আমাকে রিহ্যাব অব্ধি নিয়ে যায়। এরপরই আমি লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতায় অংশ নিই, ২০০৬ সালে। আর তার মাধ্যমেই আমি নিজেকে খুঁজে পাই। তবে শুধু নারী হিসেবেই নয়, একজন মানুষ হিসেবে।”
নিজের পোশাক পরা নিয়ে অভিনেত্রী লেখেন, “তবুও, তখনও আমার ভেতরে ছিল সেই ইচ্ছা। সমাজ যেন আমাকে সেরা নারী হিসেবে মেনে নেয়, আমাকে দেখে সম্মান করে। তবে পার্থক্য ছিল— আমি জিন্স পরতাম। এমন পোশাক পরতাম, যেখানে আমার ত্বক দেখা যেত। এমন পোশাক, যা ভালো মেয়েদের পরা উচিত নয়; যা মনে করতো সমাজ।”
দ্বিতীয় বিচ্ছেদের কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন “আমার দ্বিতীয় বিচ্ছেদের পর নিজেকে শুধু ব্যর্থই মনে হয়নি- সমাজ আমাকে চিহ্নিত করতে শুরু করে একজন খারাপ নারী হিসেবে। আর সেটাই আমাকে ভেঙে দেয়। তখন থেকে নিজের অধিকার দাবি করতে শুরু করি, নিজের স্বাধীনতার জন্য লড়তে শুরু করি।”
“একদিন এক বন্ধু ফোন করে বলল, “তুমি কত সুন্দর করে কথা বলো, এত ভালো কাজ করছ— কিন্তু তোমার আরেকটু ঢেকে পোশাক পরা উচিত।” আমি শুধু হেসে ফেললাম,” যোগ করেন তিনি।
টিভি শোতে পোশাক নিয়ে বিরুপ পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বাঁধন লেখেন, “একবার আমি একটি টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে গিয়েছিলাম স্লিভলেস ব্লাউজ পরে। চ্যানেলের টিম তখন আমাকে বলেছিল, কাঁধ ঢাকতে যেন চুলটা সামনে রেখে দিই। তারা আমকে লেকচার ই দিলো। বছরের পর বছর ধরে আমি অসংখ্য পরামর্শ শুনে এসেছি এমন, একজন মা হিসেবে, একজন ‘বুদ্ধিমতী নারী’ হিসেবে, কিংবা একজন রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে হিসেবে—আমার কী পরা উচিত, কীভাবে পরা উচিত।”
নিজেকে এখন স্বাধীন দাবি করে জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী লেখেন, “কিন্তু জানেন কী? আমি আর এসব একটুও পরোয়া করি না। আমি এখন স্বাধীন। আমার কী পরা উচিত, কী বলা উচিত, কী ভাবা উচিত, বা কীভাবে জীবন কাটানো উচিত—এটা কেউ আমাকে বলে দিতে পারে না। এটা শুধুই আমার একার সিদ্ধান্ত।”
সবশেষ তিনি লেখেন, “এই ধরনের বিচার-বিশ্লেষণ আমাকে খুব কষ্ট দেয়—আর ঘৃণাও লাগে। কিন্তু এটাই আমাদের, নারীদের, প্রতিদিনের বাস্তবতা।”
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- ডিভিডেন্ড-ইপিএস ঘোষণার তারিখ জানাল ১৯ কোম্পানি
- বহুজাতিক কোম্পানির ‘এ’ ক্যাটাগরিতে প্রত্যাবর্তন
- এক কোম্পানির দাপটেই চাঙা শেয়ারবাজার
- শেয়ারবাজারের উত্থান কি টেকসই হবে? বিশ্লেষকরা যা বলছেন
- ডিভিডেন্ড-ইপিএস ঘোষণার তারিখ জানাল ১২ কোম্পানি
- ডিভিডেন্ড পেল দুই কোম্পানির বিনিয়োগকারীরা
- দ্বিতীয় প্রান্তিকের ইপিএস প্রকাশ করেছে ১৪ কোম্পানি
- ২২ জুলাই : শেয়ারবাজারের সেরা ৮ খবর
- সারজিস আলমকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা, এনসিপির সকল কার্যক্রম স্থগিত
- শেয়ারবাজারে চমক দেখাল দুই বহুজাতিক কোম্পানি
- সর্বোচ্চ চাহিদার শীর্ষে ৪ কোম্পানির শেয়ার
- বিনিয়োগকারীদের আস্থায় বহুজাতিক তিন কোম্পানি
- চাহিদার তুঙ্গে ১০ কোম্পানির শেয়ার
- ঢাবি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন বৃত্তির সাক্ষাৎকার নিয়ে নতুন নির্দেশনা
- পাঁচ কোম্পানির শেয়ারে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগ