ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২

শেয়ারবাজারে ২৬৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সাকিব-হিরুর বিরুদ্ধে মামলা

ডুয়া নিউজ- শেয়ারবাজার
২০২৫ জুন ১৭ ২১:৩২:৩৯
শেয়ারবাজারে ২৬৭ কোটি টাকা আত্মসাৎ: সাকিব-হিরুর বিরুদ্ধে মামলা

শেয়ারবাজারে কারসাজির মাধ্যমে ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দেশের শীর্ষ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান, সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের ওরফে হিরু এবং তার স্ত্রীসহ মোট ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মামলা দায়ের করেছে।

আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এই চাঞ্চল্যকর তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন: হিরুর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান, আবুল কালাম মাদবর, কনিকা আফরোজ, মোহাম্মদ বাশার, সাজেদ মাদবর, আলেয়া বেগম, কাজি ফুয়াদ হাসান, কাজী ফরিদ হাসান, শিরিন আক্তার, জাভেদ এ মতিন, মো. জাহেদ কামাল, মো. হুমায়ুন কবির ও তানভির নিজাম।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, আসামিরা "পরস্পর যোগসাজশে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করে দ্রুত আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার অসৎ উদ্দেশ্যে" পরিকল্পিতভাবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সম্পর্কিত বিদ্যমান আইন ও বিধান, বিশেষত সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ১৭ ধারা লঙ্ঘন করেছেন।

মামলার এজাহারে বর্ণিত হয়েছে, আসামিরা নিজেদের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) অ্যাকাউন্টসমূহে "অসাধু, অনৈতিক ও অবৈধ উপায়ে ফাটকা ব্যবসার মতো ধারাবাহিক লেনদেন, প্রতারণামূলক সক্রিয় লেনদেন, ফাটকা ও অনুমাননির্ভর লেনদেনের মাধ্যমে বাজারে কারসাজি করতো।"

আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ চক্র গঠন করে নির্দিষ্ট কিছু শেয়ারে ধারাবাহিকভাবে ক্রয়-বিক্রয়ের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে দাম বাড়িয়ে প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের সেই শেয়ারগুলোতে বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করতো। এর ফলে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। অন্যদিকে, এই চক্রটি ২৫৬ কোটি ৯৭ লাখ ৭০ হাজার ৩০৪ টাকারও বেশি অর্থ আত্মসাৎ করে, যা অস্বাভাবিক মূলধন লাভ হিসেবে দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে ছিল অপরাধলব্ধ অর্থ।

দুদক আরও জানিয়েছে, আবুল খায়ের ওরফে হিরু শেয়ারবাজার থেকে তোলা অর্থ থেকে ২৯ কোটি ৯৪ লাখ ৪২ হাজার ১৮৫ টাকা তার স্ত্রী সাদিয়ার সহায়তায় বিভিন্ন খাতে স্থানান্তরের মাধ্যমে "মানি লন্ডারিং" করেছেন। এছাড়া, হিরুর নামে থাকা ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৫৪২ কোটি ৩১ লাখ ৫১ হাজার ৯৮২ টাকার "অস্বাভাবিক, অযৌক্তিক ও সন্দেহজনক" লেনদেন হওয়ার কথাও মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুদকের এজাহারে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, হিরুর কারসাজি করা প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড ও সোনালী পেপারস লিমিটেডের শেয়ারে সাকিব আল হাসান বিনিয়োগ করেন। এর মাধ্যমে তিনি মার্কেট ম্যানিপুলেশনে সক্রিয়ভাবে যোগ দেন এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ওই কারসাজিকৃত শেয়ারে বিনিয়োগে প্রতারণার মাধ্যমে প্রলুব্ধ করে তাদের ২ কোটি ৯৫ লাখ ২ হাজার ৯১৫ টাকা রিয়ালাইজড ক্যাপিটাল গেইনের নামে অপরাধলব্ধ আয় হিসেবে শেয়ার বাজার থেকে উত্তোলনপূর্বক আত্মসাৎ করেন।

পাঠকের মতামত:

ডুয়ার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গে থাকতে SUBSCRIBE করুন

সর্বোচ্চ পঠিত