ঢাকা, বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২ আশ্বিন ১৪৩২
আশা জাগানিয়া শেয়ারবাজারে ছন্দপতন

ঈদের ছুটির পর প্রথম দুই কার্যদিবসে শেয়ারবাজারে যে ইতিবাচক ধারা দেখা গিয়েছিল, আজ মঙ্গলবার (১৭ জুন) তা হোঁচট খেয়েছে। আজকের লেনদেনে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক প্রায় ৪৪ পয়েন্ট কমেছে, যা আগের দুই দিনের উত্থানে আশাবাদী বিনিয়োগকারীদের মনে কিছুটা হতাশা তৈরি করেছে। তবে বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পতন সাময়িক এবং দীর্ঘমেয়াদী ইতিবাচক প্রবণতার পথে এটি একটি স্বাভাবিক পর্যায়।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবস রোববার ডিএসইর প্রধান সূচক প্রায় ১৫ পয়েন্ট বেড়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় সোমবার প্রায় ৬০ পয়েন্টের বড় উত্থান হয়, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছিল। এই দুই দিনে মোট ৭৫ পয়েন্টের বেশি উত্থান ইঙ্গিত দিচ্ছিল যে বাজার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। তবে আজ মঙ্গলবারের ৪৪ পয়েন্টের পতন বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছে। তবে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, এটিকে বাজারের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে দেখা উচিত। উত্থান-পতনের মধ্য দিয়েই বাজার তার নির্ধারিত গতিপথ তৈরি করে।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দ্রুত লাভের প্রত্যাশা থাকায় এমন সাময়িক পতনে তারা দ্রুত হতাশ হন। কিন্তু বড় বিনিয়োগকারী এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বাজারের দীর্ঘমেয়াদী গতিপথকে গুরুত্ব দেন। সরকারের সাম্প্রতিক বাজেট প্রণোদনা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এর বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপ, যেমন ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা এবং ৬০টি কোম্পানির মূলধন ৩০ কোটি টাকায় উন্নীত করার উদ্যোগ – এগুলো সবই বাজারের দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা ও উন্নতির জন্য সহায়ক।
আজকের পতনকে একটি সংশোধনমূলক পর্যায় হিসেবে দেখা যেতে পারে, যেখানে কিছু বিনিয়োগকারী মুনাফা তুলে নিয়েছেন। এটি নতুন বিনিয়োগকারীদের জন্য কম দামে শেয়ার কেনার সুযোগও তৈরি করতে পারে। বাজারের অন্তর্নিহিত শক্তি এখনও ইতিবাচক রয়েছে এবং অর্থনৈতিক সূচকগুলোও আশাব্যঞ্জক।
তাই বাজার বিশ্লেষকরা বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। সাময়িক পতনে হতাশ না হয়ে বাজারের মৌলিক বিষয়গুলো এবং দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনার দিকে মনোযোগ দিলে এই পরিস্থিতি থেকেও ইতিবাচক ফল পাওয়া সম্ভব।
আজ (১৭ জুন) ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৪৩.৯৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭৩৯.৬৮ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ১১.৫৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩.৮০ পয়েন্টে। আর ডিএসই-৩০ সূচক ১৭.৩২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৭৭০.২১ পয়েন্টে।
আজ ডিএসইতে মোট ৩৯৭টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে ৬৭টির দর বেড়েছে, ২৭৬টির দর কমেছে এবং ৫৪টির দর অপরিবর্তিত রয়েছে।
ডিএসইতে আজ মোট ৩১৩ কোটি ৬২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৪১৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকার। আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে ১০৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) আজ ১১ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগেরদিন সিএসইতে ৯ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছিল।
আজ সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১৮৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৭০টির, কমেছে ৯৩টির এবং পরিবর্তন হয়নি ২৬টির।
এদিন সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ০.৪৩ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ২৪৫.৭৯ পয়েন্টে। আগেরদিন সূচক সিএএসপিআই ৭৫.৬১ পয়েন্ট বেড়েছিল।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- লাভেলোর শেয়ার কারসাজি: তিন বিও অ্যাকাউন্টের লেনদেন স্থগিত
- সরকারের সিদ্ধান্তে ডুবছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের স্বপ্ন?
- ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড কার্যকারিতায় বিএসইসির নতুন উদ্যোগ
- শেয়ার কারসাজিতে ৫ বিনিয়োগকারীকে ১৩ কোটি টাকা জরিমানা
- একাদশে ভর্তি: চতুর্থ ধাপে আবেদনের সুযোগ
- শেয়ারবাজারে প্রতারণা ঠেকাতে মাঠে নামছে গোয়েন্দা সংস্থা
- শেয়ারবাজারে ধারাবাহিক মুনাফা চান? জেনে নিন ৫ মন্ত্র
- আরএসআই বিশ্লেষণে সর্বোচ্চ সতর্ক সংকেত পাঁচ শেয়ারে
- মালিকানায় পরিবর্তন আসছে ইয়াকিন পলিমারের
- এক শেয়ারের জোরেই সবুজে ফিরল শেয়ারবাজার
- শেয়ার কারসাজিতে শ্যালক–দুলাভাইর দেড় কোটি টাকা জরিমানা
- ডিভিডেন্ড বৃদ্ধির আলোচনায় জ্বালানি খাতের ১১ কোম্পানি
- শেয়ারবাজারে প্রসারিত হচ্ছে টেকসই বিনিয়োগের নতুন দিগন্ত
- রেকর্ড ডেটে শেয়ার লেনদেন চালুর পরিকল্পনা ডিএসইর
- ধস কাটিয়ে অবশেষে শেয়ারবাজারে উত্থানের স্রোত