ঢাকা, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২
৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা বছরে ভাতা নিচ্ছে ২৪০০ কোটি টাকা

দেশে মুক্তিযোদ্ধার প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলছে। ১৯৯৪ সালে সরকারি তালিকায় মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ছিল ৮৬ হাজার। অথচ ২০২৪ সালে এসে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জনে। এই হিসাবে নতুন করে যুক্ত হয়েছেন ১ লাখ ২২ হাজার মুক্তিযোদ্ধা। এদের মধ্যে অন্তত ৯০ হাজার জনকে ভুয়া বলে উল্লেখ করছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।
বর্তমানে একজন মুক্তিযোদ্ধা বছরে অন্তত ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা করে ভাতা পান। এই হিসাবে ৯০ হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রতি বছর রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে প্রায় ২৪০০ কোটি টাকা তুলে নিচ্ছেন। যুদ্ধাহত ও খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধারা এর চেয়েও বেশি পরিমাণ অর্থ পান।
এই পরিস্থিতি নিরসনে এবং ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা শনাক্তে কার্যক্রম শুরু করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। প্রথম ধাপে কুমিল্লা জেলায় আজ (২ জুন) শুনানি শুরু হয়েছে। সোমবার কুমিল্লা সার্কিট হাউজে সকাল ১০টা থেকে প্রথম দফায় ৩১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি চলছে।
জামুকার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ভাতাপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ২ লাখ ৮ হাজার ৫০ জন। মুক্তিযোদ্ধা কোটায় সরকারি চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছেন ৮৯ হাজার ২৩৫ জন। এছাড়া বয়সসীমা লঙ্ঘনসহ নানা অভিযোগে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৭১৯টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বয়সসীমা (১২ বছর ৬ মাসের কম) অতিক্রম করায় ২ হাজার ১১১ জনের সনদ বাতিল করা হয়েছে। গত ১৫ বছরে মোট ৩৯২৬ জনের গেজেট বাতিল হয়েছে।
বর্তমানে প্রতি মুক্তিযোদ্ধা মাসে ২০ হাজার টাকা ভাতা পান। এছাড়া দুটি ঈদে ১০ হাজার করে, ২৬ মার্চ ৫ হাজার এবং বাংলা নববর্ষে ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়। সব মিলিয়ে বছরে একজন মুক্তিযোদ্ধা কমপক্ষে ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা সম্মানি পান।
ফারুক-ই-আজম বীরপ্রতীক, যিনি জুলাই আন্দোলনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পান, তিনি দায়িত্ব নেওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দেন। এরপর দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে হাজার হাজার ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ মন্ত্রণালয় ও জামুকায় জমা পড়ে। জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়ে এসব অভিযোগ যাচাইয়ের নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জামুকার মহাপরিচালক শাহিনা খাতুন বলেন, “কে আসল মুক্তিযোদ্ধা, আর কে ভুয়া—তা ঢাকায় বসে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। তাই আমরা মাঠ পর্যায়ে যাচাই-বাছাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছি। কুমিল্লা শুনানির মাধ্যমে আমরা তথ্যপ্রমাণ, সাক্ষ্য-প্রমাণ বিশ্লেষণ করে প্রকৃত চিত্র উদ্ঘাটনের চেষ্টা করছি।”
এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন সোমবার প্রকাশ করেছে জাতীয় দৈনিক যুগান্তর।
পাঠকের মতামত:
সর্বোচ্চ পঠিত
- শেয়ারবাজারে বিস্ময়: এক লাখ টাকার শেয়ার ৮০ কোটি!
- ডিভিডেন্ডের উপর উচ্চ কর: শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ
- বিনিয়োগকারীদের সর্বনাশ করেছে তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানি
- বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে দ্যুতি ছড়াচ্ছে ১৩ ‘বনেদি’ কোম্পানি
- মুনাফা থেকে লোকসানে তথ্য প্রযুক্তির দুই কোম্পানি
- শেয়ারবাজারের ১০ ব্যাংকে আমানত বেড়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা
- মূলধন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত শেয়ারবাজারের ১৩ ব্যাংকের
- নীলক্ষেত হোস্টেল থেকে ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থীর ম’রদেহ উদ্ধার
- ইরানকে হা-ম-লা বন্ধে প্রস্তাব
- সত্যিই কি স্ট্রোক করেছেন মির্জা ফখরুল? যা জানা গেল
- দুই বড় খবরের মধ্যে আজ খুলছে দেশের শেয়ারবাজার
- ডিভিডেন্ড বেড়েছে শেয়ারবাজারের সাত ব্যাংকের
- মূলধনের বেশি রিজার্ভ জ্বালানি খাতের ১৪ কোম্পানির
- কারাগারে ফাঁসিতে ঝুললেন সেই অস্ত্রধারী আ’লীগ নেতা
- মুনাফা বেড়েছে ১৮ জেনারেল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির