ঢাকা, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২
রেকর্ড গড়ল চট্টগ্রাম বন্দর

বিভিন্ন প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে নতুন রেকর্ড গড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। সোমবার শেষ হওয়া অর্থবছরে বন্দরে মোট ৩২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৭ টিইইউএস (২০ ফুট মাপের কনটেইনার) হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা দেশের বন্দর ইতিহাসে গত ৪৮ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর মাধ্যমে দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। এর আগের অর্থবছর ২০২৩-২৪-এ হ্যান্ডলিং হয়েছিল ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ টিইইউএস।
এদিকে কার্গো হ্যান্ডলিং এবং জাহাজের আগমনও বেড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছিল ২০২১-২২ অর্থবছরে। তখন ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৮ টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের রেকর্ড গড়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে সদ্য শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে বন্দর। বর্তমানে কনটেইনারবাহী জাহাজের মাধ্যমে প্রায় ২৩ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয়ে থাকে। আর বাকি ৭৭ শতাংশ পরিবাহিত হয় বাল্ক বা হ্যাচযুক্ত জাহাজে। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথম কনটেইনার পরিবহন শুরু হয়েছিল ১৯৭৭ সালে।
বন্দরের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রেকর্ড গড়ার পেছনে মূল ভূমিকা রেখেছে দক্ষ পরিচালনা, সঠিক নির্দেশনা ও নিয়মিত তদারকি। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস পরিশ্রম ও আন্তরিক প্রচেষ্টাও ছিল এই সফলতার অন্যতম চালিকা শক্তি। এছাড়া বন্দরে অটোমেশন সেবা চালু, ই-গেট পাস ব্যবস্থা, কনটেইনার অপারেটিং সিস্টেমের আধুনিকায়ন এবং বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ কনটেইনার হ্যান্ডলিংকে করেছে আরও গতিশীল। একইসঙ্গে দ্রুত ডেলিভারি প্রক্রিয়াসহ বন্দর ব্যবহারকারীদের সক্রিয় সহযোগিতাও এই সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
শুধু কনটেইনার নয়, বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে কার্গো হ্যান্ডলিংয়েও দেখা গেছে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বন্দরে হ্যান্ডলিং করা হয়েছে ১৩ কোটি ৭ লাখ ২৪ হাজার ৭৮৩ মেট্রিক টন কার্গো, যা আগের বছরের তুলনায় অনেক বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে কার্গো হ্যান্ডলিং ছিল ১২ কোটি ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৭৪৮ মেট্রিক টন।
এ সময়ে বন্দরে নোঙর করেছে ৪ হাজার ৭৭টি জাহাজ। যেখানে আগের অর্থবছরে এসেছিল ৩ হাজার ৯৭১টি। উল্লেখ্য, দেশের সমুদ্রভিত্তিক আমদানি-রপ্তানির প্রায় ৯২ শতাংশ পরিচালিত হয় এই বন্দর দিয়ে। শিপিংবিষয়ক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ‘লয়েডস লিস্ট’-এর তথ্য অনুযায়ী, কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের দিক দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান এখন বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বন্দরের মধ্যে ৬৭তম।
বন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, বিভিন্ন সমস্যা ও প্রতিকূলতার মধ্যেও গত অর্থবছরে দেশের ‘লাইফলাইন’ খ্যাত চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ে বড় অর্জন এসেছে। জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান, দীর্ঘস্থায়ী বন্যা, দুই ঈদের টানা ছুটি, কাস্টম হাউসে কর্মবিরতি এবং পরিবহন ধর্মঘটসহ নানা কারণে প্রায় ৬২ দিন হ্যান্ডলিং কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটেছে।
তবু দক্ষ ব্যবস্থাপনা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত ও সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বন্দর কর্তৃপক্ষ এ সব বাধা সফলভাবে মোকাবিলা করে কার্যক্রমকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- পাঁচ কোম্পানিতে বেড়েছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের শেয়ার
- খোঁজ মিলছে না আয়াতুল্লাহ খামেনির!
- ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ১১০ কোটি টাকার খেলাপি গ্রাহক গ্রেপ্তার
- ঢাবির হলে প্রকাশ্যে ধূমপানে ২০০ টাকা জরিমানার ঘোষণা
- প্রাতিষ্ঠানিকদের দখলে ৮ কোম্পানি: ৪০ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ
- ১০ শতাংশ শেয়ারও নেই ৮ কোম্পানির উদ্যেক্তা-পরিচালকদের
- আট কোম্পানির উদ্যোক্তাদের নিয়ন্ত্রণে ৮০ শতাংশের বেশি শেয়ার
- সরকারি চাকরিতে আসছে অবসরের নতুন নিয়ম
- এক কোম্পানির যাদুতেই শেয়ারবাজারে উত্থান!
- ‘র’-এর ৬ এজেন্ট গ্রেপ্তার
- রেকর্ড দামে তিন প্রতিষ্ঠান: বিনিয়োগকারীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস
- ডিভিডেন্ড ঘোষণা করেছে তিন কোম্পানি
- শেয়ারবাজারের ৯ ব্যাংকের সম্পদ যাচাই করবে বাংলাদেশ ব্যাংক
- রেকর্ড তলানিতে তিন কোম্পানির শেয়ার: বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ
- ঢাবিতে বিস্ফোরণের শব্দে প্রকম্পিত টিএসসি এলাকা